বাংলা সিনেমায় এমন দৃশ্য নিয়মিত দেখা যায়। নায়কের পরিবারের কেউ অসুস্থ। ডাক্তার অপারেশন শেষে বেড়িয়ে বলছেন, ৭২ ঘন্টার আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না। গত ৭২ ঘন্টায় ইউরোপিয়ান ফুটবলের অবস্থাটাও এমনই ছিল। ঝড়-ঝাণ্ডা শেষে ইউরোপিয়ান ফুটবলের নতুন টুর্নামেন্ট মাঠে নামার আগেই ইতি টানা হয়ে গিয়েছে।
এরকম অবস্থা অবাক করার মতন ছিল না। নতুন একটা টুর্নামেন্টের ঘোষণা, যেখানে বড় ১৫ দলের জন্য থাকবে না কোনো রিলেগেশন পদ্ধতি। এমনটা শোনার পর কথা না ওঠাটাই অস্বাভাবিক ছিল। কিন্তু সুপার লিগের পক্ষে থাকা লোকজনের আশা ছিল এক জায়গাতেই, ১২ বছর ধরে চলা প্ল্যানিং এত সহজে হয়তো ভেস্তে যাওয়া সম্ভব না। তার উপর যার মাথা হিসেবে আছেন ঘাগু প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ, সে প্রোজেক্ট মুখ থুবড়ে পরা সহজ ছিল না।
কিন্তু দিনশেষে কথা একটাই। ফুটবল মালিকদের খেলা নয়। মালিকরা দলের মাথা হতে পারে। কিন্তু ফুটবল খেলাটা দিনশেষে জনতার। দর্শকের। ইংল্যান্ডের বন্দরে বন্দরে খেলা লিভারপুল-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আজ আমেরিকান মালিকদের হাতে গিয়েছে বলে নিজেদের সত্তা হারিয়ে ফেলবে, ব্যাপারটা তেমন নয়।
আজো ফুটবল আমজনতার খেলাই আছে। দিনশেষে ওয়ার্কিং ক্লাস পিপল সারাদিনের ক্লান্তি শেষে নিজের প্রিয় দলের খেলা দেখতে বসে নিজের শান্তির জন্য। হতে পারে সেই দল জয়ের দেখা পায় না, হতে পারে সেই দল দ্বিতীয় বিভাগের টিকিট কাটছে এ বছর। দিনশেষে ক্লাবটা তাদের, মালিকদের থেকে অনেক বেশি মালিকানা এই সমর্থকদের। সেটা প্রমাণ করতেই নেমেছিল সব দলের সমর্থকেরা।
প্রথম দিন রাতে ঘোষণা আসার পর থেকেই ফুঁসে উঠেছিল জনতা। তাই পরদিন থেকেই ছোট ছোট করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেছিল নিজেদের মাঠের সামনে। তবে চূড়ান্ত সুযোগ ছিল লন্ডনের ব্লুজ সমর্থকদের। গতকাল বিকেলেই ব্রাইটনের বিপক্ষে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে নামতে হয়েছিল চেলসিকে।
আর সেই মোক্ষম সুযোগই ব্যবহার করেছেন সমর্থকেরা। টিম বাস মাঠে আসতে না আসতেই আটকে দিয়েছেন সমর্থকেরা। সমর্থকদের থেকে বাস ছাড়াতে বাস থেকে নেমে এসেছেন চেলসি লিজেন্ড পিওতর চেক। এসে হাতজোড় করে অনুরোধ করেছেন, বাস ছেড়ে দিতে। মালিকদের সিদ্ধান্তের উপর কিছু করার নেই খেলোয়াড়দের। ৩০ মিনিট পর মাঠে গড়িয়েছে বল। মাঠের বাইরে তখনও সমর্থকদের জোয়ার থামেনি।
১২ দলের মালিকদের নিয়ে এমনিতেই গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে বসার কথা ছিল। কিন্তু চেলসির প্রটেস্টের পর মালিকদের মধ্যেও ভয় ঢুকে যায়, সেই সাথে সমর্থকদের আবেগের জায়গাটাও বুঝতে পারেন তারা। দিনশেষে সমর্থক ছাড়া ফুটবল কি আর জমে? মহামারির পর মরা মাঠ এখনও মরাই আছে। খেলা ফিরেছে, আনন্দ নয়। মিটিং শেষ হতে না হতেই ঘোষণা চলে আসলো, প্রথম ক্লাব হিসেবে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসছে ম্যানচেস্টার সিটি। আর তার পথ ধরে চেলসিও।
কিন্তু এতদিনের পরিকল্পনা এত সহজে ভেঙ্গে যাবে, এমনটা ভেবে রাস্তায় নেমেছিল ১২ দলের মালিক? বিষয়টা কিছুটা অদ্ভুত ঠেকছে না? বিষয়টা অদ্ভুতই। ১২ দল ঠিকই ভেবে নিয়েছিল নিজেদের সমর্থক, ইউয়েফা-ফিফার কাছ থেকে ব্যাকল্যাশের জন্য। কিন্তু বাঁধ সেধেছে ব্রিটিশ সরকার।
