যে নতুনের গান

জাতীয় দলের আশেপাশে অনেক বদল হতে যাচ্ছে।

তবে ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচক পর্যায়ে এসব বদল কার্যকর হতে নিশ্চয়ই সময় লাগবে। নতুন প্রধান কোচ পেতে আগামী বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্তও অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে টি-টোয়েন্টি দলে আগাপাশ তলা পরিবর্তনে এতো সময় নিতে চাচ্ছে না বিসিবি। খুব দ্রুতই ঘোষনা হতে যাওয়া দলে ৫-৬ জন খেলোয়াড়ের বদল হতে পারে।

আগামীকাল বৈঠকে বসছে জাতীয় দল নির্বাচক কমিটি। বিশ্বকাপের পর প্রথম এই আনুষ্ঠানিক বৈঠকে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের জন্য দল তৈরি করে ফেলার কথা।

বিসিবির একটি সূত্র জানালো, এই দলে বিশ্বকাপের দলের থেকে অন্তত ৫টি পরিবর্তন আশা করছেন তারা। সূত্রটির দাবি, এর মধ্যে তিন জন একেবারে টি-টোয়েন্টির নতুন মুখ থাকতে পারে। আর দুই জন আবার দলে ফিরতে পারেন।

আমরা নানা সূত্র থেকে বোঝার চেষ্টা করেছি, এই বদলে কারা দলে আসতে যাচ্ছেন। সেই মুখগুলোকে এক জায়গায় করার একটা চেষ্টা করা গেলো।

  • পারভেজ হোসেন ইমন

ইমন কোনো স্তরে নিজেকে টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান বলে প্রমাণ করে ফেলেছেন, এমনটা দাবি করা যাবে না। সর্বশেষ ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি, বঙ্গবন্ধু কাপে একটা মাত্র ফিফটি ছিলো তার। কিন্তু এই তরুন ব্যাটসম্যানের মধ্যে অনেকেই সম্ভাবনা দেখছেন।

অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতে আসা এই ওপেনারকে ভাবা হচ্ছে তামিম ইকবাল, লিটন দাসদের বিকল্প। এখানে তানজিদ হোসেন তামিমও বিবেচনায় এসে পড়তে পারেন। লিটন, সৌম্য দু জনই বাদ পড়লে এবং তামিম যেহেতু খেলছেন না, সে ক্ষেত্রে দু জন তরুন ওপেনার সুযোগ পেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

  • তৌহিদ হৃদয়

মিডল অর্ডারে টি-টোয়েন্টিতেও এতোদিন বাংলাদেশের প্রধান জায়গাগুলো সিনিয়রদের দখলে ছিলো। কিন্তু সেভাবে তারা কেউই ক্লিক করতে পারছেন না। এরপর আবার সাকিব আল হাসান পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে পারবেন না। ফলে টপ-মিডল অর্ডারে একটা নতুন মুখের আসা অনিবার্য হয়ে গেছে। আর সেই নতুন মুখ হতে যাচ্ছেন সম্ভবত তৌহিদ হৃদয়।

বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ দলের সাবেক এই অধিনায়ক এই ফরম্যাটটা খুব খারাপ খেলেন না। তিনি এ পর্যন্ত ২৫টি টি-টোয়েন্টিতে ৫৮৭ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১১৬.০০। যদিও বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে একেবারেই বলার মত পারফরম্যান্স ছিলো না তার।

  • ইয়াসির আলী রাব্বি

রাব্বিকে নতুন মুখ বলাও মুশকিল, আবার পুরোনো মুখ তো বলা যাবে না।

দলের সাথে আছেন অনেকদিন। কিন্তু অভিষেকটাই হচ্ছে না তার। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুন ছন্দে থাকেন সবসময়। সেটা আর্ন্তজাতিকে করে দেখানোর সুযোগই পাচ্ছেন না। এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে আবার সম্ভবত দলে আসছেন।

৫৪টি টি-টোয়েন্টিতে ১১৫৮ রান করেছেন রাব্বি। বড় বড় শট করতে পারা রাব্বির এই ফরম্যাটে স্ট্রাইকরেট ১২৩.৫৮। তিনি অনেকটাই ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে থাকেন। ফলে আসছে সিরিজে তার অভিষেকও হয়ে যেতে পারে।

  • কামরুল ইসলাম রাব্বি

স্রেফ ভাগ্যটা খারাপ বলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেতে পারেননি। নইলে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশী পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফর্মে ছিলেন কামরুল ইসলাম রাব্বি।

বঙ্গবন্ধু কাপ টি-টোয়েন্টিতে ২৫ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন রাব্বি। জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট অভিষেক হলেও শর্টার ফরম্যাটে এখনও আর্ন্তজাতিক ম্যাচ খেলেননি বরিশালের এই তরুন।

ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে ৬৮ ম্যাচে এখন পর্যন্ত তার শিকার ৮০ উইকেট।

  • নাজমুল হোসেন শান্ত

শান্তর ওপর সম্ভবত আরেকবার বাজি ধরতে যাচ্ছে ম্যানেজমেন্ট। তাকে ভবিষ্যত অধিনায়ক মনে করে সব ফরম্যাটেই কিছু কিছু ম্যাচ খেলানো হয়েছে। টেস্টে একটা দুটো ইনিংস বাদ দিলে খুব বলার মত কিছু করতে পারেননি।

টি-টোয়েন্টিতে এর আগে ৩টি ম্যাচ খেলে ২৪টি মাত্র ম্যাচ খেলেছেন। আর সব ধরণের টি-টোয়েন্টি খেলে ৭৮ ম্যাচে তার রান ১৫৮৪। সেখানে স্ট্রাইকরেট ১২৮.৯৯। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতেও খুব খারাপ করেননি। ৩৬৮ রান নিয়ে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন।

এর বাইরেও কয়েকটা নাম আছে দলে ঢোকার আলোচনায়। আসতে পারেন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে খুব ভালো পারফরম করা সাইফ হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়। আসতে পারেন সম্প্রতি ভালো বোলিং করতে থাকা অফস্পিনার তানভির ইসলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link