অত:পর তাঁদের বিদায় ঘোষণা

বাংলাদেশ ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের সংক্ষিপ্ত তালিকায় অনায়াসে জায়গা করে নেবেন দু’জন। কে জানে, আরেকটু সুযোগ পেলে হয়তো ক্যারিয়ারটা আরো বড় হত। খেলোয়াড়ী জীবন নিয়ে আক্ষেপ থাকবেই। সেই আক্ষেপ আর সামনের দিনে নতুন স্বপ্ন নিয়ে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন দু’জন। ব্যাট-প্যাড তুলে রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন বাঁ-হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক ও টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফিস। এবার তারা যোগ দেবেন নতুন দায়িত্বে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তৃতীয় নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক এবং বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন শাহরিয়ার নাফিস। আজ বোর্ডের নতুন দায়িত্ব বুঝে নিয়েই সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক এই দুই ক্রিকেটার।

রাজ্জাক এবং নাফিসের অবসরের বিষয়টি গতকাল গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিলো ক্রিকেটারদের সংগঠন ক্রিকেটার্স ওয়ালফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। আর আজ তাঁদের বিদায় উপলক্ষে বেলা ১২টার দিকে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিসিবি।

আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে বিসিবির দেয়া দায়িত্ব বুঝে নেন এই দুই ক্রিকেটার এবং সেখানে দাঁড়িয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে সবধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তাঁরা দু’জন।

 

আব্দুর রাজ্জাক দেশের হয়ে সর্বশেষ মাঠে নেমেছিলেন তিন বছর আগে এবং শাহরিয়ার নাফিজ দেশের হয়ে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ৮ বছর আগে। এরপর ঘরোয়া লিগে পারফর্ম করলেও জাতীয় দলের দরজা খোলেনি তাদের জন্য। এখন থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটেও দেখা যাবে না এই দুজনকে।

দেশের হয়ে মাত্র ১৩ টি টেস্ট খেলেছেন আব্দুর রাজ্জাক। ১৩ টেস্টে নিয়েছিলেন মাত্র ২৮ উইকেট। টেস্টে সফল না হলেও ওয়ানডেতে তার সময়ে দলের সেরা স্পিনার ছিলেন রাজ্জাক। প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে ওয়ানডেতে ২০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন এই স্পিনার।

ওয়ানডেতে ১৫৩ ম্যাচে এই বাঁহাতি স্পিনার শিকার করেছেন ২০৭ উইকেট আর ৩৪ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা রাজ্জাকের ঝুলিতে রয়েছে ৪৪ উইকেট। বাংলাদেশের একমাত্র বোলার হিসাবে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ৬০০ উইকেট রয়েছে শুধুমাত্র রাজ্জাকেরই। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৬৩৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

শাহরিয়ার নাফিস ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল সোনায় মোড়ানো হলেও শেষটা সুখকর হলো না। শাহরিয়ার নাফিস ২০০৬ সালে হয়েছিলেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের অধিনায়ক ও ২০০৭ বিশ্বকাপের সহ-অধিনায়ক। এক ক্যালেন্ডারে প্রথম ও একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০০০ রান রয়েছে শুধু মাত্র নাফিসেরই।

দেশের হয়ে ২৪ টেস্টে ২৬.৩৯ গড়ে ৭ হাফ সেঞ্চুরি ও ১ সেঞ্চুরিতে নাফিস সংগ্রহ করেছেন ১২৬৭ রান এবং ৭৫ ওয়ানডেতে ৩১.৪৪ গড়ে ১৩ হাফ সেঞ্চুরি ও ৪ সেঞ্চুরিতে নাফিসের নামের পাশে রয়েছে ২২০১ রান। দেশের হয়ে মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পেয়ে নাফিস করেছিলেন ২৫ রান।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও দেশের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান ছিলেন শাহরিয়ার নাফিস। প্রথম শ্রেণীতে ১৪০ ম্যাচে ৩৮.৪০ গড়ে নাফিস সংগ্রহ করেছেন ৮১৪১ রান।

খেলোয়াড়ী জীবনের সাফল্য এবার তাঁরা নতুন জীবনে, নতুন ভূমিকায় পান কি না – এখন সেটাই দেখার বিষয়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link