পুরো ফুটবল বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করতে যা বোঝায় তাই করে দেখিয়েছিল স্পেন। ২০০৮ থেকে ২০১২, চার বছর ফুটবল বিশ্বে যে আধিপত্য দেখিয়েছিল তা করে দেখানো একপ্রকার অসম্ভবই বটে। দুই ইউরো ও একটি বিশ্বকাপ জিতে ফুটবল বিশ্বকে কবজা করে নিয়েছিল ক্যাসিয়াসবাহিনী।
সেই সুদিন ফুরিয়েছে অনেক আগেই। ২০১৪ বিশ্বকাপের পর থেকে আগের ফর্ম আর নেই তাদের। লুইস এনরিকে এখন দেখাচ্ছেন তাদের নতুন পথ। সেই পথ দেখাতে গিয়েই ইউরোতে সুযোগ পাননি কোনো রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়। পুরোপুরি বদল আনতে চাচ্ছেন স্প্যানিশ ফুটবলে। এনরিকে কি পারবেন সেই সুদিন ফিরিয়ে আনতে?
গোলরক্ষক
ডেভিড ডে হ্যেয়া (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), উনাই সিমোন (অ্যাথলেটিক বিলবাও), রবের্তো সানচেজ (ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ আলবিওন)
ডিফেন্ডার
এমেরিক লাপোর্তে (ম্যানচেস্টার সিটি), এরিক গার্সিয়া (বার্সেলোনা), পাউ তোরেস (ভিয়ারিয়াল), ডিয়েগো ইয়োরেন্তে (লিডস ইউনাইটেড), সেজার আজপিলিকুয়েতা (চেলসি), জর্দি আলবা (বার্সেলোনা), হোসে গায়া (ভ্যালেন্সিয়া)
মিডফিল্ডার
সার্জিও বুসকেটস (বার্সেলোনা), মার্কোস ইয়োরেন্তে (অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ), কোকে (অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ), থিয়াগো আলকানতারা (লিভারপুল), ফাবিয়ান রুইজ (নাপোলি), রদ্রি (ম্যানচেস্টার সিটি), পেদ্রি (বার্সেলোনা), দানি অলমো (আরবি লাইপজিগ),
ফরোয়ার্ড
আলভারো মোরাতা (জুভেন্টাস), জেরার্দ মোরেনো (ভিয়ারিয়াল), ফেরান তোরেস (ম্যানচেস্টার সিটি), আদামা ট্রায়োরে (উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্স), মিকেল ওয়ারজাবাল (রিয়াল সোসিয়েদাদ), পাবলো সারাবিয়া (পিএসজি)
কোচ: লুইস এনরিকে
অধিনায়ক: সার্জিও বুসকেটস
- শক্তিমত্তা
স্প্যানিশ ফুটবলে শক্তিমত্তা নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসবে তাদের দলুইড ফুটবল। যেকোনো সময়ে যেকোনো জায়গায় যেকোনো ভাবে ফুটবল খেলার সামর্থ্য আছে স্পেনের। সেটা তারা বারবার করেও দেখিয়েছে। আগের টিকি-টাকা থেকে আস্তে করে বেরিয়ে এসেছে তারা। ডিরেক্ট ফুটবল, কাউন্টার অ্যাটাক, সবের মিশেলই খুঁজে পাওয়া যায় স্পেনের খেলায়।
স্পেনের আরেকটি বাড়তি সুবিধা হলো হোম অ্যাডভান্টেজ। এবছর ছটিয়ে ছিটিয়ে ইউরো হওয়ায় গ্রুপ পর্বের প্রতিটি ম্যাচই নিজেদের মাঠে খেলবে স্পেন। যে কারণে ছোট দল নিয়েও এগিয়ে থাকবে তারা।
- দুর্বলতা
কোভিড আক্রান্ত মৌসুমের পর সব দলকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল ২৬ দলের স্কোয়াড দিতে। সে জায়গায় এনরিকে বেছে নিয়েছেন ২৪ দলের স্কোয়াড। কম খেলোয়াড়ের উপরেই ভরসা রাখছেন তিনি।
রাখেননি কোনো রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়। বাদ পরেছেন রামোস। অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন সার্জিও বুসকেটস। ফলে পুরো দলটাই নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে।
নেতৃত্বশূণ্য স্পেনের ডিফেন্স সামলাবেন পাউ তোরেস আর ম্যানচেস্টার সিটির এমেরিক লাপোর্তে। লাপোর্তে এবারই ফ্রান্সের নাগরিকত্ব ছেড়ে স্পেনের নাগরিকত্ব নিয়েছেন দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য। ডিফেন্সে এই দুজনের একজন ফেইল করলে ব্যাকআপ দেওয়ার মতন কেউ নেই। ডিয়েগো ইয়োরেন্তে বা এরিক গার্সিয়া কেউই নিয়মিত নন। নাচোর মতন পারফর্মারকে বাইরে রেখে ইউরো শুরু করা ব্যাকফায়ার করতে পারে।
এছাড়াও গোলবারের নিচে ডে হ্যেয়া না উনাই সিমোন সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। ডে হ্যেয়া তেমন সুযোগ পাচ্ছিলেন না ইউনাইটেডের জার্সিতে। তাই ভরসা রাখতে পারেন কোচ অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের উনাই সিমোনের উপর।
এছাড়াও প্রতিপক্ষের ডিবক্সের ভেতরে ফিনিশারের বড্ড অভাব। মোরাতার ধারাবাহিকতা নেই বললেই চলে, ফেরান তোরেস, জেরার্ড মোরেনোও বড় মঞ্চে পরীক্ষিত নন।
- সম্ভাব্য একাদশ
প্রতিপক্ষ ও ম্যাচ: (বাংলাদেশ সময়)
সুইডেন, ১৫ জুন, রাত ১টা
পোল্যান্ড, ১৯ জুন, রাত ১টা
স্লোভাকিয়া, ২৩ জুন, রাত ১০টা
(রাত ১২টার পর পরবর্তী দিন ধরা হয়েছে)
দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের ছাড়া, কোভিড আক্রান্ত অধিনায়ক; সবমিলিয়ে বেশ বাজে অবস্থাতেই আছে তারা। এমনকি তারা প্রস্তুতির সুযোগও পায়নি। চ্যাম্পিয়নস হওয়ার লক্ষ্যে নামলেও কতদূর যেতে পারবে, সে নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।