ঠিক ৪৪ ম্যাচের লড়াই শেষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ তাঁর দুই ফাইনালিস্টকে পেয়েছে। ১৪ তারিখ দুবাইয়ে ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। আরব আমিরাতের কন্ডিশনে শিরোপা তুলতে হলে অবশ্য বেশ কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে এই দুই দলকে। ফলে মাঠে নামার আগে বেশ কিছু ফ্যাক্টর মাথায় রেখেই নামবেন দুই দলের ক্রিকেটাররা।
- ম্যাচ শুরুর আগেই শেষ?
দুবাইয়ের ব্যাট-বলের লড়াইয়ে নামার আগেই নির্ধারণ হয়ে যেতে পারে ম্যাচের ভাগ্য। অ্যারোন ফিঞ্চ ও কেন উইলিয়ামসনের মধ্যে টস ভাগ্যে কে জিতবেন সেটাই সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর হতে পারে এই ম্যাচের। কেননা এই বিশ্বকাপে দুবাইয়ে আগে ব্যাট করে জেতাটা মোটামুটি অসম্ভবে পরিণত হয়েছে।
কেননা পরে বোলিং করলে শিশিরের কারণে বোলারদের বেশ ভুগতে হয়। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ১২ ম্যাচে পরে ব্যাট করা দলই জিতেছে ১১ ম্যাচে। আগে ব্যাট করা দল জিতেছে মাত্র ১ ম্যাচে। ফলে টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিতে পারাটা খুব গুরুত্বপূর্ন কালকের ম্যাচে।
- পাওয়ার প্লে
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাওয়ার প্লে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। পাওয়ার প্লের ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারলে দল অনেকটাই এগিয়ে যায়। বিশেষ করে এই বিশ্বকাপে আগে বল করা দলগুলোর জন্য পাওয়ার প্লে বেশ বড় সুযোগ।
দুবাইয়ে আগে বোলিং করা দল পাওয়ার প্লেতে তুলে নিয়েছে মোট ১৭ উইকেট। বোলিং গড় মাত্র ১২.৯৪। ওদিকে পরে বোলিং করা দল প্রায় ৮০ গড়ে রান দিয়ে নিয়েছে মাত্র ৪ উইকেট। ফলে ফাইনাল ম্যাচেও আগে বোলিং করা দলকে পাওয়ার প্লের ঠিকঠাক ব্যবহারটা করতে হবে।
- স্পিনের মূল ভরসা
মজার বিষয় হচ্ছে দুই পেস নির্ভর দলের ম্যাচে সবচেয়ে বড় চাবি হতে পারে স্পিন। বিশেষ করে মিডল ওভারে দুবাইয়ের পিচে স্পিনারদের খেলতে বেশ ভুগতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের। এই মাঠে বিশ্বকাপে মিডল ওভারে স্পিনাররা মাত্র ১৬.২৮ গড়ে নিয়েছেন ৪৩ উইকেট। এমনকি মিডল ওভারে স্পিনারদের বিপক্ষে ওভার প্রতি ছয় রানও নিতে পারেনি ব্যাটসম্যানরা। স্পিনারদের ইকোনমি রেট ছিল মাত্র ৫.৯৩।
স্পিনারদের বিপক্ষে চিন্তাটা অবশ্য অজিদেরই বেশি। একমাত্র ডেভিড ওয়ার্নার বাদে অজি ব্যাটিং লাইন আপের কেউই স্পিনারদের বিপক্ষে স্বাচ্ছন্দ্য না। ওয়ার্নার বাদে আর কেউ স্পিনারদের বিপক্ষে ১০০ স্ট্রাইক রেটেও ব্যাট করতে পারেন না।
এছাড়া স্মিথ ও ওয়ার্নার বাদে বাকি সবার ব্যাটিং গড়ও ২০ এর নিচে। ফলে স্পিনারদের বিপক্ষে অজি ব্যাটিং লাইন আপের এই দুর্বলতা নিশ্চয়ই কাজে লাগাতে চাইবে নিউজিল্যান্ড। ওদিকে অজিদের বড় শক্তির জায়গা হতে পারেন আবার অ্যাডাম জাম্পা।
- শিশির সংকট
দুই সেমিফাইনালেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে দ্বিতীয় ইনিংসের ডেথ ওভারে। যেই সময় শিশির বেশ বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। দুই ম্যাচে শেষ চার ওভারে যথাক্রমে দরকার ছিল ৬০ ও ৬২ রান। দুই ক্ষেত্রেই এক ওভার আগে থাকতেই ম্যাচ জিতেছে চেজ করা দল।
ফলে পরে বোলিং করা দলের জন্য ডিফেন্ড করাটা বেশ কঠিন। কেননা শিশিরের কারণে পেসাররা বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন। ফলে ঠিকঠাক ইয়োর্কার করাটা বেশ কঠিন হয়ে যায় ডেথ বোলারদের জন্য। সেক্ষেত্রে গুড লেন্থে বোলিং করার চেষ্টাটাই বেশি করবেন বোলাররা।
– ক্রিকবাজের ছায়া অবলম্বনে