দ্য সুপার লিগ ঘোষণা করার পর থেকেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বেশ সোচ্চার এই লিগ বন্ধের ব্যাপারে। এমনকি টুইটও করেছিলেন, এই টুর্নামেন্ট মাঠে না গড়ানোর ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন তিনি। একজন রাষ্ট্রনায়কের ফুটবলের ব্যাপারে আগ্রহের কারণ অবশ্য তার প্যাশন নয়। অন্য সকলের মতই টাকা।
ইংলিশ লিগের ‘বিগ সিক্স’ থেকে দেশের বিশাল পরিমাণ রাজস্ব পায় ব্রিটিশ সরকার। তার উপরে এই ৬ দলের মধ্যে একমাত্র টটেনহ্যামের ডেনিয়েল লেভি বাদে ৫ জনের মালিকই বিদেশি। নিয়মিত ইএসএল খেললে প্রিমিয়ার লিগের খেলায় তাদের আগ্রহও কমতে থাকবে।
আর তখন দেশের ভেতরের খেলার উপরও প্রভাব পরবে ভালো পরিমাণ। টিকিট বিক্রি, খেলাধুলার পরিবেশ, আরো নানা দিক দিয়ে ব্রিটিশ অর্থনীতির উপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দিবে এই নতুন টুর্নামেন্ট। যে কারণে ব্রিটিশ সরকারও ছাড়তে চায়নি তাদের জায়গা। ফলাফল? ক্লাবদের উপর অদৃশ্য এক চাপ। বলা বাহুল্য সে চাপেই নতি স্বীকার করলে হয়েছে ইংলিশ ক্লাবগুলোকে।
১২ দলের মালিকদের মিটিং শেষ হওয়ার পরেই একে একে আসতে থাকে ঘোষণা। প্রথম বোমা ছাড়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান এড উডওয়ার্ড পদত্যাগ করেছেন। তখনই নিশ্চিত হয়ে যায়, এ রক্ষণ ধরে যে রিউমার চলছিল, তা আসলে সত্য।
ইংলিশ ক্লাবেরা পারিপার্শ্বিক চাপের কারণে মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছেন। উডওয়ার্ড ইউনাইটেডের সঙ্গী ২০০৫ সাল থেকে, যখন থেকে গ্ল্যাজার্স পরিবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে যুক্ত, সেই সময় থেকে। ২০১৩ সাল থেকে ইউনাইটেডের ট্রান্সফার দেখতেন তিনি। যদিও এ নিয়ে কম দুয়ো শুনতে হয়নি তাকে। অনেক ইউনাইটেড সমর্থকের দুই চোখের বিষ ছিলেন উডওয়ার্ড।
উডওয়ার্ডের বিদায় যেমন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য সুসংবাদ বয়ে এনেছে, সেই সাথে এনেছে দুঃসংবাদও। ইএসএল ছাড়ার রিউমারের পরপরই তুমুল বেগে পরতে শুরু করেছে ইউনাইটেডের শেয়ার। ২ ঘন্টার মধ্যে ১.২ ডলার কমে গিয়েছিল ইউনাইটেডের শেয়ার।
তার দেখাদেখি লিভারপুলের শেয়ারও কমতে শুরু করেছে। যদিও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতন নয়, তবুও বেশ পরে গিয়েছে দুই দলের শেয়ার মার্কেটের স্টকপ্রাইস। ফলে যেটা ভাবছেন সেটাই হচ্ছে। দুই দলের মালিকেরা নিজেদের ক্লাব বিক্রির জন্য লোক খুঁজতে শুরু করে দিয়েছেন। লজ্জা মাথায় নিয়ে দলের দায়িত্ব থেকে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা যেন।
আর্সেনাল সমর্থকেরাও থেমে নেই। তাদের মালিক স্ট্যানলি ক্রনকে দুই চোখের বালি। জেপি মরগানকে এই প্রজেক্টের সাথী করেছিলেন তিনিই। তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে ক্লাব অন্য কারো হাতে সোপর্দ করতে কাল থেকে মাঠে নামবে আর্সেনাল সমর্থকেরা। উডওয়ার্ডের বিদায়ের পর থেকেই গরম হতে থাকে ইএসএলের মিউজিক্যাল চেয়ার। একে একে ১২ দল থেকে ৬ দলে পরিণত হয় ইএসএল।
