২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক।
এরপর কেটে গেছে ১৫টি বছর। খেলেছেন ৮২ টি ম্যাচ। কিন্তু এই ৮২ ম্যাচে একবারও ফাঁদে পড়েননি লেগ বিফোরের! এই কথা যখন আলোচনায় তখনি টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে বিদায় নেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান। হ্যাঁ, ক্যারিয়ারের শুরু থেকে ১৫ বছর তিনি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে কখনোই এলবিডব্লিউর শিকার হননি।
৮৩ তম ম্যাচে এসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে অজি লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পার বলে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফেরেন সাকিব। অবশ্য এর মাঝে করে ফেলেছেন আরেক কীর্তি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এলবিডব্লিউর শিকার না হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা দ্বিতীয় খেলোয়াড় তিনি। এই তালিকায় সবার উপরের আছেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। অবশ্য মাত্র তিন ইনিংসের জন্য ধোনিকে ধরতে পারেননি সাকিব।
তবে এই তালিকায় থাকা বাকিরা সাকিবের চেয়েও ঢের পিছনে। তৃতীয় স্থানে থাকা সাবেক লঙ্কান কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান কুমার সাঙ্গাকারা এলবিডব্লিউর শিকার না হয়ে খেলেছেন ৫৩ টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। এছাড়া বাকিরা কেউ এই তালিকায় খেলতে পারেননি চল্লিশ ম্যাচও!
পরিসংখ্যান বলে সাকিবের পায়ে বল লাগাটা যেনো জাদুকরী কোনো কিছু। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৮৩ ইনিংসে ২৪ গড়ে ১৭০৭ রান, আছে ৯টি ফিফটি। এই লম্বা পথ পাড়ি দিয়েছেন লেগ বিফোরের ফাঁদে পা না দিয়েই।
শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই নয় ফ্যাঞ্জাইজি লিগ সহ সব ধরনের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সাকিব ৩০৮ ম্যাচে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েছেন অজিদের বিপক্ষে ম্যাচ সহ মাত্র চার বার! যার মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একবার এবং ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগে হয়েছেন চারবার। ক্রিকেটের এই ফরম্যাট টায় সাকিবের পায়ে লাগাটাও বলের জন্যও বেশ সৌভাগ্যই বটে! ৩০৮ ইনিংসে কত বাউন্ডারিই না মেরেছেন তিনি! কত রানই না করেছেন! কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার কিনা তিনি এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েননি।
একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১ হাজার রান ও ১০০ উইকেট শিকার করার দিনে সাকিব গড়েছেন আরেক রেকর্ড। অনেক বড় বড় ক্রিকেটারই স্পিনারদের গুগলি, টার্ন কিংবা পেসারদের ইয়োর্কার, কিংবা স্যুইংয়ের কাছে পরাস্থ হয়ে শিকার হয়েছে লেগ বিফোরের। সেখানে সাকিব কিনা স্রোতের উলটো দিকে পা বাঁচিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন ১৫টি বছর। সাকিবের এই রেকর্ড ভাঙায় নিজেকে কিছুটা ভাগ্যবান মনে করতেই পারেন অ্যাডাম জাম্পা।