ইতিহাস, ঐতিহ্য কিংবা অর্জন কোনো মানদন্ডেই রিয়াল মাদ্রিদ একটুও পিছিয়ে নেই। বরং ইউরোপিয়ান অন্যান্য ক্লাবগুলোর চেয়ে ঢের এগিয়ে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। আলফ্রেড ডি স্টিফানো থেকে রোনালদো নাজারিও, লুই ফিগো, ডেভিড বেকহাম, এমন কি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো- এমন সব বড় নামগুলোর সাথে জড়িয়ে আছে মাদ্রিদের ইতিহাস।
সেই সমৃদ্ধ ইতিহাসে টনি ক্রুস, লুকা মদ্রিচরা সামনের সারিতেই থাকবেন। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সর্বোচ্চ পাঁচটি ইউরোপিয়ান শিরোপা জয়ের রেকর্ডটা তো এই দুজনের। তবে ক্রুস কিংবা মদ্রিচ, দুজনই এই মুহূর্তে রয়েছেন ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায়। দুজনই এই মৌসুম শেষে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন।
এই শতাব্দীতে রিয়ালের সিংহভাগ সাফল্যের পথযাত্রায় যারা ছিলেন অন্যতম, সেই তাদেরকে বাদেই আগামীর পরিকল্পনা সাজাতে হবে মাদ্রিদকে। বিষয়টা মোটেই সহজ নয়। তবে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রিয়াল মাদ্রিদ বরাবরই কেতা দুরস্ত। তাই মাদ্রিদ বোর্ডও নিয়ম, নিয়তি- দুই মেনে ভবিষ্যতের দিকে চোখ রাখছে।
রিয়ালের আক্রমণভাগে প্রাণভোমরা করিম বেনজেমাও রয়েছেন ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায়। তবে ক্রুস কিংবা মদ্রিচের মতো এখনই তাঁর রিয়াল অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটছে না। তারপরও ফ্রন্টম্যান হিসেবে রিয়ালের চোখ এখন এমবাপ্পে আর হাল্যান্ডের দিকে। এ ছাড়া ইংলিশ মিডফিল্ডার জুড বেলিংহ্যামের উপর নজর তো সেই বিশ্বকাপের পর থেকেই।
এমনিতে মাদ্রিদের মধ্যভাগে ক্রুস, মদ্রিচ ছাড়াও এই মুহূর্তে প্রতিভাবান সব মিডফিল্ডারে পূর্ণ। যাদের মধ্যে দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। সুয়ামেনি, কামাভিঙ্গা, ভালভার্দেদের নিয়ে মাদ্রিদ ভবিষ্যতের কাজটা আগেই সেরে রেখেছে। তারপরও ক্রুস, মদ্রিচদের রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে একজন বেলজিয়ান ফুটবলারের দিকে চোখ রেখেছে তারা। লিস্টার সিটির হয়ে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ইউরি তিয়েলসম্যানকে সামনেরর মৌসুমের জন্য দলে ভেড়াতে পারে মাদ্রিদ।
তিয়েলসম্যান আর বেলিংহ্যামকে একই সাথে দলে ভেড়াতে পারলে ভবিষ্যতের দল গঠনে রিয়াল বেশ খানিকটা এগিয়ে যাবে নিশ্চিতভাবেই। তবে টনি ক্রুস, লুকা মদ্রিচের অভাব আদৌ পূরণ হবে কিনা সেই প্রশ্ন রয়েই যায়। কারণ বয়স বাড়লেও তারা এখনো বয়সের ভারে নুয়ে পড়েননি। অন্তত পারফরম্যান্সের বিচারে অনেক তরুণ ফুটবলারদের সাথেই দিব্যি টেক্কা দিতে পারেন এই দুই মিডফিল্ডার।
তারপরও রিয়াল মাদ্রিদ সব সময় ভবিষ্যতের কথা ভেবে দল সাজায়। এ জন্য আগে ভাগেই দল গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে স্প্যানিশ এ ফুটবল জায়ান্ট। সেই যাত্রায় তারা চূড়ান্ত সফল হবে কিনা তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডো পর্যন্ত।