আইপিএলের নতুন মৌসুমটা চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু করেছে গুজরাট টাইটান্স। শিরোপা ধরে রাখার মিশনে দিল্লী ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ছয় উইকেটের জয়ে টানা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে হার্দিক পান্ডিয়ার দল। তরুণ ব্যাটসম্যান সাইন সুদর্শনের চমৎকার এক হাফ সেঞ্চুরিতে দিল্লীর ১৬২ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে যেতে কোনো বেগ পেতে হয়নি তাঁদেরকে।
আইপিএলে নিজেদের প্রথম মৌসুমেই শিরোপা জিতে সবাইকে চমকে দিয়েছিল গুজরাট টাইটান্স। সেবারে অভিজ্ঞদের পাশাপাশি তরুণ ক্রিকেটারদের দারুণ পারফরম্যান্সের সুবাদেই শিরোপা আসে গুজরাটে। তবে বাকিদের মাঝেও খানিকটা আলাদা ছিলেন সাই সুদর্শন।
বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে এতটাই কদর করে গুজরাট ম্যানেজমেন্ট, গুরুত্বপূর্ণ তিন নম্বর পজিশনটা ছেড়ে দিয়েছে তাঁকেই। সেই আস্থার প্রতিদান কি দারুণভাবেই না দিচ্ছেন এই ব্যাটার, গত মৌসুমের ফর্মটা টেনে এনেছেন এবারের মৌসুমেও। প্রথম ম্যাচে সময়োপযোগী ২২ রানের ইনিংসের পর দ্বিতীয় ম্যাচে অপরাজিত ৬২ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে ফিরেছেন।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে মোহাম্মদ শামি এবং আলজারি জোসেফের ঝড়ের পাশাপাশি রশিদ খানের ঘূর্ণিতে ১৬২ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় দিল্লি। মাঝারি মানের এই লক্ষ্য নিয়ে জিততে হলে শুরুতেই আঘাত হানতে হতো গুজরাটের টপ অর্ডারে। আনরিখ নর্কের ঝড়ো গতির সুবাদে সেটা পেয়েও গিয়েছিল দলটি। পাওয়ার প্লে’র পেরোনোর সাথে সাথে সাজঘরে গুজরাটের দুই ওপেনার এবং অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। চাপে পড়া গুজরাটকে তখন যেন পেয়ে বসেছেন দিল্লীর বোলাররা।
ঠিক তখনি একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ধ্বস সামলে নিলেন সুদর্শন। কোনো তাড়াহুড়ো নেই, বাজে শটের প্রবণতা কম। ঠান্ডা মাথায় চমৎকার সব শট খেলে ম্যাচটা একপ্রকার ছিনিয়ে নিলেন দিল্লির কাছ থেকে। প্রথমে বিজয় শংকরের সাথে ৫৩ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামলান।
এরপর শংকর ফিরলেও একপ্রান্তে অবিচল ছিলেন সুদর্শন। ডেভিড মিলারকে নিয়ে গড়েন ২৯ বলে ৫৬ রানের ঝড়ো এক পার্টনারশীপ। ৪৮ বলে ৬২ রান করার পথে চারটি চারের পাশাপাশি দুইটি ছক্কা হাঁকান এই তারকা।
মারকুটে ব্যাটিং না করেও রানের চাকা সচল রাখার দারুণ এক উদাহরণ এদিন সৃষ্টি করলেন সুদর্শন। বাউন্ডারির তাড়া নেই, স্রেফ দৌড়ে রান নিয়ে কখনোই বোলারদের প্রভাব বিস্তার করতে দেননি। শুরুতে সময় নিয়েছেন থিতু হবার, সেট হবার পর দ্বিধা করেননি বল সীমানাছাড়া করতে।
বিশেষ করে ইনিংসের শেষের দিকে রীতিমতো বিধ্বংসী রূপ ধারণ করেন এই ব্যাটসম্যান, ছাড় পাননি প্রতিপক্ষের সেরা বোলার আনরিখ নর্কেও। সবমিলিয়ে টি টোয়েন্টিতে বাউন্ডারি কিংবা গায়ের জোর নয়, বরং বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যাট করে দলকে জিতিয়ে ফিরলেন সুদর্শন।