ইংলিশ লিগের ৬ দলই একসাথে নিজেদের সরিয়ে নেয় এই প্রোজেক্ট থেকে। ক্লাব থেকে বিবৃতি দেয় আর্সেনাল, তারা সমর্থকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী এভাবে তাদের মতামত অগ্রাহ্য করে সেখানে যোগ দেওয়ার। এমনকি এক ভিডিও বার্তায় লিভারপুল মালিক জন হেনরি ক্ষমা চায় গত তিনদিনে এত ঘটনা ঘটানোর জন্য। ৬ দলের বিদায় করুণ সুর বাজতে শুরু করে ইএসএলে। ইংলিশ হেভিওয়েট ক্লাবদের ছাড়া আর যাই হোক এই টুর্নামেন্ট চালানো সম্ভব নয়। তাঁদের বাদে বাকি থাকে শুধু স্প্যানিশ আর ইতালিয়ান তিন জায়ান্ট ক্লাব।
রাত পোহাতে না পোহাতেই ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। শেষমেশ ৫ দলের টুর্নামেন্ট হয়ে পরে ইএসএল। আর তখনই সামনে আসেন ইএসএলের মাথা জুভেন্টাস প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেয়া অ্যাগনেল্লি। শুরু থেকেই টুর্নামেন্টের মূল হোতা ছিলেন রিয়ালের ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ আর জুভেন্টাসের আন্দ্রেয়া অ্যাগনেল্লি। তিনিই এসে ঘোষণা দেন এই আসর সাঙ্গ করার।
৫ দল নিয়ে আর যাই হোক, ৬ বিলিয়ন ডলারের টুর্নামেন্ট হয় না। এ নিয়ে কম কথা শুনতে হয়নি দুই প্রেসিডেন্টকে। তবে অ্যাগনেল্লি সোজাসুজিই বলেছেন, এই প্রোজেক্ট থেমে থাকছে না, নতুন করে আবার এই টুর্নামেন্টের কথা ভেবে দেখবেন তারা। আর তাকে নিয়ে যত কথাই উঠুক না কেন, অন্য ক্লাবেদের মতন তিনি ছেড়ে যাচ্ছেন না ‘ওল্ড লেডি’দের।
১২ বছরের পরিকল্পনা সারা হয়েছে তিনদিনেই। এরো আশা, এতো পরিকল্পনা, মূহুর্তের ঝড়ে গুড়িয়ে গেল যেন। আর সেই সাথে ভিলেন তৈরি করে গেল একজনকে। রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ! ২০০৯ সালে তার ত্মাথা থেকেই প্রথম বের হয়েছিল এই ইউরোপিয়ান সুপার লিগের আইডিয়া। তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নেতৃত্বেই এক হয়েছিল বাকি সকলে। প্রথম সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছিলে পেরেজই।
রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছেন প্রায় ১৮ বছর। এই শতকে সকল অর্জনের জীবন্ত সাক্ষী। তার মস্তিষ্কপ্রসূত এই টুর্নামেন্ট এত সহজে ভেঙ্গে পরবে, তা হয়তো নিজের সবচেয়ে বাজে দু:স্বপ্নেও ভাবেননি পেরেজ। চ্যাম্পিয়নস লিগের হাতেখড়ি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদের ইতিগাসের সেরা প্রেসিডেন্ট সান্তিয়াগো বার্নাব্যূর হাত ধরে। ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন তিনি নায়ক হিসেবে। ফ্লোরেন্তিনো পেরেজও সম্ভবত তেমন কেউ হতে চেয়েছিলেন। স্টার ওয়ার্সে বিখ্যাত একটি লাইন আছে, ‘হিরো আর ভিলেনের মধ্যে পার্থক্য খুবই নগন্য। পার্থক্যটা হলো চয়েজ।’
ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ তার কাজ দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের কাছে আজীবনের জন্য রাজা হয়েই থাকবেন, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু ফুটবল বিশ্বের চোখে ইউয়েফা আর ফিফাকে কাটিয়ে নিজেদের বিদ্রোহী লিগ তৈরি করার সিদ্ধান্তের আজীবন কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে তাকে। ৭৪ বছর বয়সে এসে ইতিহাসের বিপরীত পাশেই যেন নাম লেখালেন তিনি।
