আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের জীবনটাই এমন। তাঁরা আজ আছেন আলোচনায়, কাল নেই। ফর্ম কখনোই দীর্ঘস্থায়ী নয়। ফলে, বলা যায় এখানে যারা নিজেদের সুদিনে বিদায় নেওয়ার ঘোষণা দেন, তাঁদের সিদ্ধান্তিই সঠিক।
কাউকে কাউকে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক থেকে অবসর নেওয়ার পর বেশ দারুণ ফর্মে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছেন, পারফরম করছেন। তখন আক্ষেপ হয়, মনে হয় – আরেকটু সময় খেলে গেলেই পারতেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে ছেড়ে দেওয়া কয়েকজন ক্রিকেটার এই সময় বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আন্তর্জাতিক মানের পারফরম করে চলেছেন। তাঁদের নিয়েই এবারের আয়োজন।
- এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা)
২০১৮ সালে যখন এবি ডি ভিলিয়ার্স অবসরের ঘোষণা দেন, তখন বয়স ছিল মাত্র ৩৪ বছর। এই সিদ্ধান্তে পুরো পৃথিবী চমকে ওঠে। যদিও, তিনি ফেরার আভাস দিয়েছিলেন। শোনা গিয়েছিল ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবেন। তবে, সেটা আর হচ্ছে না। তবে, মাঝপথে স্থগিত হওয়া সর্বশেষ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (আইপিএল) রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে রান করেছেন প্রচুর। ফলে, তাঁর মান যে সেই আগের মতই আছে – তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই।
- মোহাম্মদ আমির (পাকিস্তান)
মাত্র ২৯ বছর বয়সে মোহাম্মদ আমিরের সিদ্ধান্ত গোটা ক্রিকেট বিশ্বকেই হতবাক করেছে। কারণ, তাঁর প্রতিভা নিয়ে কোনো কালেই সংশয় ছিল না। স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন, তবে সেই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরে দিব্যি পারফরম করেন। ২০১৭ সালে তাঁর বোলিং জাদুতেই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতে পাকিস্তান। অথচ, ২০১৯ সালে বিশ্বকাপ পারফরম্যান্সের জের ধরে দলে অনিয়মিত হয়ে যান। এরপর পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্টর ওপর অনেকটা ক্ষোভ থেকেই অবসর নিয়ে ফেলেন। তবে, শোনা যাচ্ছে ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে তিনি আবারো ফিরতে পারেন।
- হাশিম আমলা (দক্ষিণ আফ্রিকা)
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটু দেরিতেই আগমন হয় হাশিম আমলার। আবার তিনি একটু আগাম বিদায় বলে ফেলেছেন আন্তর্জাতিক মঞ্চকে। তবে, বিশুদ্ধবাদী এই ব্যাটসম্যান অবসরের পর মন দিয়েছেন কাউন্টি ক্রিকেট। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ৩৮ বছর বয়সী এই প্রোটিয়া খেলছেন সারের হয়ে। চলতি আসরে তিনি দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। এর মধ্যে একটা ডাবল সেঞ্চুরিও করে ফেলেছেন। ফলে, বোঝাই যায় এখনও অন্তত টেস্ট ক্রিকেট খেলার সামর্থ্য আছে তাঁর।
- থিসারা পেরেরা (শ্রীলঙ্কা)
২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ‘উইনিং শট’ আসে তাঁর ব্যাট থেকেই। ২০১১ সালের ফাইনালও খেলেছেন। তবে, এটা ঠিক যে যে সম্ভাবনা তাঁর মধ্যে ছিল – সেটা পরিপূর্ণতা পায়নি। ফিটনেস আর অফ ফর্মের কারণে শেষ সময়ে জাতীয় দলে যাওয় আসার মধ্যে ছিলেন। তবে, ২০২১ সালেই অবসর নেওয় এই লঙ্কান অলরাউন্ডারের বয়স তাঁর পক্ষে ছিল। ফলে, আরেকবার চেষ্টা করলেও পারতেন।
- অ্যালিস্টেয়ার কুক (ইংল্যান্ড)
বয়স যখন ৩০-এর মত তখন মনে হয়েছিল শচীন টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরির রেকর্ড সম্ভবত অ্যালিস্টেয়ার কুক ছুঁয়ে ফেলবেন। সেটা আর হয়নি। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক বিদায় বলে ফেলেছেন মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই। সেই ঘটনার তিন বছর পেরিয়ে গেছে। এখনও তিনি দিব্যি কাউন্টি ক্রিকেট খেলে যাচ্ছেন। এসেক্সের ব্যাটিং অর্ডারের বড় শক্তি তিনি।
- সুরেশ রায়না (ভারত)
বিশ্বকাপ জয়ী এই তারকার অবসরের সিদ্ধান্তটা সমর্থকদের জন্য ছিল বিস্ময়কর। প্রিয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি বিদায় বলে দেওয়ার দিনই নিজে অবসরের ঘোষণা দিয়ে দেন সুরেশ রায়না। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৩। এখনও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) যেভাবে পারফরম করে যাচ্ছেন তাতে আরেকবার জাতীয় দলের ফেরার লড়াইটা দিব্যি চালাতে পারতেন।