চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব, ধুন্ধুমার এক লড়াই

হাই প্রেসিং আর আল্ট্রা অ্যাটাকিং ট্যাকটিক্সে বার্সা আসলে যে কাউকে বিধ্বস্ত করে দিতে পারে। বায়ার্ন মিউনিখের ম্যাচটা দেখলেই সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। এই ইনফর্ম ফরোয়ার্ড লাইনের ওপর ভর করেই দশ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের স্বপ্ন দেখছে দলটা। 

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব শেষ হলো। ৩৬ দল থেকে বাদ পড়েছে বারো দল, আট দল চলে গিয়েছে পরের রাউন্ডে। বাকি ষোল দলের ভাগ্য ঝুলে আছে – তবে ফলাফল ছাপিয়ে গ্রুপ পর্বের কিছু ব্যাপার উঠে এসেছে ফুটবলপ্রেমীদের আলোচনায়। সেগুলোই তুলে ধরার চেষ্টা করেছে খেলা-৭১।

  • বার্সেলোনার আক্রমণভাগ

হ্যান্সি ফ্লিকের অধীনে বার্সেলোনা আবির্ভূত হয়েছে নতুন রূপে, গোল করা এখন নেশার মত হয়ে গিয়েছে দলটার জন্য। ইউরোপীয় মঞ্চেও সেটার ব্যতিক্রম হয়নি, সর্বোচ্চ ২৮ টা গোল করেছে তাঁরা। রবার্ট লেওয়ানডস্কি তো টুর্নামেন্টের শীর্ষ গোলদাতা, রাফিনহাও আছেন তালিকার দুই নম্বরে।

হাই প্রেসিং আর আল্ট্রা অ্যাটাকিং ট্যাকটিক্সে বার্সা আসলে যে কাউকে বিধ্বস্ত করে দিতে পারে। বায়ার্ন মিউনিখের ম্যাচটা দেখলেই সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। এই ইনফর্ম ফরোয়ার্ড লাইনের ওপর ভর করেই দশ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের স্বপ্ন দেখছে দলটা।

  • রিয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ডিএনএ

প্রথম পাঁচ ম্যাচের তিনটাতেই হার, চলতি আসরে রিয়াল মাদ্রিদের শুরুটা হয়েছিল দুঃস্বপ্নের মত। স্বাভাবিকভাবেই বাদ পড়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল তাঁরা। তবে খাদের কিনারা থেকে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে দলটা। কথায় আছে না, রিয়াল মাদ্রিদ নেভার ডাইজ; ইউরোপীয়ান প্রতিযোগিতায় এটা আরো বেশি সত্যি।

শেষ তিন ম্যাচেই লস ব্ল্যাঙ্কোসরা ডু অর ডাই সমীকরণে খেলেছে। আর তিন ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে তাঁরা। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে শিরোপা ধরে রাখা কিছুই নয়।

  • লিভারপুল-ম্যানসিটি – একই মুদ্রার দুই পিঠ

প্রিমিয়ার লিগের দুই জায়ান্ট লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার সিটি চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভিন্ন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে অলরেডরা আছে টেবিলের শীর্ষে, সরাসরি শেষ ষোলোতে খেলবে দলটা।

অথচ সিটি এর ঠিক উল্টো, শেষ সপ্তাহে জিততেই হতো তাঁদের। সেখানেও প্রথমে পিছিয়ে পড়েছিল তাঁরা, তবে শেষ পর্যন্ত কোনরকম রক্ষা পেয়েছে দলটা। কিন্তু বিপদের শেষ আছে নাকি, প্লে-অফে রিয়াল মাদ্রিদ বা বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে খেলতে হবে তাঁদের।

  • উনাই এমেরির চমক

১৯৮৩ সালের পর এবারি প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা পেয়েছেন অ্যাস্টন ভিলা। আর এর পিছনে বিশাল অবদান আছে উনাই এমেরি। তবে টুর্নামেন্টে খেলতে এসেই তৃপ্তির হাসি হাসেননি তিনি, আট ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জিতে আগে ভাগেই পরের পর্বের জায়গা পাকা করে নিয়েছে দলটি।

উনাই এমেরি কোচ হিসেবে সেই উত্তর এতদিনে জেনে ফেলার কথা। অ্যাস্টন ভিলার মাঝারি মানের স্কোয়াড দিয়েও জাদু দেখাচ্ছেন তিনি, সেই জাদুতে এরই মাঝে পুড়েছে বায়ার্নের মত দল। আর কাদের পোড়া বাকি?

  • নতুন ফরম্যাট

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শুরুর আগ থেকেই অবশ্য আলোচনায় আছে টুর্নামেন্টের ফরম্যাট। অতিরিক্ত ম্যাচ একদিকে যেমন চাপ তৈরি করেছে খেলোয়াড়দের ওপর আরেকদিকে অঘটনের সম্ভাবনাও কমিয়ে দিয়েছে অনেক। ফলে রোমাঞ্চে ভাটা পড়েছে একটু হলেও।

এই যেমন ব্রেস্ট ছাড়া আর কোন খর্ব শক্তির দল এবার দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পারেনি। ফলাফল এমন একতরফা হয়ে গেলে নিশ্চিতভাবেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আনন্দে ভাটা পড়বে।

Share via
Copy link