Social Media

Light
Dark

নবীনদের উত্তাপে উড়ন্ত জয়

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এর আগে কখনোই কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। অবশ্য সীমিত সংস্করণের ক্রিকেটে এর আগে এ দুই দল মুখোমুখিই হয়েছে একটি মাত্র ম্যাচে। আবু ধাবিতে হওয়া সেই একমাত্র ম্যাচে ইংলিশরা জিতেছিল পূর্ণ আধিপত্য বিস্তার করে, ৮ উইকেটে।

আবু ধাবির সেই পরাজয়েরই যেন এবার প্রতিশোধ নিল বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে মিলল ঠিক তেমনই আগ্রাসনের চিত্র। তবে এবারের দৃশ্যপটা শুধুই বাংলাদেশের। ম্যাচের সিংহভাগ মুহূর্তে দাপট দেখিয়ে টি-টোয়েন্টির বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ৬ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে শুরু করেন ইংলিশ দুই ওপেনার ফিলিপ সল্ট আর জশ বাটলার। দুজনের জুটি থেকে ৮০ রান। অবশ্য ব্যক্তিগত ১৯ রানেই ফিরতে পারতেন জশ বাটলার। কিন্তু বাটলারের সহজ একটি ক্যাচ মিস করেন সাকিব।

আর সেই ক্যাচ মিসেই বড় একটি মাশুল দিতে হয় বাংলাদেশকে। ১৯ রানে নতুন জীবন পাওয়া বাটলার থামেন ব্যক্তিগত ৬৭ রানে। অবশ্য ইংলিশদের ইনিংসে প্রথম আঘাত হেনেছিলেন নাসুম আহমেদ। দলীয় ৮০ রানের সময় ব্যক্তিগত ৩৮ রানে ব্যাট করতে থাকা সল্টকে ফেরান এ বাঁ-হাতি স্পিনার।

প্রথম উইকেটের পর ইংলিশদের ইনিংসে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে দ্রুতই। ক্রিজে আসা নতুন ব্যাটার ডেভিড মালানকে টিকতেই দেননি সাকিব। ব্যক্তিগত ৪ রানে সাকিবের বলে শান্তর কাছে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মালান। তবে তখনও এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করছিলেন ইংলিশ অধিনায়ক বাটলার। ব্যাট হাতে বাটলারের রুদ্রমূর্তিতে বড় পুঁজির পথেই তখন ছুটছিল ইংল্যান্ড।

কিন্তু হাসান মাহমুদের বলে বাটলার ফিরে গেলে ইংলিশদের ইনিংসে বড় সংগ্রহের পথে ছুটতে পারেননি কোনো ব্যাটার।  প্রথম ১০ ওভারে ৮০ রান করা ইংল্যান্ড শেষ ১০ ওভারে তুলতে পারে মাত্র ৭৬ রান। বাংলাদেশের হয়ে এ দিন ডেথ ওভার দুর্দান্ত বল করেন হাসান মাহমুদ আর মুস্তাফিজুর রহমান। এই দুই বোলারের শেষ ৪ ওভারে ইংলিশরা তুলতে পারে মাত্র ২১ রান। যার ফলে বড় সংগ্রহের দিকে চোখ রাখা ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ হয় ১৫৬ রানে।

১৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনাই করেছিল দুই ওপেনার রনি তালুকদার আর লিটন দাস। ৮ বছর পর জাতীয় দলের একাদশে ফিরে শুরু থেকেই আগ্রাসী ভূমিকায় খেলতে থাকেন রনি। কিন্তু ব্যক্তিগত ইনিংসটি তেমন বড় করতে পারেননি তিনি। আদিল রশিদের গুগলিতে পরাস্ত হয়ে ফিরে যান ১৪ বলে ২১ রান করে। রনির মতো লিটনও ফিরে যান দ্রুতই। জোফরা আর্চারের শট বলে উড়িয়ে খেলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ১২ রানে ক্রিস ওকসের তালুবন্দী হন তিনি।

তবে দুই ওপেনার ফিরে গেলেও বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সহজ বানিয়ে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত আর অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়। এমনিতে অন্যান্য ম্যাচে অ্যাঙ্করিং রোলে খেলা শান্তকে এ দিন দেখা যায় অন্য রূপে। শুরু থেকেই বাউন্ডারির উপর নজর দেন তিনি। মার্ক উডের এক ওভারে টানা ৪ টা চার মারেন তিনি। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন মাত্র ২৭ বলে। তবে ফিফটির পরে আর উইকেটে টিকতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ৫১ রানে উডের বলে বোল্ড হন শান্ত।

শান্তকে এ দিনে ক্রিজে সঙ্গ দিয়েছিলেন তৌহিদ হৃদয়। ব্যক্তিগত ২৪ রানে আউট হয়ে ফিরে গেলেও তাদের ৬৫ রানের জুটিতে ম্যাচ জয়ের একটা শক্ত ভিত্তি পেয়ে যায় বাংলাদেশ। তাই হৃদয়, শান্ত ফিরে গেলেও কোনো বিপদে পড়তে হয়নি টাইগারদের। বাংলাদেশের লক্ষ্যের পরবর্তী পথটুকু পাড়ি দেন অধিনায়ক সাকিব আর আফিফ। তাদের দুজনের ৪৬ রানের নিরবচ্ছিন্ন জুটিতে ১২ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link