ম্যাচ শেষে হাত না মেলানো তবে কোন স্পিরিটের পরিচয়!

উত্তপ্ত ম্যাচে জয়ের উষ্ণতা পেয়েছে বাংলাদেশই। তবে জয় ছাপিয়ে ম্যাচের মূল চর্চিত বিষয় যেন হয়ে উঠেছে ‘টাইমড আউট’ বিতর্ক। আর সেই বিতর্ক আরো উষ্কে দিয়েছে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের বক্তব্যে। সাকিব আর বাংলাদেশের আচরণকে ‘মানহানিকর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন লঙ্কান এ ক্রিকেটার।

একই সাথে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বারবারই যেভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে ম্যাথুস কথা বলেছেন, তাতে ‘স্পিরিট অব গেম’-এর সুর ছিল স্পষ্টতই। তিনি নিজে অবশ্য স্পিরিটের ধার না ধেরে যা নয় – তাই বলে গেছেন বারবার। এমনকি তিনি ও তাঁর সতীর্থরা ম্যাচ শেষে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের সাথে হাত পর্যন্ত মেলাননি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে যে আউটের ঘটনা কখনও ঘটেনি, সেই টাইমড আউটের শিকার হয়েছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। ক্রিকেট আইন প্রণেতা সংস্থা এমসিসি কিংবা বিশ্বকাপের নিয়মবিধিতে, ম্যাথুস আউটই ছিলেন।

এ ছাড়া ম্যাচ অফিশিয়ালরাও পরে সেই আউটের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু ম্যাথুসের ক্ষোভের লক্ষ্যবস্তু যেন শুধুই বাংলাদেশ। যেখানে সাকিব শুধু নিয়মটা মেনে আউটের আপিল করেছেন। আর এখানেই অবতারণা ঘটলো ‘স্পিরিট অব গেম’-এর।

তবে লঙ্কান ক্রিকেটার এক টাইমড আউট নিয়ে মতানৈক্যর সুরে কিছুটা কি অতিরঞ্জিত করে ফেললেন? ম্যাচ শেষের চিত্র সেটাই বলে। ম্যাচ শেষে উভয় দলের ক্রিকেটার এবং কোচিং প্যানেলের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে হাত মেলান। যেটা স্পোর্টসম্যানশিপের আওতার মধ্যেও পড়ে।

এমসিসির নিয়মবিধিতেই আছে, মাঠে যেটাই ঘটুক, দুই দলের মাঝে সৌহার্দ্য বিনিময় স্বরূপ হাত মেলানো উচিৎ। অন্যথায় সেটি স্পিরিটি অব গেমের পরিপন্থী বলে বিবেচিত হবে। প্রশ্নটা হচ্ছে, অখেলোয়াড়সলুভ আচরণের ধৃষ্টতা দেখালো কারা?

বাংলাদেশ নাকি শ্রীলঙ্কা? ম্যাচ শেষে দেখা যায়, তানজিম সাকিব ও তাওহীদ হৃদয় যখন ব্যাট হাতে জয় নিশ্চিত করে প্যাভিলিয়নে ফিরছিলেন তখন তাদের সঙ্গে হাত মেলানোর জন্য কোনো লঙ্কান ক্রিকেটার সেখানে ছিলেন না। লঙ্কান ক্রিকেটাররা একরকম ক্ষোভ পুষে রেখেই বাংলাদেশের ক্রিকেটার ও কোচিং প্যানেলের কারোর সঙ্গেই হাত মেলাননি।

ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের এমন আচরণের ব্যাখ্যায় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। তিনি বলেন, ‘যে আপনাকে সম্মান দেখাবে না, তাঁকে আপনি কীভাবে সম্মান দেখাবেন?

মোদ্দাকথা, এক টাইমড আউটকে ঘিরেই ক্ষোভে ফুঁসছে পুরো শ্রীলঙ্কার দল। পয়েন্ট টেবিলের প্রায় তলানির দুই দলের লড়াই এমন ঝাঁজ ছড়াবে, এটাই বা কে ভেবেছিল। তবে, দিনশেষে এই উষ্ণ বচনে আড়ালে চলে গেল, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মাঠের লড়াইটা বাংলাদেশ আধিপত্য বিস্তার করেই জিতেছে। ২৮০ রান তাড়া করতে নেমে ৫৩ বল হাতে রেখে ম্যাচ জেতার দৃশ্যপটটাও যেন হয়ে থাকলো পার্শ্ব চরিত্র।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link