সৌরভ গল্পের শচীন!

২৫ বছর। গেল ২৫ বছরে কত কিছুই পাল্টে গেছে। কিন্তু, ভারতীয় ক্রিকেটে আস্থার প্রতীক হয়ে স্থায়ী হয়ে গেছেন সৌরভ গাঙ্গুলি, হোক সেটা মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে।

২৫ বছর। গেল ২৫ বছরে কত কিছুই পাল্টে গেছে। কিন্তু, ভারতীয় ক্রিকেটে আস্থার প্রতীক হয়ে স্থায়ী হয়ে গেছেন সৌরভ গাঙ্গুলি, হোক সেটা মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে।

টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকের ২৫ বছর পূর্ণ হলো সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক ও বর্তমান বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভের। ২৫ বছরে কত সেঞ্চুরি কত হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ভারতীয় ক্রিকেটেই এই কিংবদন্তি! তবে, অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি করে সেই জানানটা অবশ্য প্রথমেই দিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি সেরা হতেই এসেছেন। আর সৌরভের সেই শুরুর গল্পে শচীনও ছিলেন।

২২ জুন ১৯৯৬।

সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক ও বর্তমান বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। লর্ডসে নিজের টেস্ট অভিষেকেই সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েন ‘প্রিন্স অব কলকাতা’ খ্যাত সৌরভ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে সেঞ্চুরি করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ভেঙ্কটেশ প্রসাদে পাঁচ উইকেট শিকারে ৩৪৪ রানেই অলআউট হয় ইংলিশরা। এরপর তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে আসেন গাঙ্গুলি। ৩০১ বলে ২০ বাউন্ডারিতে ১৩১ রানের স্বরণীয় ইনিংস খেলেন সাবেক এই ভারতীয় অধিনায়ক।

তার সেই স্বরণীয় ২৫ বছর আগের সেঞ্চুরি নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান লর্ডসের সেই ইনিংস তার জন্য সবচেয়ে সুখের একটা স্মৃতি।

গাঙ্গুলি বলেন, ‘সবার ভাগ্য হয়না নিজের অভিষেক টেস্ট লর্ডসে খেলার। আমি পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করছিলাম, আমার মনে আছে পুরো স্টেডিয়াম দর্শকপূর্ণ ছিলো। এবং এটা আমার জন্য সবচেয়ে সুখস্মৃতি হিসেবে থাকবে। যখনি আমি আমার অভিষেকের কথা মনে করি আমি দেই স্মৃতিগুলো দেখতে পাই।’

স্মৃতিচারণা করে সেই ম্যাচের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একজন তিন নম্বর পজিশনে ব্যাট করতে নামি, শনিবার সেঞ্চুরি করি! যেটা টেস্ট ক্রিকেটের সেরা দিন ধরা হয় কারণ স্টেডিয়াম প্রায় ফুল দর্শকভর্তি থাকে। এটা আমার টেস্ট অভিষেক ছিলো আর আমি সেখানেই সেঞ্চুরি পাই। তারা বলেছিলো এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না এবং সেই ম্যাচের মাইন্ডসেট সবসময়ই মনে থাকবে। কারণ প্রতিটা শটেই তারা (দর্শক) আমাকে উৎসাহ দিচ্ছিলো এবং আমি চা বিরতির আগে সেঞ্চুরি করি।’

এই আলোচনার সময় গাঙ্গুলি আরো বলেন তার অভিষেকের সময় শচিন টেন্ডুলকার কিভাবে তাঁকে ওই ম্যাচের সময় সমর্থন যুগিয়েছিলেন।

গাঙ্গুলি বলেন, ‘আমার মনে আছে চা বিরতির আগে, আমি ১০০ রানে ব্যাট করছিলাম এবং আমি মানসিকভাবে খুব ক্লান্ত ছিলাম। কারণ আমার প্রথম ১০০, আবেগ, খুশি সব মিলিয়ে খুব ক্লান্ত ছিলাম। আমি ব্যাটের হ্যান্ডেলে তখন ট্যাপ লাগালাম কারণ এটা ধীরে ধীরে নরম হচ্ছিলো। কারণ বল অনেক বাউন্স হচ্ছিলো এবং প্রায় বল ব্যাটের হ্যান্ডেলে লাগছিলো। আমার মনে আছে শচিন আমার কাছে আসলো এবং বললো, শান্ত থাকো, আর তোমার চা পান করো৷ আমার সেই মূহুর্ত গুলো মনে আছে এবং আমি যখন ড্রেসিং রুমের দিকে যাচ্ছিলাম সবাই দাঁড়িয়ে আমাকে অভিবাদন জানাচ্ছিলো আমার কীর্তির কারণে।’

১১৩ টেস্টে প্রায় ৪২ গড়ে ৭২১২ রান করেন গাঙ্গুলি। ৩৫ টি ফিফটির পাশাপাশি করেছেন ১৬ টি সেঞ্চুরি। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ খেলেছেন ২৩৯ রানের ইনিংস। পাশাপাশি বল হাতেই আছে ৩২ টি উইকেট। শচীনের সাথে মিলে তিনি কিংবদন্তিতুল্য এক জুটিও গড়ে তোলেন। আর অধিনায়ক হিসেবে তাঁর অর্জন তো লেখা হয়ে গেছে ইতিহাসের পাতায়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...