বৃথাই টেক অফ!

১২, ১৭ আর ৪২০। সংখ্যাগুলো যথাক্রমে তাঁর ওয়ানডে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি আর প্রথম শ্রেনির ম্যাচে পাওয়া উইকেটের সংখ্যা। যথাক্রমে ১৩ ওয়ানডে, নয়টি টি-টোয়েন্টি আর ১১৫ প্রথম শ্রেণির ম্যাচের ক্যারিয়ারে। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল অবধি। আর বাংলার হয়ে খেলেছিলেন ২০০৫ থেকে ২০১৯ সাল।

আরো পড়ুন

বল করার আগের লাফটার মত টেক অফ করেনি তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার, একথা যতটা সত্যি, তার চেয়েও অনেক বেশি সত্যি অশোক ডিন্ডার অমানসিক লড়াই করে সম্পূর্ণ ‘নো হোয়্যার’ থেকে উঠে এসে জাতীয় ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠা পাওয়াটা। এজন্য তাঁর উঠে আসার সময়ের প্রথম কোচ অটল দেব বর্মণকে আজও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি, যেটা আজ ব্যতিক্রম বলেই মান্যতা পায়।

শেষ বছরেও (২০১৮-১৯ মৌসুম) রঞ্জি ট্রফিতে বাংলা দলের হয়ে আট ম্যাচে ২৮ উইকেট ছিল অশোক ডিন্ডার। তার আগের বছর (২০১৭-১৮ মৌসুম) নিয়েছিলেন আট ম্যাচে ৩৫ উইকেট। ক্রিকেট নিয়ে বাড়ির তীব্র অমত উপেক্ষা করে আট বছর কঠোর খাটুনির পরে বাংলা দলের টুপি অর্জন করেছিলেন তিনি।

এমনিতে আর কে কাকে কিছু দেয় কোথাও? তাঁর কঠোর পরিশ্রম আর লম্বা স্পেলে পেস বোলিং করে যাওয়ার ‘অ্যাটিচুড’কে আজও কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করেন বাংলার সাবেক কোচ পরশ মামব্রে।

২০০৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলা দলের হয়ে নিজেকে উজাড় করার পরে অক্রিকেটীয় কারণে বাংলা দল থেকে বাদ পড়া তিনি গতবার গোয়ার হয়ে খেলবেন বলে সই করেছিলেন, কিন্তু রঞ্জি ট্রফি অনুষ্ঠিত হয়নি বলে খেলতে পারেন নি। পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থেকে উঠে এসে ভারতের ক্রিকেট মানচিত্রে জায়গা করে নেওয়া এক কালের এই আইপিএল স্টার  এক বছর আগে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিয়েছিলেন।

অনেকেই তাঁকে অপছন্দ করতেন, কেউ কেউ ট্রল করতেন অযাচিৎ, আবার অনেকে তাঁকে খুবই পছন্দ করতেন। তাই অনেকেই তাঁর অবসরে খুশি হয়েছিলেন, অনেকে দু:খও পেয়েছিলেন। কিন্তু কেউই তাকে নিজের মন থেকে মুছে দিতে পারেননি।

অবসরের পরের দিন অনেকটা নিউজপ্রিন্টও বরাদ্দ করতে হয়েছিল তার জন্য। বাংলা ক্রিকেটের এক ‘উজ্জ্বল ঘটমান সময়’ এক বছর আগে পিঠ রেখেছিল দেওয়ালে। দ্বিতীয় ইনিংসে সপরিবারে ভালো থাকার শুভেচ্ছা, এখন বিধায়ক অশোক ডিন্ডাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link