যদিও বাতাসে গুজব উড়ে বেড়াচ্ছে, সে গুজব অনুযায়ী পেরেজের আইডিয়া ঠিকই ছিল। চাল চেয়েছে ইউয়েফা। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবদের উপরে দেশের উপর মহল থেকে এমনিতেই আলাদা চাপ ছিল। তার পরও তারা নিজেদের জায়গাতে সম্মত ছিল। কিন্তু দিন ঘুরতে না ঘুরতেই চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য নতুন স্পন্সর খুঁজে পায় ইউয়েফা।
যাতে করে বাড়বে প্রাইজমানি, ইউয়েফাও দেখবে লাভের মুখ। আর সেখান থেকে একটা বিশাল পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়েছে ইংলিশ ক্লাবদের। যে পরিমাণ অর্থ নিয়েই পেরেজের পিঠে ছুড়ি মেরে চলে গিয়েছে ইংলিশ সভাপতিরা। ইতালিয়ান ক্লাবদের ইউরোপে এখন তেমন দাপট নেই বললেই চলে, নিজেদের লিগের টিআরপি, স্পন্সরও যথেষ্ট কম। আর তাদের সামনে সুযোগ দেওয়া হয়েছে আস্তে করে কেটে পরে ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে ভিলেন বানানোর সুযোগ।
নিজেদের নাম এত বড় ইতিহাসের সাইডবেঞ্চে নিয়ে যাওয়ার মতন সুযোগ হাতছাড়া করেনি তারা। তাই একসাথে ছয় ক্লাব মনোভাব বদলে দোটানায় ফেলে দিয়েছে বাকি ৬ ক্লাবকে। রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা আর জুভেন্টাস বাদে বাকি সকলেই একে একে না করে দিয়েছে। হারাধনের ১২ টি ছেলে থেকে শেষ ৩ ছেলে হিসেবে টুর্নামেন্টের ইতি টানার আগ পর্যন্ত বেঁচে ছিল এরাই।
দিনশেষে সবচেয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রিয়াল আর জুভেন্টাসই। তাদের মালিককে প্রকাশ্যে অপমান করেছেন ইউয়েফা সভাপতি আলেকজেন্দার সেফারিন। তবে লাভ কি একেবারেই হয়নি? প্রশ্নের উত্তরটা সোজা। ইউয়েফার মুখোশ খুলে দিয়ে নিজেদের নাম লেখানোর প্রচেষ্টা ছিল দ্যা সুপার লিগ। প্রথমটা ঠিকই সফল হয়েছে, দ্বিতীয়টিতেই মুখ খুবড়ে পরেছে ১২ দল।
প্রতিটি ক্লাবের পকেটে ইউয়েফা থেকে প্রাপ্য অর্থ নেওয়াটাই ছিল বড় উদ্দেশ্য। তিনদিনের মধ্যেই কোনো স্পন্সর ছাড়াই চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রাইজমানি বেড়ে গিয়েছিল প্রায় ৭০ শতাংশ। ছোট ক্লাবদের খেলার সুযোগ বেড়েছে, চ্যাম্পিয়নস লিগে টিম বেড়েছে; যদিও সেটা কতটা ভালো সে ব্যাপারে প্রশ্ন আছে। কিন্তু বেড়েছে। পেরেজ-অ্যাগনেল্লি জুটি যেটা করতে নেমেছিলেন, সেটাতে কিছুটা হলেও সফল।
আরব বসন্তের সূচনা হয়েছিল মোহাম্মদ বোয়াজিজি নামে এক ফল বিক্রেতার কাছ থেকে। নিজের গায়ে আগুন দিয়ে শুরু করেছিলেন ২ বছর ব্যাপী বিশাল আন্দোলন। পেরেজ-অ্যাগনেল্লিকে ‘ফুটবলের মোহাম্মদ বোয়াজিজি’ বলাটা ভুল হবে। কিন্তু যে প্রিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন তাতে কিছুটা হলেও সফল। পার্থক্য শুধু বোয়াজিজি হয়ে আছেন নায়ক, আর পেরেক-অ্যাগনেল্লি ভিলেন!
দিনশেষে দ্য সুপার লিগ হয়ে রইল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যর্থ প্রজেক্টের একটি। আজ থেকে অনেক বছর পর কেউ ফিরে তাকালে ভিলেন হিসেবে স্মরণ করবে ক্লাব মালিকদের অবিশ্বাস্য এক জুয়াকে। যে জুয়া খেলে নিজেরা তো ডুবেছেনই, ক্লাবের রেপুটেশনও নামিয়ে দিয়েছেন অনেকগুণ। দিনশেষে ‘দ্য সুপার কাপ’ হয়ে রইবে কর্পোরেটের লোভ বনাম সমর্থক পাওয়ারের উৎকৃষ্ট এক উদাহরণ।