আইপিএলের ‘বৃদ্ধ’ একাদশ

টি-টোয়েন্টিকে তরুণদের খেলা ভাবা হলেও এবারের আইপিএলে বুড়ো হাড়ের ভেলকি দেখিয়েছেন ভারতের অভিজ্ঞ তারকারা। বুঝিয়ে দিয়েছেন বয়স বাড়লেও পারফরম্যান্সে কোনো অংশে কম নন তরুণ প্রতিভাদের চাইতে। আসুন দেখে নেয়া যাক, এবারের আইপিএলের সেরা বুড়ো একাদশ। 

  • শিখর ধাওয়ান

পাঞ্জাব কিংস আরো একবার সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলেও ব্যাট হাতে দারুণ এক মৌসুম কাটিয়েছেন দলটির অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান। ইনজুরির কারণে মাঝে একাদশের বাইরে থাকলেও প্রায় প্রতি ম্যাচেই দলকে এনে দিয়েছেন উড়ন্ত শুরু। ১১ ম্যাচে ৪১ গড় এবং ১৪২ স্ট্রাইকরেটে ধাওয়ানের সংগ্রহ ৩৭৩ রান। 

  • ঋদ্ধিমান সাহা

গত মৌসুমে গুজরাট টাইটান্সে নাম লেখানোর পর থেকেই যেন ক্যারিয়ারের পুর্নজন্ম ঘটেছে ঋদ্ধিমান সাহার। শুভমান গিলকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন দুর্দান্ত এক উদ্বোধনী জুটি। বিশেষ করে পাওয়ারপ্লেতে যেন অপ্রতিরোধ্য এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। এবারের মৌসুমেও ১৩ ম্যাচে ১৩২ স্ট্রাইকরেটে সাহার সংগ্রহ ২৭৫ রান।

  • আজিঙ্কা রাহানে

সবাই টেস্টের ব্যাটসম্যান বিবেচনা করলেও এবারের আইপিএলে দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটিয়েছেন আজিঙ্কা রাহানে। মঈন আলীর ইনজুরির সুবাদে একাদশে পাওয়া সুযোগটা তিনি কাজে লাগিয়েছেন দারুণভাবে। ঝড়ো ব্যাটিং করে রীতিমতো চমকে দিয়েছেন গোটা বিশ্বকে, জায়গা ফিরে পেয়েছেন জাতীয় দলে। এবারের মৌসুমে ১১ ম্যাচে অবিশ্বাস্য ১৬৯ স্ট্রাইকরেটে রাহানের সংগ্রহ ২৮২ রান।

  • মনীশ পান্ডে

 

একসময় ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ ভাবা হলেও গত কয়েক মৌসুমে যেন দৃশ্যপটের বাইরে চলে গিয়েছিলেন মনীশ পান্ডে। তবে এবারের মৌসুমে দিল্লী ক্যাপিটালসের হয়ে দারুণ পারফরম্যান্স করে বুঝিয়ে দিয়েছেন এখনো ফুরিয়ে যাননি এই তারকা। দিল্লীর হয়ে ১০ ম্যাচে ১০৯ স্ট্রাইকরেটে ১৬০ রান করেছেন এই তারকা।

  • আম্বাতি রাইডু

আম্বাতি রাইডুকে চেন্নাই সুপার কিংসের মিডল অর্ডারের স্তম্ভ ভাবা হলেও এবারের মৌসুমে তেমন ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। মূলত টপ অর্ডারের দূরন্ত ফর্মের কারণেই ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি এই তারকা। তবে দুয়েক ম্যাচে ঠিকই শেষদিকে নেমে ঝড় তুলেছেন রাইডু। এবারের মৌসুমে ১৩ ম্যাচে ১২৭ স্ট্রাইকরেটে তাঁর সংগ্রহ ১২২ রান। 

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক)

এবারের মৌসুমে খানিকটা নিচের দিকে ব্যাট করেছেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। অবশ্য তাতে পারফরম্যান্সে ভাটা পড়েনি, শেষদিকে নেমে ধোনি সুলভ ফিনিশিংয়ে দলকে এনে দিয়েছেন লড়াকু সংগ্রহ। ১৩ ম্যাচে তাই মাত্র ১০৩ রান করলেও স্ট্রাইকরেটটা আকাশচুম্বী, ১৯০.৭৪! এছাড়া উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে ছয়টি ক্যাচের পাশাপাশি করেছেন দুইটি স্ট্যাম্পিং।

  • রবিচন্দ্রন অশ্বিন

রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে গোটা মৌসুমজুড়েই দারুণ ছন্দে ছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। মাঝের ওভারগুলোতে নিয়মিত উইকেট এনে দেবার পাশাপাশি ব্যাট হাতে খেলেছেন দারুণ ক্যামিও ইনিংস। ১৩ ম্যাচে সাড়ে সাত ইকোনমিতে ১৪ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ব্যাট হাতে তাঁর সংগ্রহ ৬৭ রান।

  • পিযুস চাওলা

এবারের মৌসুমের সবচেয়ে বড় চমকের নাম পিযুস চাওলার ফিরে আসা। গত মৌসুমে তাঁকে দলে ভেড়ায়নি কোনো দলই। এবারের মৌসুমে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে দারুণ পারফর্ম করে যেন বুঝিয়ে দিলেন এখনো ফুরিয়ে যাননি তিনি। অনভিজ্ঞ মুম্বাইয়ের বোলিং লাইনআপকে একা হাতে টেনেছেন এই তারকা। ১৩ ম্যাচে ৭.৬১ ইকোনমিতে চাওলার শিকার ২০ উইকেট। 

  • অমিত মিশ্র

গত তিন মৌসুমে মাত্র সাতটি ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন অমিত মিশ্র। এবারের মৌসুমেও শুরুতে একাদশে জায়গা মেলেনি। তবে মৌসুমের মাঝপথে একবার জায়গা পেতেই দেখিয়েছেন বুড়ো হাড়ের ভেলকি। ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে মাঠে নেমে সাত ম্যাচে ৭.৮১ ইকোনমিতে তাঁর শিকার সাত উইকেট। 

  • মোহিত শর্মা

অথচ এবারের মৌসুমে খেলারই কথা ছিল না মোহিত শর্মা। মূলত গুজরাট টাইটান্সের নেট বোলার হিসেবেই ছিলেন গত মৌসুম থেকে। নেটে দুরন্ত বোলিং করার সুবাদেই কিনা জায়গা পেয়ে যান গুজরাটের একাদশে। এরপর আর ফিরে তাকানো নয়, ১০ ম্যাচে ৭.৪৬ ইকোনমিতে শিকার করেছেন ১৭ উইকেট।

  • ইশান্ত শর্মা

ইনজুরির কারণে টুর্নামেন্টের শুরুর দিকের ম্যাচগুলো মিস করেছিলেন ইশান্ত শর্মা। অবশ্য ইনজুরি থেকেই ফিরেই ম্যাচ জেতানো বোলিং করে বুঝিয়ে দেন পারফরম্যান্সে মরচে ধরেনি মোটেই, বরং আরো ধারালো হয়েছে। দল হিসেবে দিল্লী ক্যাপিটালস বাজে মৌসুম কাটালেও ইশান্ত ছিলেন উজ্জ্বল। ৮ ম্যাচে ৮.২৪ ইকোনমিতে তাঁর শিকার ১০ উইকেট। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link