হৃদয় জিতে নিতে প্রস্তুত ‍হৃদয়

তিনি প্রস্তুত। এমন বার্তা তো সেই কবে থেকেই দিয়ে আসছেন। সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের জাতীয় দলের রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল। সিনিয়র ক্রিকেটারদের বেশ কয়েকজনের ইতি ঘটতে চলছে। সে শূন্যস্থান পূরণের জন্যই যেন তৌহিদ হৃদয় নিজেকে প্রস্তুত করছেন। ঘরোয়া প্রতিটি টুর্নামেন্টে তিনি নিয়মিত ভাল করছেন। সে ধারা এবার অব্যাহত ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেও।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের উদ্বোধনী দিনে মাঠে নেমেছিল গেল বারের চ্যাম্পিয়ন দল শেখ জামাল ও ঢাকা লেপার্ডস। শুরুর আনুষ্ঠানিকতা শেষে খেলা মাঠে গড়াতে খানিকটা সময় নেয়। কারণ কালবৈশাখীর প্রভাব। নির্ধারিত সময়ের বেশ খানিকটা পরে খেলা শুরু হওয়ায়, মিরপুরের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় ৪২ ওভারে।

শেখ জামাল টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে লেপার্ডসকে স্বস্তির সুযোগই দেয়নি। ১৬৯ রানেই অল আউট। সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে থাকে স্বাচ্ছন্দ্যেই। তবে চ্যাম্পিয়নদের জয়ের গতি বাড়িয়ে দেন তরুণ তুর্কি তৌহিদ হৃদয়। নিজের ব্যাটিং দক্ষতার প্রমাণ রাখেন হৃদয়। ঠিক কি কারণে তাঁকে বাংলাদেশের জাতীয় দলের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে সে কারণটা আরও একবার স্পষ্ট করেন।

সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ধারাবাহিক রানের চাকা সচল রেখেছেন হৃদয়। যার ফল তিনি পেয়েছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তিনি একাদশে সুযোগ পেয়েছেন। মারকুটে ব্যাটিংয়ের ছাপটা তিনি সেখানেও রেখেছেন। প্রত্যাশার মশালে খানিকটা জ্বালানি জোগান দিয়েছেন তিনি।

এরপরই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে দলেও সুযোগ পেয়েছেন হৃদয়। সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর অভিষেকের। কেননা দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বিশ্রাম দিয়েছে নির্বাচকরা। অন্যদিকে, দলের থাকা ইয়াসির আলী চৌধুরি রাব্বি রয়েছেন অফ ফর্মে। সেক্ষেত্রে ইনিংস নির্মাণ থেকে শুরু করে দ্রুত গতিতে রান তোলার দায়িত্ব এসে পড়তে পারে হৃদয়ের কাঁধে। আর তাইতো তিনি নিজের কাঁধ আরও বেশি বলিষ্ঠ করবার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের মঞ্চে।

ডিপিএলে দলের জয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ব্যাট হাতে খেলেছেন ৫৪ রানের এক আগ্রাসী ইনিংস। মাত্র ৩০ বলের এই ইনিংসে তিনি সাতটি চার ও দুইটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। এমনকি ১৮০ স্ট্রাইকরেটে খেলা এই ইনিংসে তিনি দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছেড়েছেন। এমন সব ইনিংসই প্রমাণ করে তৌহিদ হৃদয় প্রস্তুত যেকোন চ্যালেঞ্জের জন্য।

তবে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে হৃদয় ঠিক কেমন করবেন, সে কথা এখনই বলে দেওয়া বেশ মুশকিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আলাদা একটা চাপ রয়েছে। তাছাড়া তাঁকে বিবেচনা করা হচ্ছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জায়গায়। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার বাড়তি চাপ তো থাকছেই হৃদয়ের মস্তিষ্কে।

এত সব চাপ সামলে হৃদয় নিশ্চয়ই নিজেকে উজাড় করে দিতে চাইবেন। কেননা তিনি তো নিজের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন মানসিকতা ধারণ করেন। ২০১৯ যুবা বিশ্বকাপ জয়ী দলের তিনিও ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্য। হৃদয়ের এই ইনিংসগুলো আশা দেখা। বাংলাদেশের পাইপলাইন যে একেবারেই নিষ্ক্রিয় নয় সে বার্তা দেয়। তরুণ ক্রিকেটারদের একটু সঠিক দিক নির্দেশনা আর পরিচর্যা করা প্রয়োজন। তাহলে হয়ত সবারই বিকল্প খুঁজে পাওয়া সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link