৮৫ ম্যাচ, ৫০৭৭ রান, লর্ডস আর এমসিজিতে শতক, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অধিনায়ক হিসেবে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় – আজিঙ্কা রাহানের ক্যারিয়ারকে বর্নাঢ্য বলাই যায়। ৩৫ বছর বয়সে এমন সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার থাকলে অনেকেই হয়তো বেছে নিতেন বিশ্রামের পথ, কিন্তু তিনি মোটেই সাধারণ চিন্তা ধারণার মানুষ নন।
তাই তো দলে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে চান এই সময় এসেও। সেজন্য রঞ্জি ট্রফিতে মুম্বাইয়ের হয়ে নিজের সেরাটা দিয়ে খেলছেন রাহানে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার জন্য রীতিমতো সাধণা করছেন তিনি; আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পুনরায় প্রত্যাবর্তনের জেদ সঙ্গী করেই ধারাবাহিক পারফরম করে যাচ্ছেন।
এর আগেও একবার বাদ পড়েছিলেন এই ব্যাটার; তবে রঞ্জিতে রান করায় বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে একাদশে সুযোগ দেয়া হয়েছিল তাঁকে। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চান তিনি; বলেন, ‘ম্যাচ বাই ম্যাচ মুম্বাইয়ের হয়ে ভাল করার জন্য মুখিয়ে আছি। আপাতত লক্ষ্য ট্রফি জেতা, তবে মূল ইচ্ছে ভারতের হয়ে শততম টেস্ট ম্যাচ খেলা।’
রাহানে এবং চেতেশ্বর পূজারা থেকে দায়িত্ব নেয়ার কথা পরবর্তী প্রজন্মের ব্যাটারদের। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পর থেকে যশস্বী জযসওয়াল, শুভমান গিল এবং শ্রেয়াস আইয়ারদের সামর্থ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া – কঠিন বিদেশী কন্ডিশনে তাদের পরিসংখ্যান সন্তুষ্ট করার মত নয়।
সেজন্য তরুণদের পরামর্শ দিয়েছেন এই ডানহাতি নিজেই। তিনি বলেন, ‘এটা পুরোটাই মানসিকতার উপর নির্ভর, আপনার খেলা হঠাৎ পরিবর্তন হয় না। দিন শেষে ব্যাটারকে বল দেখে খেলতে হয়, কিন্তু মানসিকভাবে আপনি কেমন আছেন, কি ভাবছেন, কিংবা কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন – এই সব ছোট ছোট জিনিসগুলো গুরুত্বপূর্ণ।’
মানসিক অবস্থা নিয়ে এই কিংবদন্তি আরো বলেন, ‘আপনি শুধু ব্যাটিং এবং বোলিং নিয়ে ভাবতে পারবেন না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আপনার মানসিকতা সঠিক হতে হবে। আপনি মানসিকভাবে কতটা শক্তিশালী সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কীভাবে গতি সামলাবেন, কীভাবে ব্যর্থতাকে মেনে নিবেন সবকিছুই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়।’
অবশ্য টেস্টে ভাল ব্যাটার মানেই রক্ষণাত্মক হতে হবে এমনটা মানেন না এই তারকা। তিনি বলেন, ‘সাহসী হতে হবে, মানে নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে হবে। সেটাই আমি বলছি। এর মানে এই নয় যে আপনি উইকেটে গিয়ে এলোপাতাড়ি শট খেলবেন। বরং আমি বুঝিয়েছি ইতিবাচক ভাবে যেন ব্যাটিং করা হয়।’
এই মিডল অর্ডার ব্যাটার আরো বলেন, ‘যখন কেউ নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে চিন্তা করে তখন সে চাপে পড়ে যায়। কিন্তু দলকে যদি প্রায়োরিটি লিস্টে প্রথমে রাখা হয় তাহলে ব্যর্থতার কোন ভয় থাকে না।’