বস্তুত এই লেখা স্রোতেরই বিরুদ্ধে।
ঘাড়ের দুই দিনব্যাপী অসহ্য ব্যথা (একটা মন্তব্য দেখছিলাম, প্রথম ইনিংসে তার ব্যাটিং দেখে স্বয়ং প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়ই নাকি তার ঘাড় মটকে দিয়েছেন!) সামলে সুমলে আজ দ্বিতীয় ইনিংসে যখন ব্যাট হাতে ক্রিজে এলেন এই মুহূর্তে গণনিন্দিত ৩৭ বছরের ঋদ্ধিমান সাহা, তখন ক্রিজে তার সঙ্গী শ্রেয়াস আইয়ার, আর ভারত ৫১/৫ ছুঁয়ে ১০৩/৬, লিড ১৫২ রানের।
আরও পড়ুন
লোয়ার অর্ডারে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ৩২ রান না থাকলে এটুকুও হতনা। তারপরে ৭ম উইকেটে ৬৪ রানের জুটি, শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে। ১৬৭/৭ হয়ে গেল, যখন অভিষিক্ত শ্রেয়াস আইয়ার ফিরলেন ৬৫ রানে। প্রথম টেস্টে ১০৫ আর ৬৫, ভবিষ্যত উজ্জ্বলতর হোক শ্রেয়াস আইয়ারের। প্রথম ভারতীয় হিসেবে অভিষেক টেস্টের দুই ইনিংসে শতরান ও অর্ধশতরান কারী হিসেবে প্রথম ভারতীয় হলেন তিনি।
বিভিন্ন ক্রিকেট বিষয়ক গ্রুপ, বিভিন্ন বোদ্ধা আর না-বোদ্ধা ব্যক্তি ও ব্যক্তিবর্গ গতকালই ফেসবুক তীর্থ এবং টুইটার জগতে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মৃত্যু ঘন্টা বাজিয়ে দিয়েছেন।
লেখাটা যখন লিখতে বসেছিলাম তাঁর রান মাত্র ২৭ রান (অপরাজিত)। একটি ছক্কা ও একটি চার।
কিন্তু, আমার এই লেখা তার মারা ঐ ছক্কাটি নিয়ে। আগের বলেই চার মেরেছেন, লাফানো ফিল্ডার আঙুল ছুঁয়েছিলেন, ক্যাচ হয়নি।পরের বলেই ওই ছয়, যার ঠিকানা ছিল মাঠের সীমানার অনেকটা বাইরে। কলিজা আর দম না থাকলে ওই সময়ে ওই শটটা মারা যায়না। ছয়টা আসলে শুধু বোলারকে না, মারা হয়েছিল গতকালের ওই মৃত্যুঘন্টা বাজিয়ে দেওয়া অগণিত বাজনদার-কেও।
এ টেস্টের ফল যাই হোক, এ ম্যাচের পরে আর একটিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলুন বা না খেলুন, আজ ঋদ্ধিমান সাহার ওই ছয়টা ‘মেড মাই ডে’। কুর্ণিশ, পাপালি।
__________
ঋদ্ধিমান শেষ অবধি চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৬১ করেছেন, অপরাজিত থেকেছেন। ইনিংস ঘোষণার আগে ভারত সাত উইকেটে ২৩৪ রান করেছে। ভারত চতুর্থ ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের সামনে ২৮৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছে। যাতে ভারত প্রতিপক্ষকে চারটি রান তোলার সুযোগ দিয়ে কানপুরে চতুর্থ দিনের শেষ বেলায় একটা উইকেটও তুলে নিয়েছে। জয়ের এই সম্ভাবনাটুকু যে সৃষ্টি হয়েছে তাতেও ঋদ্ধিমান সাহার অবদানটা কম নয়, সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে যাই বলুক না কেন!