কথা রেখেছেন প্যাট কামিন্স, ‘চুপ’ হয়ে গেছে ভারত

স্বাগতিকদের উড়িয়ে দিয়ে ঠিকই নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামকে মৃত নগরীতে রূপ দিয়েছিলেন।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কেউ কথা রাখেনি’ কবিতায় ‘নাদের মাঝি’ কথা দিয়েছিল তিন প্রহরের বিল ঘুরিয়ে আনবে কিন্তু বছরের পর বছর কেটে গেলেও কথা রাখেনি সে। মাঝির মতই আহমেদাবাদ স্টেডিয়ামকে চুপ করিয়ে দেয়ার কথা দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।

তবে তিনি প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেননি; স্বাগতিকদের উড়িয়ে দিয়ে ঠিকই নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামকে মৃত নগরীতে রূপ দিয়েছিলেন। কামিন্স নিজেও তিন উইকেট শিকার করে অবদান রেখেছেন এই জয়ে। বলাই যায়, ক্যাপ্টেন লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট।

খেলা শুরু হতেই পুরো গ্যালারি ছেয়ে যায় আকাশী-নীল জার্সিতে। ১,৩০০০০ দর্শকের মাঝে গুটিকয়েক অজি ভক্তদের চোখেই পড়েনি; কেবলই মনে হয়েছিল নীলের সমুদ্রে ডুবে আছে বাইশজন ক্রিকেটার। টস হওয়ার আগ থেকেই এই বিশাল সমুদ্রের গর্জনে মুখোরিত হয়ে উঠেছিল পুরো স্টেডিয়াম পাড়া।

রোহিত শর্মার বাউন্ডারির মারের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গর্জনের শক্তি; কিন্তু মিশেল স্টার্ক আর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দুই ওপেনারকে তুলে নিয়ে কমে আসে দর্শকদের চিৎকার।

তবে পুরোপুরি স্তব্ধতা নেমে আসে ২৯তম ওভারে। হাফসেঞ্চুরিয়ান বিরাট কোহলিকে বোল্ড করেন কামিন্স; আর তাতেই যেন পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। এরপর আর গলার সুর খুঁজে পায়নি স্বাগতিক সমর্থকেরা। একের পর এক ব্যাটার আউট হয়েছেন, তাতেই নীরব থেকে আরো নীরব হয়ে গিয়েছে লক্ষাধিক মানুষ।

দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য জয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল ভারতের। পরপর তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল অজিরা, ফলে আহমেদাবাদও ফিরেছিল স্বরূপে। কিন্তু সেটাও কেবল কিছু সময়ের জন্য, ট্রাভিস হেডের দাপুটে ব্যাটিংয়ে ক্রমাগত গলার সুর কমে এসেছে ভারতীয়দের। শেষপর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জিতে নিলে বেদনা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাঁদের।

বিশ্বকাপ ফাইনাল অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্যের অহংকার থেকেই সম্ভবত প্যাট কামিন্স সরাসরি হুমকি দিতে পেরেছেন একটা বিশাল নীল সাগরকে। দিন শেষে নিজের অঙ্গীকার রেখেছেন এই পেসার, ২০১৫ সালের পর আবারো বৈশ্বিক শিরোপা তাসমান পাড়ে নিয়ে গেলেন তিনি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...