আশ্চর্য্য সমাপতন। গত কয়েকদিন যাবৎ অল-রাউন্ডারদের নিয়ে লিখে চলেছি। আর আজ তাঁদেরই একজনের কথা আলাদা ভাবে বলতে হচ্ছে। ’৭০ ও ’৮০-এই দুই দশকে যে চার অলরাউন্ডার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দাপিয়ে বেড়াতেন, স্যার রিচার্ড হ্যাডলি তাঁদেরই একজন। আর এটা বিনা দ্বিধায় বলা যায়, এঁদের মধ্যে সেরা বোলার নিউজিল্যান্ডের এই কিংবদন্তি।
আরো পড়ুন
- মিস্টার পারফেক্ট
- দ্য ফাইনেস্ট ব্ল্যাক ক্যাপ
- নিউজিল্যান্ডের প্রথম ক্রিকেট সুপারস্টার
- ক্রিকেটের দুর্লভতম প্রজাতি
- স্বর্ণযুগের চার মহানায়ক: চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে
৮৬ টেস্টে ৪৩১ উইকেট। ৮৬ টেস্ট খেলার পর সবচেয়ে বেশি টেস্ট উইকেট লঙ্কান গ্রেট মুত্তিয়া মুরালিধরনের। ৪৯৬। দ্বিতীয় স্থানে হ্যাডলি। পেসারদের মধ্যে সর্বপ্রথম। ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০-এই সতেরো বছরে হ্যাডলি খেলেছেন ‘মাত্র’ ৮৬ টেস্ট। অনেকের ধারণা হতে পারে, হ্যাডলি খুব বেছে বেছে ম্যাচ খেলতেন।
কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, নিউজিল্যান্ড সেইসময় খেলেছে ঠিক ১০০ টেস্ট। হ্যাডলি তার মধ্যে ৮৬ টিতে ছিলেন। পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়া, পৃথিবীর বাকি জায়গায় হ্যাডলির গড় ২৫ এর নিচে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে ২৭.২৬। আর পাকিস্তানে একটিই সফর করেছিলেন, ১৯৭৬ সালে। সেখানে তাঁর গড় ৪৪।
১৯৭৮ থেকে ১৯৮৭-এই দশ বছরে প্রত্যেক বার হ্যাডলির গড় ছিল ৩০ এর নিচে। মাত্র একবছর (১৯৮১) ২৫ এর ওপর। ১৯৮৬ সালে যেবার নিউজিল্যান্ড ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথম বার সিরিজ জেতে, সেবার হ্যাডলি পেয়েছিলেন ৩ টেস্টে ১৯ উইকেট-২০.৫২ গড়ে। যে টেস্ট নিউজিল্যান্ড জেতে, নটিংহ্যামে, হ্যাডলির ঘরের মাঠ, হ্যাডলি সেই ম্যাচে পেয়েছিলেন ১০ উইকেট এবং প্রথম ইনিংসে করেন ৬৮।
হ্যাডলির যে পারফরম্যান্স সবচেয়ে আলোচিত, তা হলো ১৯৮৫ সালে ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৫ উইকেট ও প্রথম ইনিংসে ৪৫ বলে ৫৪ রান। যে অলরাউন্ডার দের নিয়ে লিখছি, অর্থাৎ ২০০০ রান ও ১০০ উইকেট পাওয়া খেলোয়াড়রা, তাঁদের মধ্যে টেস্ট প্রতি বল করার সংখ্যায় হ্যাডলি রয়েছেন পেসারদের মধ্যে সবার ওপরে। তিনি করতেন টেস্ট প্রতি ২৫৪.৮৬ বল, যা নিউজিল্যান্ডেরই আরেক কিংবদন্তি ড্যানিয়েল ভেট্টোরির প্রায় সমান।
এছাড়াও, তাঁর ক্রিকেট জীবনে তাঁর দলের নেয়া প্রতি তিনটি উইকেটে মোটামুটি একটি করে নিতেন হ্যাডলি। শতাংশের হিসাবে ৩৪.৪৮। তাঁর ওপরে মাত্র পাঁচ জন-মুরালি, বার্নেস, টার্নার, গ্রিমেট ও ফজল মাহমুদ। কাজেই, শুধুমাত্র বোলার হিসাবেও হ্যাডলি প্রবাদপ্রতিম। ব্যাটিং টা বাড়তি। আজ সত্তর বসন্ত পার করার দিনে, হ্যাডলি তাই এতো আলোচিত।