অমরত্বের প্রত্যাশা নেই…

রেকর্ড! রেকর্ড! রেকর্ড! প্রতিটি ম্যাচে, প্রতিটি ইনিংসে শোনা যায় আজ এই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছে। আজকের ম্যাচে এত রান করলে, এত উইকেট নিতে পারলে, এত রানের পার্টনারশিপ করলে নতুন রেকর্ড হবে। কিন্তু আজ এমন কিছু রেকর্ড আর স্কোর সম্পর্কে জানবো যে গুলো হয়তো নতুন করে কখনও গড়া কিংবা ভাঙা সম্ভব নয়।

রেকর্ড! রেকর্ড! রেকর্ড! প্রতিটি ম্যাচে, প্রতিটি ইনিংসে শোনা যায় আজ এই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছে। আজকের ম্যাচে এত রান করলে, এত উইকেট নিতে পারলে, এত রানের পার্টনারশিপ করলে নতুন রেকর্ড হবে। কিন্তু আজ এমন কিছু রেকর্ড আর স্কোর সম্পর্কে জানবো যে গুলো হয়তো নতুন করে কখনও গড়া কিংবা ভাঙা সম্ভব নয়। চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক সেই রেকর্ড গুলো সম্পর্কে।

  • সর্বাধিক রান (৬১,৭৬০): স্যার জ্যাক হবস

৬১,৭৬০ সংখ্যাটি টাকার না, একজন ক্রিকেটারের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে রান সংখ্যা। হয়তো কেউ প্রথমে দেখে ভাববেন সংখ্যাটি লেখার ক্ষেত্রে ভূল হয়েছে। কিন্তু সত্যি এইটাই। ইংলিশ কিংবদন্তি ক্রিকেটার জ্যাক হবস হলেন এই অবিশ্বাস্য রানের মালিক। ১৯০৫ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এই রেকর্ড করেন তিনি।

১৯০৫ সালে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া লিগ দিয়ে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু করেন ফাস্ট ক্লাস ক্রিকেট ইতিহাসের সবচাইতে সফলতম এই ব্যাটসম্যান। খেলে যান ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত। এরই মধ্যে ৮৩৪টি ম্যাচ খেলেন তিনি। ব্যাট করেন ১৩২৫টি ইনিংসে। একের পর এক রেকর্ড করে তকমা পেয়ে যান কিংবদন্তির। তিনি একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ৬০,০০০ রানের এলিট ক্লাবে প্রবেশ করেন। এখন পর্যন্ত ক্রিকেট ইতিহাসের কোন ব্যাটসম্যান এই ক্লাবে সামিল হতে পারে নি।

ফাস্ট ক্লাস ক্রিকেটে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ানও তিনি। রয়েছে সবচেয়ে বয়স্ক ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে শতক হাঁকানোর রেকর্ড।

  • সর্বাধিক উইকেট (৪,২০৪): উইলফ্রেড রোডস

১৮৯৯ সালে প্রথম টেস্ট, ১৯৩০ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ। তবে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের সাথে যুক্ত ছিলেন ১৯৩১ বছর পর্যন্ত। অর্থাৎ, ৩২ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ার। যেখানে বর্তমান সময়ের ক্রিকেটাররা ৩৫ কিংবা ৩৬ বছরেই অবসর নিয়ে নেন। সেখানে ৩২ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের কথা শুনে চোখ কপালে উঠার কথাই।

সবচেয় বুড়ো বয়সে টেস্ট খেলার রেকর্ডটা তারই। ৫২ বছর বয়সে টেস্ট খেলেছেন। ১ থেকে ১১ নম্বর পজিশনের সব গুলোতেই ব্যাট করেছেন। তবে এর চাইতে চমকের বিষয় হলো তার বল হাতে উইকেট সংখ্যা। ১,১১০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৪,২০৪ উইকেট। ‘উইকেট মেশিন’ খ্যাত ইংলিশ এই অলরাউন্ডার ক্যারিয়ার শেষ করেছন ৩৯,৯৬৯ রান আর ৪,২০৪ রান নিয়ে।

