সাকিব, জনপ্রিয়তার আকাশের রঙধনু

দূরত্বটা প্রায় সাত হাজার মাইলের। বাংলাদেশ থেকে এত দূরত্বের দেশটা তো প্রায় অচেনা একটা পৃথিবীর মতোই হওয়ার কথা। কিন্তু নামটা যে সাকিব!

পরভূমে এসেও যার বিচরণ একটুও কমার নয়। সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন, অটোগ্রাফ দিচ্ছেন, ছবি তুলছেন। বুঝার একটুও উপায় নেই যে, তিনি রয়েছেন বাংলাদেশ থেকে সুদূর এক দেশে। 

আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হয়েছিলেন সিরিজ সেরা। এরপর গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলতে ফ্লাইট ধরেছিলেন কানাডার। 

কানাডায় গেলেন। মন্ট্রিল টাইগার্সের জার্সি গায়ে চড়ালেন। পারফর্মও করলেন। সাকিব ঝলকে মন্ট্রিয়েলের প্রথম জয়। বৈশ্বিক তারকা বুঝি একেই বলে।

সত্যিকার অর্থেই তাই! সাকিব বাংলাদেশের। কিন্তু বাইশ গজের ক্রিকেটে সাকিব পুরো বিশ্বের। সাকিব বন্দনার রবের স্রোত চলতে থাকে অবিরত ধারায়। 

বাংলাদেশ থেকে ভারতের আইপিএল, কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিপিএল, পাকিস্তানের পিএসএল, ইংল্যান্ডের কাউন্টি, কিংবা শ্রীলঙ্কার এলপিএল— সাকিবের জয়গান সর্বত্রই। 

বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম ক্রিকেটার হিসেবে ডাক পাচ্ছেন সব জায়গাতেই। এই যেমন কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের পরই খেলবেন শ্রীলঙ্কার এলপিএল। 

সাকিব কি তবে শুধুই খেলছেন? নজর কাড়ছেন না? গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি তে এখন পর্যন্ত মাত্র ২ টি ম্যাচ খেলেছেন। দুই বারই বোলিংয়ে এসে নিজের অর্থোডক্স মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন।

আজম খানের বিপক্ষে প্রথমে খরুচে ছিলেন। কিন্তু সাকিব এ কালের এক ক্রিকেটারের কাছে দমে যাবেন কেন? পাল্টা আঘাত তিনিও দিতে পারেন। আজম খানও সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন গত ম্যাচে। 

ব্যাটার সাকিব তো আরো আগ্রাসী। যেন টি-টোয়েন্টির এক মুডেই আছেন তিনি। প্রথম ম্যাচে ১৩ বলে ২৬, পরের ম্যাচে ২০ বলে ৩৫।

অলরাউন্ডার সাকিবের গুরুত্ব বুঝতে পারছে ভিনদেশি দলটাও। বোলিংয়ে ৪ ওভারের কোটা পূরণ করছেনই। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়ায় ৩ নম্বরেও ব্যাট করতে আসছেন তিনি। 

ব্যাটিং পজিশন আর ম্যাচ পরিস্থিতিতে সাকিবে খেলছেনও তেমনই। ধুন্ধুমার ক্রিকেটিং শটে দলকে এনে দিচ্ছেন উড়ন্ত শুরু।

যেন সাকিবেই স্বস্তি মন্ট্রিল টাইগার্সের। টাইগার কাপ্তান বলে কথা! অর্জন, গর্জন, আধিপত্যে সবার শীর্ষে তো তিনিই থাকবেন। উৎসবের কেন্দ্র কিংবা আগ্রহের মধ্যমণিতে তো তাঁরই জয়গান হবে। 

বৈশ্বিক তারকা সাকিবের এ জয়োগান চলতে থাকুক। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলা। তাতে কী! সাকিবকে নিয়ে জয়োল্লাসের মাত্রাটা এখনও তুঙ্গে। কারণ ফর্মটাও যে ঐ তুঙ্গেই থাকে। 

১৭ বছর ধরে বাইশ গজে এমন আধিপত্যটা শুধু কঠিনই নয়, দু:সাধ্যও বটে। অবশ্য সাকিবের সাফল্য অন্য ক্রিকেটারদের জন্য আকাশ ছোঁয়ার সমতূল্য বলেই তো তিনি জনপ্রিয়তার আকাশে উজ্জ্বল এক নক্ষত্র।

যে নক্ষত্র বাংলাদেশ নামক ক্রিকেট আকাশকে আলোকিত করে, আলোকিত করে বিশ্ব ক্রিকেটকেও। 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link