শরিফুল, ঢাকার অন্ধকার রাতে ফোঁটা শিউলি ফুল

নতুন বল হাতে নিলেই শরিফুল ইসলামের রক্তে উইকেটের নেশা জাগে, পুরো বিপিএল জুড়েই প্রতিপক্ষের টপ অর্ডার গুঁড়িয়ে দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে সেটা পারেননি, তাতে অবশ্য কিছু আসে যায় না। কেননা ডেথ ওভারে ঠিকই পুষিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এদিন চার ওভার হাত ঘুরিয়ে এই পেসার শিকার করেছেন দুইটি উইকেট, আর সেজন্য খরচ করতে হয়েছে মোটে ১৭ রান। তাঁর বোলিংয়ের কারণেই চট্টগ্রামের রান নাগালের বাইরে যায়নি। সাগরিকার ব্যাটিং বান্ধব উইকেট পেয়ে যখন আধিপত্য দেখাচ্ছেন ব্যাটাররা, তখন এমন পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে বাড়তি প্রশংসার দাবিদার।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে এই বাঁ-হাতিকে আক্রমণে এনেছিলেন অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ। সেই ওভারে আট রান দিলেও তাঁর পরের ওভারে কেবল এক রান নিতে পারেন টম ব্রুসরা। পুনরায় সতেরোতম ওভারে বল হাতে তুলে নেন তিনি, সেই ওভারে আসে তিন রান। যদিও এই তিন রানের দুইটিই এসেছে আবার ওয়াইড থেকে।

ইনফর্ম এই তরুণের সেরা রূপ দেখা যায় ব্যক্তিগত শেষ ওভারে। সেট ব্যাটার তানজিদ হাসান আর ফিনিশার শুভাগত হোমের উইকেট তুলে স্বাগতিকদের বড় সংগ্রহের স্বপ্ন মাটি করে দেন তিনি।

চলতি বিপিএলে এই তারকা অবিশ্বাস্য খেলা উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। বাইশ গজে ব্যাটারদের ত্রাস হয়ে উঠেছেন, সবমিলিয়ে ১২ ইনিংসে বল করে নিয়েছেন ২২টি উইকেট। তিনি এখন পর্যন্ত এই আসরের সেরা বোলার তো বটেই, বিপিএলের ইতিহাসেই আর কোন পেসার এক টুর্নামেন্টে এত উইকেট নিতে পারেননি।

এমনকি সাকিব আল হাসান ছাড়া আর কোন বোলারের পক্ষেই সম্ভব হয়নি এক আসরে বিশের বেশি উইকেট নেয়ার। অর্থাৎ পঞ্চগড়ের এই ক্রিকেটার রীতিমতো ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন, অথচ দলীয় ব্যর্থতার কারণে সেটা যথোপযুক্ত লাইমলাইট পেলো না।

শুরু থেকেই ধারাবাহিক ভাল বোলিং করে গিয়েছেন শরিফুল ইসলাম, সেটারই পুরষ্কার স্বরূপ সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর স্থান তাঁর দখলে; বেশ ইকোনমিক্যালও তিনি। শেখ মেহেদী দারুণ কিছু না করলে সেরা বোলার নির্বাচিত হবেন এই পেসার, তবে দুর্দান্ত ঢাকা আরো ভাল করলে ভাগ্যের আশায় থাকতে হতো না তাঁকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link