জয়ে মুগ্ধতাটা থাকুক

অভিমানি মেঘ, টুকরো আবেগ ,

বিকেলবেলায় আঁকছি তোমায়

গল্পগুলো সাথী হলো

হলদে স্মৃতির অবাধ্যতায়।

মেঘ নিয়ে লিখা এ চরণগুলিই বলে দেয়, যে মানবমনে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, এক বিশেষ রোমান্টিকতার জন্ম দেয়।

মিরপুরের অ্যাকাডেমি মাঠে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের পাশাপাশি ছিল দমকা হাওয়া। যা সেখানে উপস্থিত সকলকেই দিয়েছিল এক শান্তির পরশ। তবে, শুধু এই রোমান্টিক আবহাওয়াই নয়; বরং সেখানে উপস্থিত সকলকেই মোহিত করেছিল আরেকটি জিনিস। তা হল মাহমুদুল হাসান জয়ের ক্ল্যাসিকাল ব্যাটিং। কোনো বলকেই গায়ের জোড়ে সীমানার বাহিরে পাঠাতে তোড়জোড় করছিলেন না তিনি। বরং বলের মেরিট বুঝে প্রত্যেকটি বলই খেলার চেষ্টা করছিলেন এই ডান হাতি ব্যাটার।

কি ছিল না তার ব্যাটিংয়ে? কাভার ড্রাইভ, স্ট্রেইট ড্রাইভের ফুলঝুরি কিংবা প্রপার ডিফেন্সিভ শটের সমাহার। একজন ক্ল্যাসিকাল ব্যাটারের ঝুলিতে থাকা সব শটেরই প্রদর্শন দেখিয়েছেন অনূর্ধ্ব- ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী এই ব্যাটার। ব্যাটিংয়ে জয়ের এমন বিশেষত্বই তাকেই একজন ক্ল্যাসিকাল ব্যাটার হিসেবে ভূষিত করার জন্য যথেষ্ট।

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, ‘ফর্ম ইজ টেম্পোরারি বাট ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট।’ এই প্রবাদটি বর্তমানে বাংলাদেশ টেস্ট দলের ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের সাথেও অনেকটাই মিলে যায়। বর্তমানে, আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাট হাতে তেমন একটা ধারাবাহিক নন এই ব্যাটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ টেস্ট ইনিংসেও ব্যাট হাতে ছিলেন অতি সাধারণ। যার কারণে, বর্তমান টেস্ট দলে তাঁর জায়গা নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

বর্তমানে দেশের ক্রিকেটে এক প্রকার টি-টোয়েন্টি আবহাওয়া বিরাজ করছে। যার কারণ, আগামী মাস থেকে পর্দা উঠছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কিন্তু, এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরবর্তী সময়েই টাইগারদের জন্য অপেক্ষা করছে বেশকিছু টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরেই ঘরের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে রয়েছে টাইগারদের টেস্ট সিরিজ। সে সিরিজকে সামনে রেখে অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া এনসিএলই হতে পারে জয়ের জন্য রানে ফেরার আদর্শ মঞ্চ।

২০২০ অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের মাধ্যমে স্পটলাইটে আসেন জয়। সেবার, সেমি-ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর ম্যাচ জয়ী সেঞ্চুরি এখনো ভক্তকূলের চোখে গেঁথে আছে। তখনই, জয়কে বাংলাদেশ দলের ভবিষ্যৎ তারকা হিসেবে ভাবতে শুরু করে দিয়েছিলেন অনেক ক্রিকেট ভক্তই। এ বছর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে অনবদ্য ৭৮ কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে নিজের অভিষেক সেঞ্চুরি সবই যেন ভক্তদের প্রত্যাশার পালে হাওয়া লাগিয়েছিল।

তবে, প্রতিকূল কন্ডিশনে নিজেকে একাধিকবার প্রমাণের সুযোগ পেলেও ব্যাট হাতে নিজের ধারাবাহিকতার প্রমাণ এখনও দিতে পারেনি জয়। যার প্রমাণ ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২ টেস্টে ৫৮ রান কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২ টেস্টে ১৬.২৫ গড়ে ৪২ রান, এসব পরিসংখ্যানই টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর অধারাবাহিকতার প্রমাণ দেয়। তবে, একজন ব্যাটিং সুপারস্টার হওয়ার সব গুণাবলিই আছে এই ব্যাটারের মধ্যে। যার প্রমাণ, আজ অ্যাকাডেমি মাঠে জয়ের খেলা বাহারি ক্ল্যাসিকাল শটের পসরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link