পাকিস্তানের প্রতিভা বিসর্জন

পাকিস্তানে কোন কালেই ক্রিকেট প্রতিভার কোন কমতি ছিল না। আজও দেশটির আনাচে কানাচে আছে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার। তবে সেই ক্রিকেটারদের নার্সিং করে আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করাতে কিছু সংকট আছে। দেশটি তাঁদের প্রতিভার পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারে না। ক্রিকেট কাঠামোও এর অন্যতম কারণ।

পাকিস্তানে কোন কালেই ক্রিকেট প্রতিভার কোন কমতি ছিল না। আজও দেশটির আনাচে কানাচে আছে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার। তবে সেই ক্রিকেটারদের নার্সিং করে আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করাতে কিছু সংকট আছে। দেশটি তাঁদের প্রতিভার পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারে না। ক্রিকেট কাঠামোও এর অন্যতম কারণ।

পাকিস্তান ক্রিকেটে এমন অনেক ব্যাটসম্যানই এসেছেন যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সেরাদের একজন হতে পারতেন। তবে ক্রিকেট বোর্ড কিংবা ক্রিকেটারদের ব্যর্থতায় সেটা আর হয়ে ওঠেনি। টেস্ট ক্রিকেটেও দারুণ শুরুর পর হারিয়ে যাওয়া পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মিছিলটা বেশ লম্বা। এদের মধ্যেই কয়েক জনকে নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন।

  • উমর আকমল

২০০৯ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদার্পন করেই আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের অন্য ব্যাটসম্যানরা যেখানে ৩০ রান করতেই হিমসিম খাচ্ছিল সেখানে তিনি খেললেন ১৬০ বলে ১২৯ রানের ইনিংস।

পরের ইনিংসেও ২২২ বলে করেছিলেন ৭৫ রান। সব মিলিয়ে নিজের প্রথম টেস্ট সিরিজেই পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছিলেন। নিজের প্রথম ৫ টেস্টেই তাঁর ঝুলিতে ছিল একটি সেঞ্চুরি ও পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরি। এমন স্বপ্নের মত শুরুর পরেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। ফলে মাত্র ১৬ টেস্টেই থেমে যায় তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ার। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেন নিজের শেষ টেস্ট ম্যাচ।

  • ইয়াসির হামিদ

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্বপ্নের মত শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচে খেলেন ১৭০ এবং ১০৫ রানের দুটি ইনিংস। ইতিহাসের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট অভিষেকেই দুটি সেঞ্চুরি করেন।

এছাড়া তাঁর নিখুঁত টেকনিকের কারণে পাকিস্তানও দেখেছিল বড় স্বপ্ন। তবে বড় ইনিংস খেলা বড় বাঁধা হয়ে উঠেছিল হামিদের জন্য। দারুণ শুরু করেও নিজের উইকেট দিয়ে আসতেন। ফলে ২০১০ সালে মাত্র ২৫ টেস্টেই থেমে যায় ইয়াসির হামিদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার।

  • ইমরান নাজির

২০০০ সালে রীতিমত ঘোষণা দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদার্পণ করেছিলেন ইমরান নাজির। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজের টেস্ট অভিষেক হয়। সেই সময় কোর্টনি ওয়ালশ ও কার্টলি অ্যামব্রোসদের বিপক্ষে ১৮০ বলে খেলেছিলেন ১৩১ রানের বিশাল এক ইনিংস।

এর পরের বছরও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন। তবে বেশিদিন নিজের ফোকাস ধরে রাখতে পারেননি। ফলে মাত্র ৮ টেস্টেই থেমে যায় টেস্ট ক্রিকেটের যাত্রা।

  • আসিম কামাল

২০০৩ সালে পাকিস্তানের এক বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান নিজের অভিষেক ম্যাচেই ক্রিকেট বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন। নিজের প্রথম টেস্ট ইনিংসেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯৯ রানের ইনিংস খেলেন। এরপর ভারতের বিপক্ষে নিজের ফর্ম ধরে রাখেন।

এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮৭ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন। তবুও পাকিস্তানের সেই সময়ের শক্তিশালি ব্যাটিং লাইন আপে নিজের জায়গা পাকা করতে পারেননি তিনি। ফলে ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের শেষ টেস্ট খেলেন। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের হয়ে খেলা ১২ টেস্টে ৩৭ গড়ে করেন ৭১৭ রান।

  • হাসান রাজা

পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল হাসান রাজার। করাচির এই ব্যাটসম্যান ১৯৯৬ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলেন।

ঘরোয়া ক্রিকেটে অসাধারণ পারফর্মেন্সের পুরষ্কার হিসেবেই জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনোই সেই প্রতিভার পরিচয় দিতে পারেননি। দেশটির হয়ে খেলা ৭ টেস্টে করেছিলেন ২৩৫ রান।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...