রাজ্যাভিষিক্ত অভিষেক শর্মা

২০২২ সালে স্বপ্নের মতো এক আইপিএল মৌসুম কাটিয়েছিলেন অভিষেক শর্মা। কিন্তু এবারের মৌসুমের শুরুটা ভালো হয়নি, ক্রমাগত ব্যাটিং অর্ডারে উঠানামা করাতেই কিনা রান পাচ্ছিলেন না। কিন্তু নিজের চেনা ওপেনিং এ ফিরতেই পুরনো ছন্দে এই তরুণ। 

২০২২ সালে স্বপ্নের মতো এক আইপিএল মৌসুম কাটিয়েছিলেন অভিষেক শর্মা। কিন্তু এবারের মৌসুমের শুরুটা ভালো হয়নি, ক্রমাগত ব্যাটিং অর্ডারে উঠানামা করাতেই কিনা রান পাচ্ছিলেন না। কিন্তু নিজের চেনা ওপেনিং এ ফিরতেই পুরনো ছন্দে এই তরুণ। 

বাবা রাজকুমার শর্মাকে দেখেই ক্রিকেটে আসা অভিষেকের। চেয়েছিলেন বাবার মতো বাঁহাতি স্পিনার হবেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই ব্যাটিং এ ছেলের প্রতিভা দেখতে পান বাবা রাজকুমার। সেই কারণেই কিনা প্রতিদিন বোলিংয়ের পাশাপাশি আলাদা করে ব্যাটিং করাতেন ছেলেকে। আর পেশাদার ক্রিকেটে নাম লেখানোর পর তো ব্যাটিংটাই মূল পরিচয় হয়ে উঠেছে অভিষেকের। 

পাঞ্জাবের বয়সভিত্তিক দল পেরিয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পেতে বেগ পোহাতে হয়নি অভিষেককে। ২০১৮ সালে ছোটদের বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতেন এই তারকা। সেই সময়টাতে মূলত ফিনিশার হিসেবেই খেলতেন অভিষেক। শেষদিকে নেমে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে জয় এনে দেয়াই ছিল তাঁর মূল কাজ। 

কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার সময় অভিষেক বুঝতে পারেন নিচের দিকে নামাতে নিজেকে পুরো মেলে ধরতে পারছেন না তিনি। ফলে ক্রমেই ব্যাটিং অর্ডারে উপরে তুলে নিজেকে নিয়ে আসেন ওপেনিং এ। নিজের প্রথম ম্যাচেই ৯৪ রানের ইনিংস খেলে বুঝিয়ে দেন ইনিংস উদ্বোধন করাই তাঁর আসল জায়গা। 

অভিষেকের সবচেয়ে বড় গুণ হলো তিনি প্রতিনিয়ত নিজের খেলায় উন্নতি আনার চেষ্টা করেন। গত বছর দুলীপ ট্রফির দলে জায়গা না পেয়ে হাল ছেড়ে দেননি, বরং চেষ্টা করেছেন বোলিংয়ে উন্নতি আনার। শুরুতে ভালো করতে না পারলেও ক্রমেই ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করতে শুরু করেছেন এই অলরাউন্ডার। সেই সুবাদেই কিনা মাত্র ২২ বছরেই পাঞ্জাবের নেতৃত্বভার উঠেছে তাঁর কাঁধে। 

আইপিএলে দিল্লী ক্যাপিটালসের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও পরবর্তীতে বড় সময়জুড়ে খেলছেন সানরাইজার্স হায়দ্রবাদের হয়ে। প্রথম দুই মৌসুমে তেমন সুযোগ না পেলেও হায়দ্রাবাদ তাঁর উপর ভরসা হারায়নি। বরং ২০২২ আইপিএল নিলাম থেকে তাঁকে দলে ভিড়িয়েছিল সাড়ে ছয় কোটি রুপির বড় অংকের বিনিময়ে। অভিষেক অবশ্য আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন দারুণভাবে!

গত মৌসুমে ১৩৩ স্ট্রাইকরেটে ৪২৬ রান করে বনে গিয়েছিলেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। এবারের মৌসুমের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি অভিষেকের। ব্যাটিং অর্ডারে মনমতো পজিশন পাননি, কখনো নামতে হয়েছে মিডল অর্ডারে। ফলে হাসেনি অভিষেকের ব্যাট, সানরাইজার্সও বেরোতে পারেনি হারের বৃত্ত থেকে। 

দিল্লীর বিপক্ষে তাই পছন্দের পজিশনে ফিরতেই যেন পুরনো ছন্দে অভিষেক। ইনিংসের শুরু থেকেই মারমুখী ব্যাটিং করেছেন, দিল্লীর বোলারদের ম্যাচে ফিরতে দেননি মোটেই। মাত্র ২৫ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর থেমেছেন ৩৬ বলে ৬৭ রান করে।

তাঁর ইনিংসে ১২টি চারের পাশাপাশি ছিল একটি ছক্কার মার। এদিন বল হাতেও দারুণ পারফর্ম করেছেন এই তরুণ, তিন ওভারে ২৬ রান হজম করে তুলে নিয়েছেন এক উইকেট। তাঁর দুর্দান্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যের সুবাদেই কিনা টানা তিন ম্যাচ পর জয়ের দেখা পেয়েছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। 

অভিষেকের বয়সভিত্তিক দলের অনেক তারকাই ভারত জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। তিনি এখনো ডাক না পেলেও ফর্মটা ধরে রাখতে পারলে জাতীয় দলে সুযোগ পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না।   

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...