পক্ষপাতমূলক ধারাভাষ্য গ্রহণযোগ্য নয়

নিরপেক্ষ ধারাভাষ্য এবং ভার‍ত কেন্দ্রিক ধারাভাষ্যতে বেশ পার্থক্য আছে। আমি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধারাভাষ্য দিচ্ছিলাম। তখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলছিলো। পুরো বিশ্বতেই যেটা চলছিলো। এটা বাংলাদেশ বনাম ভারতের খেলা ছিলো। বাংলাদেশের মানুষের ক্রিকেটের প্রতি অনেক আবেগ, ঠিক ভারতের মানুষের মতো তাঁরাও ধারাভাষ্য শোনে।

একবার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের খেলা চলছিলো হায়দ্রাবাদে। ইংল্যান্ডের সাথে ভারত নাকি ইংল্যান্ডের সাথে সাউথ জোন ঠিক মনে নেই।  আমার এক স্কুলের বন্ধু সেখানে খেলছিলো। সে সময়টায় আমি স্কুল শেষে ফিরছিলাম।

আমার বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘যেহেতু অনূর্ধ্ব-১৯ দলের খেলা –  সেখানে কি অনূর্ধ্ব-১৯ এর কাউকে ধারাভাষ্যে রাখা উচিত না?’

আপনি বাবার কথার বিরুদ্ধে কিভাবে বলবেন? তখন আসলে বাবা যাই বলুক না কেনো উত্তরে ‘হ্যাঁ’ বলতাম।

‘ তখন বিকাল ৩ টা বাজে। আমি দুই বাস পরিবর্তন করলাম। তপ্ত গরম ছিলো। প্রথমে এক বাসে উঠলাম, সেখান থেকে নেমে আরেক বাসে। এরপর সরাসরি চলে গেলাম অল ইন্ডিয়া রেডিওতে; ঠিক সেটা বন্ধ হবার একটু আগ মূহুর্তে। সেখান থেকে আমাকে বলল, আপনাকে আগে অডিশন দিতে হবে।

আপনি কিছুদিন যুবভবানিতে চেষ্টা করে দেখুন আগে। কিন্তু এর এক বছর পরই আমি রঞ্জি ট্রফিতে কমেন্ট্রি করেছিলাম। তরুণ বয়সে শুরু করার একটা বড় সুবিধে হলো যে আপনি ভুল করলে খুব একটা সমস্যা হবে না।

আপনি এমন সময়ে ভুল করছেন যখন পুরো বিশ্ব আপনাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখছেন। কারণ আপনি যদি এই কাজটা ৩০ বছর বয়সে এসে শুরু করেন তাহলে আপনার কাছে ভুল করার খুব বেশি সময় নেই। আপনাকে তখন টিকে থাকতে নিজের সেরাটাই দিতে হবে।

নিরপেক্ষ ধারাভাষ্য এবং ভার‍ত কেন্দ্রিক ধারাভাষ্যতে বেশ পার্থক্য আছে। আমি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধারাভাষ্য দিচ্ছিলাম। বাংলাদেশ বনাম ভারতের খেলা ছিলো। বাংলাদেশের মানুষের ক্রিকেটের প্রতি অনেক আবেগ। ঠিক ভারতের মানুষের মতো তাঁরাও ধারাভাষ্য শোনে।

আমি কখনোই ভারত কেন্দ্রিক কমেন্ট্রি করতে পারি না। কারণ এই খেলাটা বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান কিংবা অন্যান্য দেশে দেখবে। হিন্দি ধারাভাষ্য হলে সেটা ভিন্ন বিষয়। আমরা সবাই (ভারতের) হিন্দি ধারাভাষ্যও করি, সেটা নাহয় ভারত কেন্দ্রিক হতে পারে। কিন্তু কোনো অবস্থায়ই আপনি পক্ষপাতমূলক ধারাভাষ্য দিতে পারেন না। আপনি তাদেরকে সেটাই বোঝাতে চেষ্টা করেছি যে, আপনাকে দুই দলের দৃষ্টিকোণ থেকেই কথা বলতে হবে।

আপনি তো প্রোফেশনাল ক্রিকেট খেলেননি। তাহলে আপনি কিভাবে সব কিছু সহজেই করে ফেললেন?

আসলে আমি প্রতিদিনই ধারাভাষ্য দিতাম। তবে আমার ভূমিকা ছিলো ভিন্ন এবং এটা আমি ক্যারিয়ারের শুরুতেই বুঝতে পেরেছিলাম। আমি বলেছিলাম আমি কি নন স্ট্রাইকার হতে পারি? যখন আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে ক্রিকেট খেলতাম। আমি দেখলাম আমি একটা জুটিতে মূল রানের ২৫-৩০% করতে পারছিলাম এবং লম্বা জুটি গড়তে পারতাম।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...