আইসিসি, বিষয়টা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে

যিনি সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের চোট পরীক্ষা করে, দরকারে স্ক্যান বা ওই জাতীয় রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ম্যাচ রেফারিকে রিপোর্ট দেবেন এবং সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ম্যাচ রেফারি সংশ্লিষ্ট দলকে ‘লাইক টু লাইক’ খেলোয়াড় পরিবর্তনের সবুজ সংকেত দেবেন। এতে করে অনেক দলের বিপক্ষ বোলারদের বা টেল এন্ডারদের প্রতি ইচ্ছাকৃত বাউন্সার দেওয়া এবং অযথা বডি লাইনে বল করার প্রবণতাও কমবে। খেলায় অনেক বেশি ভারসাম্য আসবে। তবে এক্ষেত্রে মাঠে আইসিসি নিয়োযিত ডাক্তার থাকা আবশ্যিক, কোন ভাবেই বিষয়টা শুধু সংশ্লিষ্ট দলের ডাক্তারের উপর ছাড়া উচিত নয়।

পুরাতনের সঙ্গে নতুনের সংমিশ্রণ, অভিজ্ঞতার সাথে তারুণ্যের মেলবন্ধনই যে কোন বিষয়কে তার সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। একই কথা প্রযোজ্য যে কোনো আইনের বিষয়। পুরনো আইনকে পরিস্থিতি অনুযায়ী সময়পযোগি করে তোলাটাই আইনের রক্ষকের প্ৰকৃত কাজ।

চোট এবং আঘাত ক্রীড়া জগতের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত একটা শব্দ। ফুটবলের মতো বডি কন্ট্যাক্ট খেলাতে তো চোট আঘাতের প্রভাব ভীষণ। কিন্তু সেই অর্থে বডি কন্ট্যাক্ট গেম না হলেও ক্রিকেটেও চোট আঘাতের প্রভাব কম নয়, যার প্রভাব অনেক সময় খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

সিডনি টেস্টের তৃতীয় দিনের কথাই ধরা যাক। ব্যাট করার সময় জাদেজার আঙুল ভাঙলো আর ঋষভ পান্ত চোট পেয়ে ফিল্ডিং করতে পারলো না। এবার তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া যাক যে ঋষভের জায়গায় ওই চোটটাই যদি বুমরাহ বা মোহাম্মদ সিরাজের লাগতো? নিয়ম অনুযায়ী তিনজন প্রধান বোলার নিয়ে ভারতকে দ্বিতীয় ইনিংসে বল করতে হতো এবং ভারতের ম্যাচে ফিরে আসার বিন্দুমাত্র সম্ভবনাটুকুও শেষ হয়ে যেত। অতীতে এমন ঘটনা ঘটেছে।

ক্রিকেটের তিনটি ফরম্যাটের মধ্যে টেস্ট এমন একটা ফরম্যাট যেটা একবার দল গঠনের পরে নূন্যতম ৪৫০ ওভার ধরে খেলার মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হয় আর এই দীর্ঘ সময় মাঠে অনেক কিছু ঘটে যায়, যার উপর অনেক সময় কোনো মানুষের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। ধরে নেওয়া যাক একটা ক্রিকেট ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলের প্রধান বোলার ব্যাট করার সময় কোনো বাহ্যিক চোট পেল এবং যার জন্য সে বাকি ম্যাচে আর মাঠে নামতে পারলো না।

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দলকে ম্যাচের দুই ইনিংসেই প্রধান বোলারকে ছাড়া খেলতে হবে, যা ম্যাচের ফলাফলে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। একই ঘটনা ঘটতে পারে প্রধান ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে ফিল্ডিং করার সময় প্রাপ্ত কোনো বাহ্যিক চোটের কারনে। আবার কখনো এই আঘাত প্রাপ্ত খেলোয়াড়ের সংখ্যা একাধিকও হতে পারে,যা সিডনিতে ভারতের জন্য হয়েছে।

এখানে সম্পূর্ন রূপে বাহ্যিক এবং মাঠে খেলার মধ্যে ঘটে যাওয়া কোনো চোটের বিষয় বলা হচ্ছে যেমন হাত বা আঙ্গুল ভেঙে যাওয়া, গোড়ালি ঘুরে যাওয়া, কাঁধের হাড় সরে যাওয়া ইত্যাদি।

আইসিসির সম্ভবত এগুলো নিয়ে ভাবার সময় হয়েছে। কনকাশন সাবের মতো খেলা চলাকালীন প্রাপ্ত বাহ্যিক চোটের জন্য ‘লাইক টু লাইক’ খেলোয়াড়কে নিয়ে এসে তাকে মাঠে পূর্ন ক্ষমতা দেওয়া হোক। তাকে শুধু ফিল্ডিং করার জন্য ডাকাটা আজকের দিনে সঠিক বিচার নয় বলে মনে হয়। দরকারে ম্যাচ রেফারির মতো আইসিসি প্রত্যেক ম্যাচে তাদের নিয়োগ করা ডাক্তার রাখুক।

যিনি সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের চোট পরীক্ষা করে, দরকারে স্ক্যান বা ওই জাতীয় রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ম্যাচ রেফারিকে রিপোর্ট দেবেন এবং সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ম্যাচ রেফারি সংশ্লিষ্ট দলকে ‘লাইক টু লাইক’ খেলোয়াড় পরিবর্তনের সবুজ সংকেত দেবেন। এতে করে অনেক দলের বিপক্ষ বোলারদের বা টেল এন্ডারদের প্রতি ইচ্ছাকৃত বাউন্সার দেওয়া এবং অযথা বডি লাইনে বল করার প্রবণতাও কমবে। খেলায় অনেক বেশি ভারসাম্য আসবে। তবে এক্ষেত্রে মাঠে আইসিসি নিয়োযিত ডাক্তার থাকা আবশ্যিক, কোন ভাবেই বিষয়টা শুধু সংশ্লিষ্ট দলের ডাক্তারের উপর ছাড়া উচিত নয়।

আইসিসি, সত্যি বিষয়টা নিয়ে ভাবার সময় হয়েছে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...