এখনই উল্লাসের সুযোগ নেই তবে ওমানের সাথে জয়টা স্বস্তির বটে। প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর বাছাইপর্ব উৎরানো নিয়েই তৈরি হয়েছিল শঙ্কা। সেই শঙ্কা এখনো আছে, তবে আজকের জয়ে একটু নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন ক্রিকেটাররা, বাংলাদেশের ভক্তরা। যদিও বাংলাদেশ এবার বিশ্বকাপে এসেছিল বেশ বড় স্বপ্ন নিয়েই।
বাছাইপর্বে পেরোনোই যখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন আসলে বড় অর্জন নিয়ে ভাবাটা দিবাস্বপ্নের মত। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাকিবও জানিয়েছেন তেমনটাই। সাকিব মনে করেন এখন পাপুয়া নিউগিনির সাথে ম্যাচ জিতে পরের রাউন্ডে যাওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে এখনো বড় স্বপ্ন দেখেন কিনা সেই প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন।
পরের রাউন্ডে যেতে পারলে বাংলাদেশ অনেকগুলো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। সাকিব মনে করেন সেখানে যেতে পারলে বিশ্বকাপে তাঁদের জয়ের সংখ্যা বাড়াতে পারবেন। স্কটল্যান্ডের সাথে হার এবং ওমানের সাথে এত লড়াই করে ম্যাচ জেতার পরেও সাকিবদের আত্মবিশ্বাস কমেনি এতটুকু। তিনি জানিয়েছেন বাংলাদেশ থেকে যেই বড় স্বপ্ন নিয়ে দল এসেছিল এখনও সেই স্বপ্নই দেখছেন তাঁরা।
তিনি একটু মজা করেই বলেন, ‘স্বপ্ন তো বড়ই দেখতে হবে। স্বপ্নটা আগের জায়গাতেই আছে। যদি আগে থেকেই বলে আসি হারার জন্য এসেছি, তখন সেটা কারোই ভাল লাগবে না। আপনার যদি বলেন, তাহলে বলবো হারতে এসেছি।’
তবে আজকে ওমানের সাথে বরাবরের মত ব্যর্থ বাংলাদেশের টপ অর্ডার। পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে বাংলাদেশ করেছিল মাত্র ২৯ রান। ওদিকে ওমান প্রথম ছয় ওভারে করেছিল ৪৭ রান। শুরু থেকেই যেনো জয়ের জন্য খেলছিল ওমান। প্রথম ১০ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ ওমানের বেশ ভালো নিয়ন্ত্রনই ছিল।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এমন মন্থর ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন করলে সাকিব জানিয়েছেন এটা সত্যিই দলের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয়। সাকিব মনে করেন ওপেনারদের আরেকটু টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিং করা উচিৎ এবং বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সেও সামর্থ্য আছে বলেও বিশ্বাস করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ব্যাটারদের ইনটেন্টটা অবশ্যই আমাদের জন্য কনসার্স। তবে, আমি মনে করি এখনও বাংলাদেশ দল যোগ্যতা অনুযায়ী খেলতে পারেনি। পারলে আমরাও পাওয়ার প্লে-তে ভাল করবো। আশা করি, সামনের ম্যাচেই সেটা আমরা দেখাতে পারবো।’
ওদিকে জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওমানের ভালো শুরুর পর বেশ চাপেই ছিল বাংলাদেশ। বিশেষ করে জাতিন্দার সিং বাংলাদেশের বোলারদের দারুণ খেলছিলেন। তবে সেই সময়ের মাহেদীর দারুণ চারটি ওভার বাংলাদেশকে আবার ম্যাচে ফিরিয়েছিল। চার ওভার বলে করে ১২ টি বলই ডট দিয়েছিলেন মেহেদী। একটি উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ইকোনমি রেট ছিল মাত্র ৩.৫০। তাঁর মাপা বোলিং এই চাপ তৈরি হয়েছিল ওমানের ব্যাটসম্যানদের উপর।
সাকিবও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন মেহেদীর বোলিংই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। তাঁর নিয়ন্ত্রিত বোলিং এর কারণে অন্য বোলারদের জন্য উইকেট নেয়া সহজ হয়েছে। এছাড়া সাকিব সাইফউদ্দিনের বোলিং এরও প্রশ্নংসা করেছেন। তিনি মনে করেন মেহেদী-সাইফউদ্দিন বোলিং জুটিই বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশের এই জয়ে।
সাকিব বলেন, ‘মেহেদী ভাল বোলিং করেছে। আমি অবশ্য বলি সাইফউদ্দিন আর মেহেদী দু’জনই ভাল বোলিং করেছেন। দু’জনের বোলিংই আমাদের জন্য ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ওরা আট ওভারে সম্ভবত ৩০-এর মত রান দিয়েছে। দু’জনকেই কৃতিত্ব দিতে হবে।
সবমিলিয়ে জয়টা স্বস্তির হলেও এখনো কঠিন পথ পারি দিতে হবে বাংলাদেশকে। বাছাই পর্ব উৎরাতে পারলে বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে আরো বড় চ্যালেঞ্জ। সাকিব জোর গলায় বলেছেন তাঁরা স্বপ্নটা এখনো বড়ই দেখছেন। স্বপ্ন তো আসলে বড়ই দেখা উচিৎ।