এবারের মৌসুমে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের তরুণ পেসার উমরান মালিক। বাজে ফর্মের কারণে জায়গা হারান একাদশ থেকেও। বিষয়টা এমন যে, এক-দুই মৌসুমেই যেন গতির রহস্যটা হারিয়ে গেছে উমরানের।
হায়দ্রাবাদ টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের পর তাই উমরানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দ্র শেবাগ। গত মৌসুমের আইপিএল দিয়েই গোটা বিশ্বকে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছিলেন জম্মু-কাশ্মীর থেকে উঠে আসা উমরান।
বাইশ গজে গতির ঝড় তুলে রীতিমতো চমকে দিয়েছিলেন সবাইকে। কিন্তু এক বছর পেরোতেই যেন হারিয়ে গেছে উমরানের ঝলক। এবারের মৌসুমে আট ম্যাচে মাত্র পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন এই তরুণ। ইকোনমি রেটটাও বেশ বাজে, ১০.৮৫।
মৌসুমের শেষ ম্যাচেও ব্যর্থ হয়েছেন পুরনো ছন্দে ফিরতে। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে তিন ওভারে ৪১ রান দিয়ে ছিলেন উইকেট শূন্য। সেই ম্যাচের পরই তাই উমরানের প্রতি রাগ প্রকাশ করেছেন শেবাগ। তাঁর মতে ডেল স্টেইনের সাথে দীর্ঘদিন কাজ করার পরেও বোলিংয়ে উন্নতি আনতে পারেননি উমরান।
শেবাগ বলেন, ‘সে যদি কোনো দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার হতো তবে হয়তো বুঝতে পারতাম। কিন্তু উমরান প্রতিনিয়ত তাঁর বলের লেংথ পরিবর্তন করতে চায়। সে এখনো অভিজ্ঞ নয়। সে হয়তো ডেল স্টেইনের সাথে নিজের বোলিং নিয়ে কাজ করেছে।’
‘কিন্তু এখনো নিজের লাইন লেংথে উন্নতি আনতে পারেনি। স্টেইনের মতো পেসারের অধীনে দীর্ঘদিন কাজ করার পরও সে একই ভুল বারবার করে যাচ্ছে। গত মৌসুমেও তাঁর এই সমস্যাটা ছিল, চিত্রটা বদলায়নি এবারেও।’, যোগ করেন তিনি।
কেবল উমরান নয়, এবারের টুর্নামেন্টে একমাত্র ভুবনেশ্বর কুমার বাদে হায়দ্রাবাদের প্রতিটি বোলারই বাজে পারফর্ম করেছেন। থাঙ্গারাসু নটরাজন মাঝে দুয়েক ম্যাচে ভালো করলেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি। শেষ ম্যাচে ২০০ রানের টার্গেট দিয়েও তাই ম্যাচ হারতে হয়েছে এইডেন মার্করামের দলকে।
শেবাগ বলেন, ‘হায়দ্রাবাদের বোলাররা মোটেই ভালো করতে পারেনি। মার্করাম ফাইন লেগ, স্কয়ার লেগ এবং ডিপ মিডউইকেটে ফিল্ডার রেখে বোলারদের খানিকটা ব্যাক অফ দ্যা লেংথে বল করতে বলেছিল। কিন্তু বোলাররা সুযোগটা নিতে পারেননি, বরং মুম্বাইয়ের ব্যাটাররা বলগুলো সীমানার বাইরে পাঠিয়েছে।’
অথচ গত মৌসুমেই হায়দ্রাবাদের হয়ে দারুণ পারফর্ম করে বিশ্ব ক্রিকেটে উত্থান হয়েছিল উমরান মালিকের। আইপিএলে ১৪ ম্যাচে শিকার করেছিলেন ২২ উইকেট। জাতীয় দলে ডাক পেতেও অপেক্ষা করতে হয়নি এই তরুণকে। সবাই ভেবেছিলেন শোয়েব আকতারের সর্বোচ্চ গতির রেকর্ড কেবল উমরানই ভাঙতে পারবেন।
কিন্তু বছর পেরোতেই যেন মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখতে হচ্ছে এই পেসারকে। গতিতে মনোযোগী হতে গিয়ে লাইন লেংথ হারানোর রোগটা শুরু থেকেই ছিল। এবারের মৌসুমে সেই দুর্বলতার সুযোগই নিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা।
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছেন, আইপিএলেও যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। এখন দেখার বিষয় সামনের দিনগুলোতে নিজের পুরনো রূপে ফিরতে পারেন কিনা এই পেসার।