ছয় ‘ডাক’ দিবস

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে ফিরলেন প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় পরে। গতবছর এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই সাদা পোশাকের ক্রিকেটে সর্বশেষ মাঠে নেমেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। এরপর তাঁর টেস্ট খেলা, না খেলা নিয়ে জল ঘোলা হয়েছে অনেক। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে আবার মুস্তাফিজ ফিরেছেন, প্রথম শিকারটাও তিনিই করেছেন।

যদিও ইনিংসের একেবারে শুরুর দিকেই একটা উইকেট প্রায় তুলেই নিয়েছিলেন বাঁহাতি এই পেসার। তবে সহজ সেই ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি মুমিনুল হক। ফলে বেশ অনেকক্ষণ উইকেটশূন্য থাকতে হয় বাংলাদেশকে। শেষপর্যন্ত ক্যারিবীয় দুই ওপেনারের গড়া ৪৪ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজই। জন ক্যাম্পবেলকে বোল্ড করেই খুলেন নিজের উইকেটের খাতা।

ওদিকে টেস্ট ক্রিকেটে মুস্তাফিজের ফেরাটা অনেকটা অনিশ্চিতই হয়ে পড়েছিল। জানা যায়, এই পেসারও সাদা পোশাকের ক্রিকেট খেলতে খুব বেশি ইচ্ছুক নন। তবে এবার তাঁকে বেশ প্রয়োজনই ছিল বাংলাদেশ দলের। কেননা সেরা দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের ইনজুরির কারণে ছিটকে যান টেস্ট সিরিজ থেকে। ফলে পেস আক্রমণে ফিজের মত অভিজ্ঞ কাউকেই প্রয়োজন ছিল।

দলের প্রয়োজনে ঠিকই আবার সাদা পোশাকের ক্রিকেটে মাঠে নামলেন মুস্তাফিজ। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা স্কোরবোর্ডে খুব বেশি রান জমা করতে পারেননি। তবুও বল হাতে শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন এই পেসার। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন বাকি দুই পেসার খালেদ আহমেদ ও এবাদত হোসেনও।

ওদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় উইকেটটি আসে এবাদত হোসেনের হাত ধরে। ইনিংসের শুরু থেকেই মুস্তাফিজের সাথের মিলে ক্যারিবীয় ব্যাটারদের উপর চেপে বসেছিলেন এই পেসার। তবে কোনভাবেই উইকেটের দেখা পাচ্চিলেন না। অবশেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় ৭২ রানে উইকেটের দেখা পান এবাদতও।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা স্কোরবোর্ডে সম্মানজনক রান জমা করতে না পারলেও পেসাররা ঠিকই তাঁদের কাজটা করেছেন। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের রান করতে বেশ কষ্টই করতে হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে এখনো অনেক এগিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের শুরুতেই হোচট খায় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ইনিংসের শুরুতেই নিজেদের উইকেট দিয়ে আসেন মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হকরা। এছাড়া লিটন, সোহানরাও তাঁদের ইনিংস বড় করতে পারেননি।

এছাড়া প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের মোট ছয়জন ব্যাটসম্যানই ফিরেছেন শূন্য রানে। তাই ছয় ডাকের লজ্জা নিয়েই প্রথম দিন শেষ করতে হলো বাংলাদেশকে। প্রথম ইনিংসেই ব্যাটারদের এমন আত্মসমর্পনে এখন ম্যাচ বাচানোই কঠিন বাংলাদেশের জন্য। যদিও টেস্টের এখনো বাকি চারদিন। বাংলাদেশ পারবে ঘুরে দাঁড়াতে?

 

 

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link