ছিলেন দলের বাইরে, বিশ্বকাপে ঈর্ষণীয় রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও প্রথম চার ম্যাচই কাটাতে হয়েছিল বেঞ্চে বসে। কিন্তু মোহাম্মদ শামি যখনই সুযোগ এসেছে, জানান দিয়েছেন নিজের অস্তিত্ব। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই পেয়েছেন ফাইফার – আর এই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও।
এদিন তৃতীয় বোলার হিসেবে আক্রমণে এসেই ত্রাস ছড়িয়েছেন শামি। প্রথম ওভারেই টানা চারটি ডট আদায় করে নিয়েছেন বেন স্টোকসের বিপক্ষে, পরের ওভারে ফিরে আবারো টানা পাঁচ বল রান তুলতে দেননি ইংলিশ অলরাউন্ডারকে। এরপর, সরাসরি বোল্ড। ব্যাটারের সেই মুহুর্তের মুখচ্ছবি বুঝিয়ে দিয়েছে শামির বলে কতটা অসহায় ছিলেন তিনি।
আরেকটু ব্যাখ্যা করা যাক, এই পেসারের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বল। ব্যাক অব লেন্থ ডেলিভারি পিচ করার পর বেরিয়ে গিয়েছিল, ডিফেন্স করতে গিয়ে মিস করেন স্টোকস। পরের বল প্রায় একই জায়গায়, আবারো আউটসুইং – ষষ্ঠ বলটাও পিচ করেছে একেবারে একই স্পটে, কিন্তু এবার ইনসুইং তাতেই এলোমেলো হয়ে গিয়েছে স্ট্যাম্প।
তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে আরো একবার স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলার উল্লাসে মাতেন এই ভারতীয় তারকা। এবার শিকার জনি বেয়ারস্টো। তাঁর প্রথম স্পেলের বাকিটা সময় কোন রকম মাটি কামড়তে ছিলেন জস বাটলার; একটু নড় চড় হলেই আরো একটা উইকেট ঝুলিতে পুরতে পারতেন শামি।
সবমিলিয়ে নতুন বলে চার ওভার হাত ঘুরিয়েছেন তিনি। আর বোলিং ফিগার ছিল ৪-১-৫-২; স্রেফ অবিশ্বাস্য। ২৪ বলের মধ্যে ২০টি ডট; হজম করেননি কোন বাউন্ডারি। আর পুরোটা সময় একের পর এক আনপ্লেয়েবল ডেলিভারি বের হয়েছে এই ডানহাতির ভান্ডার থেকে।
ইনিংসের ২৪তম ওভারে তাঁকে আবারো আনা হয় বোলিং প্রান্তে। অধিনায়ককে নিরাশ করেননি, প্রথম চেষ্টাতেই ৩১ বলে ১৫ রান করা মঈন আলীকে বাধ্য করেছেন উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিতে। আবার বাকি পাঁচ বলেও ক্রিস ওকসের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিলেন তিনি। শেষদিকে এসে আবারো স্কোরবোর্ডে নিজের নাম তুলেছিলেন এই সেনসেশন।
জাসপ্রিত বুমরাহ তো বরাবরই ভারতের পেস আক্রমণের নেতা, মোহাম্মদ সিরাজও সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব সেরা পারফর্মার। তবে এদের ছাড়িয়ে আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন তিনি; বেঞ্চ থেকে উঠে এসে হয়েছেন দলের স্ট্রাইক বোলার, দুই ম্যাচে নিয়েছেন নয় উইকেট। এমন রূপান্তরের গল্প মোহাম্মদ শামি বলেই হয়তো সম্ভব হয়েছে।