ঘরোয়া ক্রিকেটে আনিসুল ইসলাম ইমনের অভিষেক খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। গত বছর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে অভিষেক। আর চলতি বছরের অসমাপ্ত লিগে খেলেছেন ওল্ড ডিওএইচএস স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে।
সব মিলিয়ে দুই আসরে খেলেছেন ১৪ টি ম্যাচ। না, এই অল্প সময়ের ক্যারিয়ারেই বড় কিছু করে ফেলেননি ২৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। ৩৫-এর কাছাকাছি গড় নিয়ে করেছেন শ-পাঁচেক রান। প্রথম মৌসুমে উত্তরার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন পাঁচটি। তবে, আক্রমণাত্মক মানসিকতাটা ঠিকই প্রকাশ পেয়েছে বারবার।
যদিও গেল বছর প্রিমিয়ার ডিভিশন টি-টোয়েন্টিতেও খেলেছেন দুই ম্যাচ। তবে, উত্তরার হয়ে সেই যাত্রায় মেলে ধরতে পারেননি নিজেকে।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে তাঁকে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী নেয়, তখন তাতে বড় কোনো চমক যেমন ছিল না, তেমনি ছিল না বড় কোনো আলোচনাও। কে জানে, সেটাকে অবশ্য নিজের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছিলেন তিনি।
তাঁকে দলে নিয়ে অভিজ্ঞ কোচ সারওয়ার ইমরানের দল রাজশাহী যে ভুল করেনি সেটা আসরের উদ্বোধনী ম্যাচেই বোঝা গেল। প্রথম ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে ২৩ বলে ৩৫ রান করে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছিলেন।
পরের দুই ম্যাচে করেন যথাক্রমে ২ ও ২৪। বড় একটা ইনিংস তাঁর কাছে পাওনা হয়েছিল। সেই পাওনাটা তিনি মিটিয়ে দিলেন গাজী গ্রুপ চিটাগংয়ের বিপক্ষে। এবার তিনি টি-টোয়েন্টিতে নিজে প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন।
জিয়াউর রহমানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৪ বলে করে ৫৮ রান। ইনিংসে ছিল ছয়টি চার ও একটি ছক্কা।
আনিসুল পুরোদস্তর নারায়নগঞ্জের ছেলে। জন্ম ১৯৯৭ সালের চার নভেম্বর। নারায়নগঞ্জের অন্যতম পুরনো বিদ্যাপিঠ আই.ই.টি সরকারী স্কুলে তার পড়াশোনা। এরপর পড়েন নারায়নগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। এখন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পড়ছেন।
ডান হাতি এই ব্যাটসম্যান একাধারে ডান হাতি মিডিয়াম পেসার। ১৪ ম্যাচে ছয়টি লিস্ট ‘এ’ উইকেটও পেয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে আসার আগে ইমন বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলেছেন। ছিলেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দলের সদস্যও। কোচিং করেছেন সিলেটের সাবেক বাঁ-হাতি স্পিনার সাজু দত্তর অধীনে।
বাংলাদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে কিংবা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এর আগেও এমন অনেক প্রতিভা উঠে এসেছে। তাঁদের কেউ লম্বা দৌঁড়ে টিকে গেছেন। আফিফ হোসেন ধ্রুব’র মত কেউ কেউ জাতীয় দলেও খেলছেন। আবার আলিস আল ইসলামের মত কেউ কেউ ‘ওয়ান ম্যাচ ওয়ান্ডার’ হয়েই রয়ে গেছেন।
ইমনের ভাগ্যে কি ঘটবে, সেটা জানার জন্য সময়ের অপেক্ষা করার কোনো বিকল্প নেই। আবার এটাও সত্যি যে, ইমনের জন্য এখন পরিশ্রম করার কোনো বিকল্প নেই।