পাঠানের অবিশ্বাস্য তাণ্ডব

ক্রিকেটটা কোন কোন সময়ে প্রচণ্ড রকম পেশিশক্তির এক খেলায় পরিণতি হয়। যার গায়ের জোর যত বেশি, কোন কোন ক্ষেত্রে সেই মাথায় তোলে বিজয়ের মুকুট। ঠিক তেমনই এক চিত্রের মঞ্চায়ন হয়ে গেল জিম অ্যাফ্রো টি-টেন টুর্নামেন্টে। 

ক্রিকেটটা কোন কোন সময়ে প্রচণ্ড রকম পেশিশক্তির এক খেলায় পরিণতি হয়। যার গায়ের জোর যত বেশি, কোন কোন ক্ষেত্রে সেই মাথায় তোলে বিজয়ের মুকুট। ঠিক তেমনই এক চিত্রের মঞ্চায়ন হয়ে গেল জিম অ্যাফ্রো টি-টেন টুর্নামেন্টে।

প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি ডারবান কালান্দার্স ও জোবার্গ বাফেলোজ। প্রথমে ব্যাট করে বিশাল এক সংগ্রহই পায় কালান্দার্স। দশ ওভারে জয়ের জন্যে ১৪১ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুড়ে দেয় তারা। বেশ চাপে তখন জোবার্গ। চাপটা বেড়ে কয়েকশগুণ হয়ে যায় শেষের তিন ওভারে।

বাফেলো্দেজর তখন জয়ের জন্যে প্রয়োজন ছিল ৬৪ রান। যেকোন ক্রিকেটের বিচারেই প্রায় অসম্ভব এক যাত্রা। তবে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। স্রেফ একটা তাণ্ডব। ধ্বংসলীলা বলতে যা বোঝায় আরকি। তাই তিনি করে গেলেন শেষের ১৮ বলে।

চার-ছক্কার বৃষ্টিতে একটা পর্যায় বন্যা বইয়ে দিলেন ইউসুফ। সেই বানের জলে ভেসে যায় ডারবান কালান্দার্স। কি এক অভূতপূর্ব কীর্তি! ম্যাচটির দর্শকদের কালে কালে রোমাঞ্চিতই করবে এই ম্যাচ। মুশফিকুর রহিমকে অপরপ্রান্তে দর্শকের ভূমিকায় রেখে, একাই অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলে ফেলেন ইউসুফ পাঠান।

অষ্টম ওভারে বল হাতে আসেন মোহাম্মদ আমির। অভিজ্ঞ এই বোলার রীতিমত পাত্তাই পেলেন না। উড়ে গেলেন ইরফানের তীব্রে তোপে। তিনটি সুবিশাল ছক্কার সাথে একটি বাউন্ডারি। মোট মিলিয়ে সেই ওভারেই ইরফানের ঝুলিতে ২৪ রান।

দারুণ খেলতে থাকা ইউসুফকে স্ট্রাইক দিতেই মড়িয়া ছিলেন মুশফিকুর রহিম। পরের ওভারের প্রথম বলেই তাই তিনি সিঙ্গেল নিয়ে নিলেন। তিনিও হয়ত বিশ্বাস করেননি যে এমন অসাধ্য সাধন করা সম্ভব। সেই ওভারে পাঠানের ব্যাট থেকে আরও দুইটি ছয় ও একটি বাউন্ডারি। তখন সম্ভবত জয়ের বিশ্বাসটা একটু একটু করে কাছে এসেছে জোবার্গ বাফেলোজের।

শেষ ওভারে তবুও ১৯ রান প্রয়োজন। জিম্বাবুয়ের তেন্ডাই চাতারার হাতে বল। তার উপরই ভরসা করতে চাইলো ডারবান কালান্দার্স। তবে কাজের কাজ কিচ্ছুটি হয়নি। এক বল বাকি থাকতেই লক্ষ্য টপকে যায় জোবার্গ। আবারও শুরুর বলে মুশফিকের সিঙ্গেল। আর এরপর পাঠানের রুদ্রমূর্তির শেষ মঞ্চায়ন।

দুইটি করে ছক্কা ও চারে জয়ের বন্দরে জোবার্গ বাফেলোজের তরী। অবিশ্বাস্য কাজটা করতে শেষের দিকে ১৪ বলে পাঠান নিয়েছেন ৬২ রান। অকল্পনীয় এক ক্রিকেটীয় উন্মাদনা তখন জিম্বাবুয়েতে ছড়িয়ে গেছে। পেশিশক্তির মাহাত্মই যেন বোঝালেন ইউসুফ পাঠান। শেষদিকে জয় উদযাপনে মুশফিকুর রহিমকে কাঁধে তুলে নিয়ে তিনি যেন বোঝালেন, ‘হি ইজ দ্য জায়ান্ট’।

শেষ অবধি ২৬ বলে পাঠানের ৮০ রানের সুবাদে ১ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে ফাইনালের টিকিট কেটে ফেলে জোবার্গ বাফেলো। এমন বিনোদন সম্ভবত বহুদিনের খোরাক জোগাবে। এমন চোখ ধাঁধানো ধ্বংসযজ্ঞ অনুপ্রাণিত করবে ক্রিকেটের এই ক্ষুদ্র সংস্করণগুলোকে।

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...