মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, থমকে যাওয়া ক্যারিয়ারে দমকা হাওয়া

২৬৯ দিনের দীর্ঘ এক অপেক্ষা। সেই অপেক্ষার অবসান অবশেষে ঘটালেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দিয়ে স্বীকৃত ক্রিকেটে ফিরলেন প্রায় ৯ মাস পর। তাঁর ফেরার মঞ্চ যদিও জয়ের আলোয় আলোকিত হয়নি।

তবে, এতদিন পরে ফিরেও যেভাবে ব্যাটে-বলে পারফর্ম করলেন, তাতে দলের হারের হতাশার মাঝেও সামান্যটুকু আত্মবিশ্বাসের রসদ খুঁজে নিতেই পারেন এ পেস বোলিং অলরাউন্ডার।

চোটের সঙ্গে সাইফউদ্দিনের বসবাস দীর্ঘদিনের। গত দুই বছর ধরে ফেরার লড়াইয়ে বারবার পিছু হটতে হয়েছে তাঁকে। গত বিপিএলে যেমন খেলতে পারেননি চোটের কারণে।

অবশ্য, সাইফউদ্দিনের সর্বশেষ প্রতিযোগিতাপূর্ণ ম্যাচ খুঁজতে গেলে ফিরে যেতে হবে ২০২৩ সালের মে মাসে, ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে। আর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তো শেষ খেলেছেন এখন থেকে আরও প্রায় দেড় বছর আগে, ২০২২ সালের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল)।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট থেকে প্রায় হারিয়েই যেতে বসেছিলেন এ অলরাউন্ডার। তবে ফেরার লড়াইটা যে সব সময় চালিয়ে গেছেন। বারবারই নিজেকে প্রমাণের চেষ্টায় মুখিয়ে থেকেছেন। চোট কাটিয়ে এই বিপিএলই হয়ে উঠেছিল সেটার মঞ্চ। তবে সেটার জন্যও তাঁকে অপেক্ষা করতে হলো টুর্নামেন্টের মাঝ সময় পর্যন্ত।

ফরচুন বরিশালের সপ্তম ম্যাচে এসে একাদশে ঠাই মিলল সাইফউদ্দিনের। আর সুযোগ পেয়েই নিজের অলরাউন্ডার সত্ত্বার একটা রূপায়ণ ঘটালেন এ ক্রিকেটার। প্রথমে বোলিংয়ে ২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট।

যেখানে ২৪ টা ডেলিভারির মধ্যে ১২ টা বলই তিনি ডট বল দিয়েছেন। আর পরে ব্যাটিংয়ে এসে খেলেন ১৮ বলে অপরাজিত ৩০ রানের ইনিংস। যে ইনিংস খেলার পথে ২ চার ও ২ ছক্কা হাঁকিয়েছেন এ অলরাউন্ডার।

অতি আহামরি পারফর্ম্যান্স না নিশ্চয়ই। তার চেয়েও বড় কথা, তাঁর এই অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স দিন শেষে বৃথাই গিয়েছে। তবে এই মানদণ্ডই আলাদা হয়ে যাবে, যখন জানা যায়, ১ উইকেট আর ৩০ রান করা এই ক্রিকেটারটিই গত ৯ মাসে কোনো স্বীকৃত ম্যাচই খেলার সুযোগ পাননি। এই বিবেচনায় সাইফুদ্দিনের এ পারফরম্যান্সকে চমকপ্রদ বলতেই হয়।

এ বছরের জুনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। খুব স্বাভাবিকভাবেই সাইফউদ্দিনেরও চোখ এখন বিশ্বমঞ্চে পারফর্ম করার। তবে দলে সুযোগ পেতে হলে যে তাঁকে দারুণ কিছু করেই ফিরতে হবে। সাইফউদ্দিন সেই পথযাত্রাতেই আপাতত রয়েছেন।

যার শুরুটা হয়েছে এ ম্যাচ দিয়ে। এখন এর ধারাবাহিকতার সুতোটা না ছিড়লেই হলো। তবে এর পাশাপাশি চোটকেও স্থায়ী বিদায় জানাতে হবে সাইফুদ্দিনকে। তবেই দুইয়ে দুইয়ে মিলে চার হবে।

২৭ বছর বয়সে এসেই থমকে যাওয়া সাইফউদ্দিনের ক্যারিয়ার এখন আবারও গতিশীল হওয়ার পথে। এবার নিশ্চয়ই আগের চেয়ে পরিণত হয়েই মাঠে ফিরবেন তিনি। দু’হাত প্রসারিত করে লাল সবুজের জার্সি গায়ে সেই সেলিব্রেশনের পুনরাবৃত্তিও নিশ্চয়ই খুব শীঘ্রই হবে।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link