ক্যান্সারে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশের সাবেক বোলিং গুরু!

মরণব্যাধি ক্যান্সারের সাথে লড়ছেন জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের অন্যতম সেরা পেসার, বাংলাদেশের সাবেক বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক। দীর্ঘদিন ধরেই কোলন ও লিভারের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। ক্যান্সারের চতুর্থ স্তরে থাকা স্ট্রিক গতকাল গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের একটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে। আর সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। 

মরণব্যাধি ক্যান্সারের সাথে লড়ছেন জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের অন্যতম সেরা পেসার, বাংলাদেশের সাবেক বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক। দীর্ঘদিন ধরেই কোলন ও লিভারের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি।

ক্যান্সারের চতুর্থ স্তরে থাকা স্ট্রিক গতকাল গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের একটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে। আর সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে।

হিথ স্ট্রিকের শারীরিক অবস্থা নিয়ে এক বিবৃতিতে তাঁর পরিবার বলেছে, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। হিথ মানসিকভাবে শক্ত আছে। ক্রিকেট মাঠে প্রতিপক্ষের সঙ্গে যেভাবে লড়াই করেছে, সে একই ভাবে এবারও এই ব্যাধির সঙ্গে লড়াই করে যাবে। আমরা আশা করছি, আপনারা ব্যাপারটিকে গোপনীয় পারিবারিক বিষয় হিসেবে দেখবেন। আর পরিবারের এই ইচ্ছাকে সম্মান জানাবেন।’

৪৯ বছর বয়সী হিথ স্ট্রিক জিম্বাবুয়ের সোনালি সময়ের অভিযাত্রী ছিলেন। নব্বই দশকে জিম্বাবুয়ের পেস বোলিং আক্রমণ তাঁর নেতৃত্বেই বেড়ে উঠেছিল। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৬৫ টেস্ট ও ১৮৯টি ওয়ানডে খেলেছেন হিথ স্ট্রিক। টেস্টে তাঁর উইকেটসংখ্যা ২১৬ টি, আর ওয়ানডেতে ২৩৯ টি।

এখানেই স্ট্রিকের একটি কীর্তি এখনও জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট ইতিহাসে অক্ষত রয়েছে। তিনিই জিম্বাবুয়ের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র পেসার, যার দুই ফরম্যাটেই দুই শতাধিক উইকেটের কীর্তি রয়েছে।

পেসার হিথ স্ট্রিক অবশ্য ব্যাট হাতেও কার্যকর ছিলেন বেশ। টেস্টে ১৯৯০ আর ওয়ানডেতে ২৯৪৩ রান মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে করেছেন প্রায় পাঁচ হাজার রান। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটে একটা লম্বা সময়ে পর্যন্ত নেতৃত্বও দিয়েছেন হিথ স্ট্রিক।

২০০০ সাল থেকে প্রায় ৪ বছর অধিনায়কত্ব করার পর ২০০৪ সালে বোর্ডের সাথে ঝামেলার জেরে তিনি অধিনায়কত্ব সরে দাঁড়ান। এর ১ বছর বাদের মাত্র ৩১ বছর বয়সে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।

বাইশ গজকে বিদায় বলার পর কোচিংয়ে মনোনিবেশ করেন হিথ স্ট্রিক। সেই ধারাবাহিকতায় তিনি বাংলাদেশ, কলকাতা নাইট রাইডার্স, সমারসেটের বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের বোলিং হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হিথের সান্নিধ্যেই পেস বোলিংয়ে দারুণ উন্নতি ঘটে বাংলাদেশি পেসারদের।

এরপর ২০১৬ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের বোলিং কোচের পদ ছেড়ে জিম্বাবুয়ের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন তিনি। ২০১৮ সাল পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের কোচের দায়িত্ব পালন করা স্ট্রিক অবশ্য এ যাত্রায় ব্যর্থ ছিলেন।

জিম্বাবুয়ে ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় তাই তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। অবশ্য বরখাস্ত হওয়ার কিছুদিন না গড়াতেই  ২০১৮ সালের আইপিএলে তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলিং কোচের দায়িত্ব পান।

অবশ্য এর কিছু বছর পরেই হিথ স্ট্রিকের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় কলঙ্কের দাগ লাগে। আইসিসি দুর্নীতিবিরোধী বিধির বেশ কয়েকটি ধারা ভঙ্গের কারণে ২০২১ সালে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে তাঁকে ৮ বছরের নিষিদ্ধ করে আইসিসি।

এরপর থেকেই মূলত ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যান হিথ স্ট্রিক। আর মরণব্যাধি ক্যান্সারও ক্রমশ দানা বাঁধে তাঁর শরীরে। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে এখন তিনি রয়েছেন ক্যান্সারের চতুর্থ স্তরে।

এমন অবস্থায় হিথের সুস্থতা কামনা করে সবার কাছে প্রার্থনার অনুরোধ করেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রীড়া মন্ত্রী কার্স্টি কভেন্ট্রি থেকে শুরু করে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক শন উইলিয়ামসসহ ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট আরো অনেকেই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...