টানা দুই ম্যাচ হার – চারদিকে গেল গেল রব উঠেছে। কিন্তু জয়ের পথে ফিরতে বেশি সময় লাগেনি অস্ট্রেলিয়ার, শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে এবারের বিশ্বকাপে প্রথমবার পয়েন্ট পেলো অজিরা। আর একবার জয়ের স্বাদ পেলে কেমন হিংস্র হয়ে উঠতে পারে অজিরা সেটার নমুনা টের পেলো পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান।
আগের ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের উপর টর্নেডো বইয়ে দিয়েছে দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং মিচেল মার্শ। ৩৩.৫ ওভার পর্যন্ত ক্রিজে অবিচল ছিলেন এই দুজন, এ সময় স্কোরবোর্ডে জমা করেছেন ২৫৯ রান। শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে আউট হওয়ার আগে মার্শ করেছেন ১০৮ বলে ১২১ রান; অন্যদিকে সতীর্থ ওয়ার্নারের অবদান মাত্র ৯৫ বলে ১২৪ রান।
প্রথম ওভারেই শাহীনকে বাউন্ডারির ওপারে আছড়ে ফেলে ঝড়ের শুরুটা করেছিলেন ডানহাতি অজি ওপেনার। এরপর অবশ্য নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছিলেন এই পেসার, কিন্তু হাসান, হারিসরা অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল ব্যাটারদের সামনে। পাওয়ার প্লেতে চার বোলার ব্যবহার করেও কিছু করতে পারেননি বাবর আজম, প্রতিপক্ষের রান তখন ৮২।
১৩তম ওভারেই দলীয় শতকের দেখা মেলে, সেসময় নিজের ফিফটিও পেয়ে যান ওয়ার্নার। খানিক পরে একই পথে হাঁটেন মার্শও। একপাশ থেকে ইফতেখার আহমেদ চেষ্টা করেছেন রানের চাকা টেনে ধরার, কিন্তু অন্য পাশে রীতিমতো বাউন্ডারি বৃষ্টি হয়েছিল।
২৭ ওভারেই অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ১৮৫ রান। দেশটির বিশ্বকাপ ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপরও থামার লক্ষণ দেখা যায়নি; উল্টো চোখের পলকে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে ফেলেন দুই অজি ওপেনার।
ওয়ার্নারের এটি পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা চতুর্থ সেঞ্চুরির ঘটনা। আর মার্শ তাঁর জন্মদিনে পেয়েছেন হেলমেট খুলে উদযাপনের উপলক্ষ। এরপর আরো আগ্রাসী হয়ে ওঠে দুজনে। পরের দুই ওভারে আসে ৩১ রান, এমনকি তারপরে ওভারে আউট হওয়ার আগে দুইটি বিশাল ছক্কাও হাঁকিয়েছেন মার্শ।
দুই ব্যাটারের এমন তান্ডবের পিছনে ফিল্ডারদের দায়ও কম নয়। পঞ্চম ওভারেই শাহীনের বাউন্সারে মিড অনে সহজ ক্যাচ তুলে দেন ওয়ার্নার। কিন্তু সহজ ক্যাচটাই লুফে নিতে ভুল করেন উসামা মীর। তখন অবশ্য বুঝা যায়নি, এর জন্য কতটা মূল্য দিতে হবে দলকে।
যে ভিত তাঁরা তৈরি করেছেন সেটি কাজে লাগাতে পারলে ৪০০ রান করা কোন ব্যাপারই নয় প্যাট কামিন্সদের জন্য। আরো বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারলে ভেঙে যেতে পারে বিশ্ব আসরের সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ডও। তবে শেষপর্যন্ত কি হবে সেই উত্তর ভবিষ্যতের জন্য তোলা থাক, এখন শুধুই মার্শ-ডেভি জুটির প্রশংসা করার সময়।