টি-টোয়েন্টিটা ধরতে পেরেছেন মোসাদ্দেক!

বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি আন্তর্জাতিক শিরোপার জন্য হাহাকার ছিল অনেকদিন। তিনটি এশিয়া কাপের ফাইনাল সহ ছয়বার ফাইনাল ম্যাচ খেললেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষপর্যন্ত সপ্তমবারের চেষ্টায় একটি আন্তর্জাতিক ট্রফি নিজেদের ঘরে তোলে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আর এর পিছনে মূল অবদান রেখেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি আন্তর্জাতিক শিরোপার জন্য হাহাকার ছিল অনেকদিন। তিনটি এশিয়া কাপের ফাইনাল সহ ছয়বার ফাইনাল ম্যাচ খেললেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষপর্যন্ত সপ্তমবারের চেষ্টায় একটি আন্তর্জাতিক ট্রফি নিজেদের ঘরে তোলে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আর এর পিছনে মূল অবদান রেখেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

২০১৯ সালে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে শিরোপা জেতানোর পর থেকেই মোসাদ্দেক হোসেন বাংলাদেশ ক্রিকেটে অতি পরিচিত একটি নাম। কিন্তু জাতীয় দলে নিজেকে খুব একটা নিয়মিত সদস্যে পরিণত করতে পারেননি তিনি। ঘরোয়ার ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেও আলোচনার বাইরেই থাকতে হয় প্রায় সময়।

তবে, এখন দৃশ্যপট বদলে গিয়েছে; ব্যাটে-বলে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এখন রীতিমতো অলরাউন্ডার বনে গিয়েছেন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি দলে এই ডানহাতি এখন প্রায় অটো চয়েজ। চলতি বছরে রীতিমতো স্বপ্নীল সময় কাটাচ্ছেন তিনি। দল পুরোপুরি প্রত্যাশামাফিক ফলাফল না পেলেও সৈকত নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন দারুণভাবে।

২০২২ সালে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত বারোটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। এর মাঝে সর্বশেষ নয় ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তারুণ্য নির্ভর নতুন ঘরানার টি-টোয়েন্টি দলের অন্যতম ভরসা তিনি।

এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচ ব্যাটিং করেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এই সময় তিনি ব্যাট করেছেন মিডল অর্ডার এবং লোয়ার মিডল অর্ডারে। সবমিলিয়ে আট ইনিংসে ২৮ গড়ে ১৪০ রান করেছেন এই ক্রিকেটার। এছাড়া তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৪৪.৯০; বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন স্ট্রাইক রেট সহসা দেখা যায় না। তারচেয়ে বড় কথা, সৈকতের ব্যাটিংয়ে টি-টোয়েন্টিসুলভ অ্যাপ্রোচের দেখা মিলেছে।

অন্যদিকে কার্যকরী বোলার হিসেবে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের নতুন পরিচয় উন্মোচিত হয়েছে এই বছরই। এখন পর্যন্ত ২১.৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১১ উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। রান খরচের ক্ষেত্রেও বেশ হিসেবি সৈকত, বোলিং করেছেন মাত্র ৫.৯১ ইকোনমিতে। এছাড়া তাঁর নামের পাশে রয়েছে একটি ফাইফারও।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ, লিটন দাস থাকা সত্ত্বেও অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ছিল মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের কাঁধে। আর এটিই প্রমাণ করে যে, মাঠে পারফর্ম করার পাশাপাশি মাঠের বাইরেও টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থা অর্জন করেছেন তিনি। সবমিলিয়ে সৈকত দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছেন। বাংলাদেশের দলের এক্স-ফ্যাক্টর বলা যায় তাঁকে।

সাকিব আল হাসান ছাড়া বাংলাদেশের অন্যান্য স্পিন বোলিং অলরাউন্ডারের তুলনায় মোসাদ্দেক হোসেন পরিণত ব্যাটসম্যান। লিস্ট এ ক্রিকেটে এই ব্যাটারের ব্যাটিং গড় ৪০ এর বেশি। আবার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সেটি প্রায় ৫৪। তাই মিডল অর্ডারে সৈকতের উপস্থিতি মানেই বাড়তি নির্ভরতা, অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের মিশেলে দুর্দান্ত একজন তিনি।

বোলার হিসেবে সৈকত মূলত পার্ট টাইমার। ঘরোয়া ক্রিকেটে সৈকত খুব একটা বল হাতে নেন না। তবে জাতীয় দলে তাঁকে পার্ট টাইমারের চেয়ে বেশি কিছু ভাবা হয়। চলতি বছরের পারফরম্যান্স সেই ভাবনাকে আরে উসকে দিয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ উইকেট পাওয়া বোলারদের একজন সৈকত, তাই এখন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সৈকতকে অলরাউন্ডার বললে বাড়াবাড়ি হয় না।

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সামর্থ্য নিয়ে তেমন কারোই বোধহয় সংশয় ছিল না। অভিষেকের পর থেকেই সেই সামর্থ্যের ঝলক দেখিয়েছিলেন তিনি, বাকি ছিল কেবল ধারাবাহিক হয়ে উঠা। সাম্প্রতিক সময়ে সেই ধারাবাহিকতার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছেন এই অলরাউন্ডার; এখন শুধুই উন্নতির পথে হেঁটে যাওয়ার পালা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...