মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে কী রোল প্লে করবেন? সেই উত্তর খোঁজার আগে আজকে সাইফউদ্দিনের অনুশীলনের কিছু চিত্র দেখে আসা যাক। বাংলাদেশের ক্রিকেটে বোলার সাইফউদ্দিনের পরিচিতি বেশি হলেও আজ নেটে বেশ কিছুক্ষণ ব্যাটিং করেছেন তিনি। আর নেটে সাইফউদ্দিনের ব্যাটিং ধরন দেখলেই বোঝা যায় আসলে তিনি ঠিক কী করতে চাইছেন কিংবা দল তাঁর কাছ থেকে কী চাইছে।
সেন্ট্রাল উইকেটে একজন নেট বোলারের বলে স্কুপ শট খেললেন। ধারণা করা যায় বলটা বাউন্ডারি পার হবে। এরপর জাতীয় দলের সতীর্থ শরিফুল ইসলামের বলে সাইফউদ্দিন যেন আরো বেশি আক্রমণাত্মক, আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী। স্টেপ আউট করা বলটা দারুণ ভাবে ব্যাটের সাথে কানেক্ট করেছেন। নিশ্চিতভাবেই কাভার অঞ্চলের উপর দিয়ে বিশাল এক ছয়।
পুরো নেট সেশনেই এমন সব শট খেলতে দেখা গিয়েছে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে। কখনো পেরেছেন, কখনো পারেননি। তবে আজ অধিকাংশ বলেই বোলারের উপর চড়াও হয়েছেন। সাইফউদ্দিনের এই নেট সেশন থেকে একটা বার্তা স্পষ্ট। বিশ্বকাপে এই অলরাউন্ডারের কাছ থেকে শুধু বোলিং নয়, ব্যাট হাতেও পারফর্মেন্স চায় দল।
আর সেই লক্ষ্যেই নিজেকে প্রস্তুত করছেন এই অলরাউন্ডার। সাইফউদ্দিন ব্যাটিং করতে পারেন সেটা সবারই কম বেশি জানা। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাট হাতে খুব বেশি সুযোগ পাননা তিনি। অধিকাংশ ম্যাচেই বাংলাদেশের হয়ে তিনি আট নাম্বারে নামেন। তবুও সুযোগ পেলে নিজের পাওয়ার হিটিং ক্ষমতাটা দেখিয়েছেন তিনি।
তবে টি-টোয়েন্টি দলে টিকে থাকতে হলে এখন থেকে খুব সম্ভবত এটা নিয়মিতই করে দেখা হবে সাইফউদ্দিনকে। কেননা শুধু পেসার হিসেবে একাদশে তাঁর জায়গা পাওয়াটা বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে দলও সাইফউদ্দিনকে শুধু বোলার হিসেবে নয়, অলরাউন্ডার হিসেবেই ব্যবহার করতে চাইবে। সাত-আটে নেমে যিনি দলকে কিছু ঝড়ো রান এনে দিতে পারবেন।
আর সেটা করতে না পারলে আস্তে আস্তে জাতীয় দলের দরজাটাই বন্ধ হয়ে যাবে সাইফউদ্দিনের জন্য। কেননা শুধু পেসার হিসেবে একাদশে থাকতে হলে সাইফউদ্দিনকে লড়তে হবে তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান কিংবা হাসান মাহমুদদের সাথে। ফলে একাদশে তাঁর জায়গা পাওয়াটা তাঁর কঠিনই হয়ে যায়।
এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে তাঁর পেস কতটা কার্যকর হবে সেই প্রশ্নও থেকেই যায়। মুস্তাফিজ খানিকটা অফ ফর্মে থাকলেও বাকি দুই পেসার নিশ্চিতভাবেই তাঁর থেকে এগিয়ে থাকবেন। কেননা ইনজুরি থেকে ফিরে যেন আরো মলিন হয়েছে সাইফউদ্দিনের বোলিং। এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে সুযোগ পেলেও জ্বলে উঠতে পারেননি বল হাতে।
সেই ম্যাচে মাত্র দুই ওভার বোলিং করেই খরচ করেছিলেন ২৭ রান। ফলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরবর্তী ম্যাচে আর একাদশে জায়গা হয়নি এই পেসারের। আর অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে তো সাইফউদ্দিনের কাজটা আরো অনেক কঠিনই হতে চলেছে। ফলে সুযোগ পেলে বোলিং এর পাশাপাশি ব্যাট হাতে নিজের ইমপ্যাক্টটা দেখাতে হবে তাঁকে।
নাহলে হয়তো শ্রীধরন শ্রীরামের পরিকল্পনায় সাইফউদ্দিন খুব বেশি থাকতে পারবেন না। এছাড়া পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর নামও অনেকদিন ধরে ক্রিকেট পাড়ায় শোনা যাচ্ছে। বিপিএল থেকে শুরু করে ঘরোয়া টুর্নামেন্ট গুলো নিজেকে প্রমাণ করেই চলেছেন এই বাঁহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার। ফলে এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টি দলে পেসার সাইফউদ্দিনের জায়গাটা বেশ নড়বড়ে। সেজন্যই বুঝি হতে চাইছেন পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার।