জনি বেয়ারস্টো কি সত্যিই আউট ছিলেন?

ক্রিকেটের আর্কাইভে এতক্ষণে বোধহয় মুহূর্তটা নিশ্চিত বন্দী হয়ে গিয়েছে। মঞ্চটা যখন উত্তাপ পূর্ণ অ্যাশেজ, স্টেডিয়ামটা যখন ঐতিহাসিক ‘লর্ডস’, তখন মুহূর্তটা তো আরো বেশি আলোচনায় কেন্দ্রীভূত হওয়া দরকার। হয়েছেও তাই। আলোচনা হচ্ছে, বিতর্কও হচ্ছে সমান তালে। স্পিরিট অব গেম নিয়েও প্রশ্ন উঠছে দেদারসে।

লর্ডস টেস্টের শেষ দিনের রোমাঞ্চে ইংল্যান্ডের ইনিংসে তখন ৫৩ তম ওভারের খেলা চলছে। বোলিং প্রান্তে ক্যামেরন গ্রিন। আর অন স্ট্রাইক প্রান্তে ব্যাটিংয়ে জনি বেয়ারস্টো।

তো ঐ ওভারেই গ্রিনের একটি বাউন্সার থেকে মাথা বাঁচিয়ে নেওয়ার পর ক্রিজে ব্যাট না ঠেকিয়েই বেয়ারস্টো বেরিয়ে যান ক্রিজ থেকে। ঠিক তখনই অজি উইকেট রক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি পিছন থেকে বল ছুঁড়ে উইকেট ভেঙে দেন।

ব্যাস। এরপরই লর্ডসের গ্যালারি এক মুহূর্তের জন্য হয়ে ওঠে গর্জনের মঞ্চ। তবে ইংলিশ সমর্থকদের সে গর্জনকে তোয়াক্কা না করে তৃতীয় আম্পায়ার ঠিকই আউটের সিদ্ধান্ত দেন। অনুমিতভাবেই এরপর থেকে শুরু হয় বিতর্ক।

যদিও এমসিসির নিয়ম বলছে, একটা বল তখনই ডেড হিসেবে বিবেচিত হবে, যখন বোলারের প্রান্তে থাকা আম্পায়ার নিশ্চিত হন যে ব্যাটিং ও ফিল্ডিং কোনো পক্ষই আর সেই বলটিকে খেলার বিবেচ্য মনে করছে না।

এমতাবস্থায় জনি বেয়ারস্টো আউটই ছিলেন। তবে শেষ মুহূর্তে তিনি পা দিয়ে পপিং ক্রিজে পিছ করেই ক্রিজ ছেড়েছিলেন। তবে আম্পায়ারের কাছে সেটি ডেড বল হিসেবে গণ্য না হওয়ায় আউট সংকেতে ফিরে যেতে হয় বেয়ারস্টোকে।

এমন অদ্ভুতুড়ে আউটের অবশ্য বেয়ারস্টোরও অসতর্কতার দায় আছে। তিনি ক্রিজ ছেড়েছিলেন বল ছাড়ার ঠিক পর মুহূর্তেই। আর অ্যালেক্স ক্যারিও স্ট্যাম্পিংয়ের জন্য দূর থেকে বল ছুঁড়ে ছিলেন তাৎক্ষণিকভাবে। তাই বিতর্ক জোরালো হলেও আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্ত সঠিকই ছিল। অন্তত, এমসিসির নিয়ম তাই-ই বলে।

তবে এরই মধ্যে ইংল্যান্ড সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েছেন অ্যালেক্স ক্যারি। শুধু ইংল্যান্ড সমর্থকরাই নয়, ক্যারিকে ‘স্পিরিট অব গেম’ লঙ্ঘনের তকমা দিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন আরো অনেকেই। যদিও এর বিপরীতে ক্যারির পক্ষেও রয়েছেন অনেকে।

তবে মাঠের বাইরের এসব আলোচনা ছাপিয়ে লর্ডসের সে রোমাঞ্চে দলকে ঠিকই এগিয়ে দিয়েছিলেন ক্যারি। কারণ তাঁর ঐ বুদ্ধিমত্তাতেই স্টোকসকে নি:সঙ্গ লড়াই করতে বাধ্য করেছিল।

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link