মঞ্জুর খেয়াল মাফিক চলে নারী দল, ‘ব্যাকফুটে’ বিসিবি

সাফল্য কিংবা ব্যর্থতার গল্প ছাড়া বাংলাদেশ নারী দল নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয় না বললেই চলে। তবে এবার দল নির্বাচন নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে নারী দলের প্রধান নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলামের উপর।

ক’দিন আগেই শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য স্বর্ণা আক্তারকে দলে রেখেছিলেন এ নির্বাচক। কিন্তু, কয়েকদিন বাদেই তাঁকে সরিয়ে রুবায়া হায়দার ঝিলিককে স্কোয়াডে অন্তর্ভূক্ত করেন তিনি। ভিতরের খবর বলছে, কোনো ইনজুরি নয়, স্বর্ণা আক্তারের কাল হয়েছে মূলত বিসিবি’র মেডিকেল ইউনিটে গিয়ে। সেখানে যাওয়ার পরই নাকি তাঁকে এক মাসের বিশ্রামে পাঠানো হয়।

নারী ক্রিকেটারদের সাথে এমন ‘বিশ্রাম’ নাটক নিয়ে কম জলঘোলা করেননি মঞ্জুরুল ইসলাম। এই লঙ্কা সফরেই বিশ্রামের দোহাই দিয়ে তিনি দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রুমান আহমেদ আর সালমা খাতুনকে দলে রাখেননি। এটি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভও ঝেড়েছিলেন রুমানা আহমেদ। তাঁর মতে, এটি কোনো বিশ্রাম নয়, স্রেফ দল থেকে বাদ দেওয়ার জন্য তাঁকে দলে রাখা হয়নি।

মঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে রুমানা আহমেদই কিন্তু প্রথম ক্রিকেটার নন, যিনি দল নির্বাচনের ব্যাপারে মুখ খুললেন। এর আগে পেসার জাহানারা আলমও এই নির্বাচকের বিপক্ষে কথা বলেছিলেন। ২০২২ সালের আইসিসি কমনওয়েলথ টুর্নামেন্টে সুযোগ না পাওয়ার পর মঞ্জুরুল ইসলামকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন তিনি।

নারী দলের প্রধান নির্বাচকের পাশাপাশি দেশের বাইরের সিরিজগুলোতে দলের ম্যানেজার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন মঞ্জুরুল ইসলাম। যদিও চলমান শ্রীলঙ্কা সফরে তিনি যান নি। তবে ক্রিকেটারদের অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, ম্যানেজার থাকাকালীন নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই নাকি বাজে ব্যবহার করতেন মঞ্জুরুল ইসলাম!

নারী দলের এই নির্বাচকের এহেন কর্মকান্ডে বিব্রত স্বয়ং বিসিবিও। আর এ কারণে তাঁর পাশাপাশি দলে নতুন এক ম্যানেজার নিয়োগ দিয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট সংস্থা। আর এতেই চটে যান মঞ্জুরুল ইসলাম। শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য তাঁর টিকিট নিশ্চিত করা হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি দলের সাথে আর যাননি।

এ নিয়ে বিসিবি ব্যাখ্যাও দিয়েছে। তাঁরা বলেছে, ‘মঞ্জুরুলের চাপ কমাতেই নতুন ম্যানেজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অনেক সমস্যা হচ্ছিল। সেটি বিবেচনা করেই আমাদের এমন সিদ্ধান্ত। এখন থেকে সে শুধু দল নির্বাচন করবে। আমাদের আলাদা ম্যানেজার তো থাকছেই।’

জাতীয় দলের সাবেক পেসার মঞ্জুরুল ইসলামের আচরণ নিয়েও নাকি তাঁর সাথে কথা বলেছে বিসিবি। জানা গেছে, বিসিবি থেকে তাঁকে ক্রিকেটারদের প্রতি আরো নমনীয় হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি তাঁকে এ ব্যাপারে সতর্কও করা হয়েছে।

তবে দল নির্বাচন নিয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত কিংবা বাজে আচরণের অভিযোগ থাকলেও আগামী নারী বিশ্বকাপ পর্যন্ত প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বেই থাকছেন মঞ্জুরুল ইসলাম।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link