  • সর্বাধিক সেঞ্চুরি (১৯৯): স্যার জ্যাক হবস

বর্তমান সময়ের সাথে অতীতের কোন ক্রিকেটীয় সমীকরণই যেনো মিল খাচ্ছে না। কেউ হাজার তম ম্যাচ খেলেছেন! কেউ বা কয়েক হাজারের উপর উইকেট নিয়েছেন! রান করেছন ৬০ হাজারের উপর! বিশেষ করে ব্যাট হাতে স্যার জ্যাক হবসের কথাই বলা যাক। ব্যাট হাতে কি না করেছন তিনি? শচীন, লারা, পন্টিং, বিরাট, স্মিথদের নজর কাড়া সব শট অনেক আগেই দেখা গিয়েছিল তার ব্যাটে। এখন শুধু বাজছে তার প্রতিধ্বনি।

ইতিহাসের প্রথম পরিপূর্ণ ব্যাটসম্যান, সেরা ওপেনারদের একজন। ব্রাডম্যানের গড় ছাড়া ব্যাটিংয়ের সব রেকর্ড যেনো তার কাছে দ্বারস্থ। ৬০ হাজার রানের মাইলফলকের সাথে আছে ১৯৯টি সেঞ্চুরি পূর্ণের রেকর্ড। মাঝখানে যদি বিশ্বযুদ্ধের কারনে ৫ বছর না হারাতেন তাহলে নিজকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করাতেন? ভাবতেই অবাক লাগে। তারপরও তার ১৯৯টি সেঞ্চুরির রেকর্ড কখনও ভাঙা হয়তো সম্ভব হবে না।

  • এক ইনিংসে ১,১০৭ রান!

ঘটনাটা ১৯২৬ সালের। তখন ছিল ‘টাইমলেস’ ম্যাচের যুগ। আর প্রতি ওভার ছিল আট বলের। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া লীগের প্রথম শ্রেণির প্রতিযোগিতা শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলস।

প্রথম ইনিংসে নিউ সাউথ ওয়েলসকে ২২১ রানে অলআউট করে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল ভিক্টোরিয়া। প্রতিপক্ষ বোলারদের চোখের জল নাকের জল এক করে ছেড়েছেন ভিক্টোরিয়ার ব্যাটসম্যানরা। ১৯০.৭ ওভারে তোলেন ১১০৭ রান।

ভিক্টোরিয়ার প্রথম তিন ব্যাটসম্যানই করেন ন্যূনতম একশ রান। সর্বোচ্চ ৩৫২ রান আসে ওপেনার বিল পন্সফোর্ডের ব্যাট থেকে। মাত্র ৫ রানের জন্য ট্রিপল সেঞ্চুরি পাননি চারে নামা জ্যাক রাইডার, আউট হন ২৯৫ রানে। অধিনায়ক বিল উডফুল ১৩৩ ও স্টোর্ক হেন্ড্রি করেন ঠিক ১০০ রান।

সেদিন ভিক্টোরিয়ার করা ১১০৭ রানই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক ইনিংসে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। মজার ব্যাপার, আগের রেকর্ডও ছিল ভিক্টোরিয়ারই এবং সেটাও মেলবোর্নেই। ৩৬ মাস আগে তাসমানিয়ার বিপক্ষে তারা করেছিল ১০৫৯ রান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক ইনিংসে হাজার রানের ঘটনা এখনো পর্যন্ত এই দুটিই।

  • বিরতিহীনভাবে টেস্ট খেলার রেকর্ড

১৯৭৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৫৬টি টেস্ট ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন অ্যালেন বোর্ডার। তার মাঝে ১৫৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেন কোন রকম বিরতি ছাড়া। যা বর্তমান সময়ের ক্রিকেটারদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জের। নিয়মিত দলে পারফর্ম করে যাওয়া এবং কোন ইনজুরিতে না পড়ে এক নাগাড়ে খেলতে পারার প্রবণতা বেশ কমই দেখা যায় এখনকার ক্রিকেটারদের মাঝে।

বর্ডারের পর এক নাগাড়ে টেস্ট খেলে যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে রাহুল দ্রাবিড়ের। তিনি খেলেছেন ৯৩ ম্যাচ। তার পরে এক নাগাড়ে ম্যাচ খেলেছেন গিলক্রিস্ট। তার ম্যাচ সংখ্যা ৯০টি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...