ক্রিকেট বিশ্বে দ্বৈরথের শেষ নেই। রোমাঞ্চকর সব দ্বৈরথের একটি ছিল শচীন-শোয়েব লড়াই। একই সময়ের দুই মহারথীর মধ্যে জম্পেশ লড়াই দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। দুই জনের মোকাবেলা হয়েছে বহুবার। কিন্তু ২০০৩ সালে শচীন টেন্ডুলকার নিজের স্বকীয়তার বাইরে গিয়েও শোয়েব আখতারকে দিয়েছিলেন জবাব।
২০০৩ সালে সাঈদ আনোয়ারের সেঞ্চুরির কল্যাণে পাকিস্তান স্কোরবোর্ডে জমা করেছিল ২৭৩ রান। পাকিস্তানের সেই সময়কার দুর্ধর্ষ পেসারদের বিপক্ষে এই রান তোলার কাজটা ভারতের জন্য বেশ কষ্টসাধ্যই ছিল। তাছাড়া পাকিস্তানি পেসারদের মূল টার্গেট ছিল ভারতীয় টপ অর্ডারকে লণ্ডভণ্ড করে দেওয়া।
বিশেষ করে শোয়েব আখতার চেয়েছিলেন তার গতিতে কাবু করবেন ভারতীয় ব্যাটারদের। কিন্তু, তার সেই পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দেন শচীন টেন্ডুলকার। শোয়েব আখতার পাকিস্তানের বোলিং ইনিংস উদ্বোধন করতে আসেন। তার প্রথম ওভারেই শচীন আদায় করে নেন ১৮ রান। শেষ তিন বলে এক ছক্কা ও দুই চার সহ ১৪ রান নেন শচীন।
সেখানেই বরং পাকিস্তানি পেসারদের পরিকল্পনা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এরপরও অবশ্য থেমে থাকেননি শচীন। এগিয়ে নিয়ে গেছেন নিজের ব্যাটিং ইনিংস। ৭৫ বলে ৯৮ রানে শচীন সেদিন থেমেছিলেন। সেই শোয়েব আখতারই শেষ অবধি তুলে নিয়েছিলেন শচীনের উইকেট। তবে ততক্ষণে পাকিস্তানের যা কিছু ক্ষতি করা প্রয়োজন, তা করে ফেলেছিল শচীনের ব্যাট।
তার গড়ে দেওয়া সেই ভিতের উপর দাঁড়িয়ে, ভারতের জয় পেতে সমস্যা হয়নি। ৫০ রানে অপরাজিত থেকেছিলেন যুবরাজ সিং। আর ৪৪ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন রাহুল দ্রাবিড়। সেদিনের ঐ এক ওভারেই শচীন করেছিলেন বাজিমাত। এরপর মাংশপেশির টান নিয়েও খেলেছেন শচীন। তাকে সেদিন রীতিমত টলানো যায়নি। ঠিক সে কারণে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জিতেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার।
সময়ের অন্যতম সেরা গতিশীল বোলারের আত্মবিশ্বাসকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছিলেন। এরপর গোটা পাকিস্তান দল ফের লড়াই করবার মানসিকতা জড়ো করতে পারেনি। তাতে করে শচীনের পালটা জবাবটা পাকিস্তানের পরিকল্পনার মুখে চপেটাঘাত হিসেবেই কাজ করেছিল। সেদিনের সেই ইনিংসকে শচীন এখনও নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস বলেই বিবেচিত করেন।