বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার আট বছর আগেই কোচ মহিন্দর অমরনাথ বলেছিলেন, ‘নান্নু টেস্ট মানের ব্যাটসম্যান।’
তাঁকে যারা দেখেছেন, তারা সবাই তো বটেই, তার চরম শত্রুও স্বীকার করেন, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু নান্নু উইকেটে যাওয়ার পর প্রতিপক্ষ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ২৫-৩০ করে ফেলতেন। স্রেফ সিঙ্গেল নিয়ে। গ্যাপ বের করায় তার জুড়ি ছিল না।
ঘরোয়া ক্রিকেটে তার চেয়ে বেশি ম্যাচ উইনিং ইনিংস বাংলাদেশের ইতিহাসে মনে হয় আর কারও নেই। অসংখ্য ৬৫-৭০-৮০ আছে তার, যেখানে বাউন্ডারি হয়তো সর্বোচ্চ ৪-৫ টা। ওই সময়ে খেলা দেখেছেন – এমন অনেকের চোখে নান্নু ভাই বাংলাদেশের ইতিহাসেরই সেরা ব্যাটসম্যান।
আর না বললেই নয় যে, তারা যে উইকেটে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন, এখন কেউ কল্পনা করতে পারবে না। ভীষণ বাজে ব্যাটিং উইকেট থাকত বেশির ভাগ সময়।
একই মাঠে ফুটবল-ক্রিকেট হতো, উইকেট অধিকাংশ সময়ই আন্ডার প্রিপেয়ার্ড থাকত। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফিফটির পর অস্ট্রেলিয়ার অ্যালান বোর্ডার নান্নু ভাইয়ের টেকনিক-টেম্পারামেন্টের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন।
নান্নু ভাই টেস্ট খেলতে পারেননি, এটা তার যত বড় ক্ষতি, দেশের ক্রিকেটের আরও অনেক বড় ক্ষতি। আমাদের এখন একটা ফেসবুক প্রজন্ম আছে, যারা ট্রল খুব করতে পারে। পারে না গভীরভাবে জানার-বোঝার চেষ্টা করতে।
আর পারে একটার সঙ্গে আরেকটা গুলিয়ে ফেলতে। নির্বাচক নান্নু ভাইয়ের হাজারটা সমালোচনা আছে। ব্যাটসম্যান নান্নু ক্লাস, দেশের ইতিহাসের সেরাদের একজন। এখানেই শেষ না তাঁর বোলিংও খুব কার্যকর ছিল।
সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে করা অনেক ট্রলই অযৌক্তিক। খালেদ মাহমুদ সুজনের পেস নিয়ে কেন ট্রল হবে, একটা যুক্তি দেখান! গ্যাভিন লারসেন, ক্রিস হ্যারিসদের পেস নিয়ে ট্রল হয়? পেস কম থাকাই তো তাদের শক্তি! সুজনের শক্তিরও জায়গা ছিল অনেক কিছু।
তার এখনকার নানা বিতর্কের জন্য ট্রল হবে, স্বাভাবিক। কিন্তু যখন কেউ স্পেসিফিকলি পেস নিয়ে ট্রল করবে, তখন বুঝতে হবে, তার বোধে ঝামেলা আছে। নান্নু ভাইয়ের নানা কথা নিয়ে ট্রল হবে। কিন্তু কেউ যখন স্পেসিফিকলি তার স্ট্রাইক রোটেট করা নিয়ে ট্রল করবে, তখন বুঝতে হবে বেসিক বোধে ঝামেলা আছে। এসবের জন্য ইতিহাস জানা জরুরি না, একদম বেসিক বোধ থাকতে হয়।
ইন জেনারেল খুব সত্যি হল, ইতিহাসের চর্চা-সংরক্ষণ আমাদের বেশি হওয়া উচিত আরও অনেক।
– ফেসবুক থেকে