ফ্ল্যাট পিচ, ছোট বাউন্ডারি আর ব্যাটারদের অতি আগ্রাসী মেজাজের কারণে চলতি আইপিএলে বোলারদের পারফরম করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে স্পিনারদের জন্য কাজটা আরো কঠিন, তবু হাতেগোনা কয়েকজন প্রায় প্রতি ম্যাচে দলের জন্য অবদান রাখছেন। তাঁদেরই একজন বরুণ চক্রবর্তী, কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে নিয়মিত দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিচ্ছেন তিনি।
মৌসুমের শুরু থেকে সব ম্যাচেই একাদশে ছিলেন এই বোলার, টিম ম্যানেজম্যান্টের ভরসার প্রতিদানও দিয়েছেন উদার হাতে। সবশেষ দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষেও দেখা গিয়েছে একই চিত্র, প্রায় একাই দলটির মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এদিন চার ওভার হাত ঘুরিয়ে তিন উইকেট শিকার করেছেন এই স্পিনার, আর সেজন্য তাঁকে খরচ করতে হয়েছে মোটে ১৬ রান। ব্যাটিং বান্ধব টুর্নামেন্টে এমন বোলিং ফিগার এককথায় অসাধারণ; তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেয়ার ইম্প্যাক্ট তো রয়েছেই। তাঁর এই পারফরম্যান্সের কারণেই গড়পড়তা সংগ্রহ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দিল্লিকে।
ইনিংসের নবম ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসেছিলেন বরুণ, নিজের প্রথম বলেই প্রতিপক্ষের অধিনায়ক ঋষাভ পান্তকে আউটের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। যদিও ফিল্ডার সেই সুযোগ লুফে নিতে পারেনি। ক্যাচ মিসের আক্ষেপ অবশ্য নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই মেটান তিনি; সাজ ঘরে ফেরত পাঠান পান্তকে।
উইকেটের ধারা একই ছিল পরের ওভারেও, প্রথম বলে বিধ্বংসী ট্রিস্টান স্টাবসের মহামূল্যবান উইকেট তুলে নেন এই ডানহাতি। দুই ইনফর্ম ব্যাটারকে দ্রুত হারিয়ে হাবুডুবু খেতে থাকা ক্যাপিটালস বাহিনী এরপর কুমার কুশাগ্রাকে পাঠিয়েছিল ধ্বস ঠেকানোর জন্য। কিন্তু কলকাতার মিস্ট্রি বোলারের বিরুদ্ধে কোন জবাব জানা ছিল না তাঁরা।
এককথায় বলতে গেলে, মাঝের ওভারে রীতিমতো ঝড় তুলেছেন চক্রবর্তী। শুরুর দিকের বিপর্যয় সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই করতে থাকা দিল্লিকে চোখের পলকে গভীর খাদে ফেলে দিয়েছেন তিনি। সুনীল নারাইনের সঙ্গে তাঁর স্পিন জুটি যেভাবে জমে উঠেছে সেটা যেকোনো দিন যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্য মরণ ফাঁদ হতে পারে; কলকাতার জন্য দারুণ ব্যাপারই বটে।