শেখ মেহেদী, টি-টোয়েন্টির ধারাবাহিক পারফরমার

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। তিন ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিংয়ের প্রমাণ স্বরূপ সিরিজ সেরার পুরষ্কার নিজের করে নিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর পাশাপাশি আরেক ক্রিকেটারও নিঙড়ে দিয়েছেন সবটুকু, পারফরম করেছেন তাল মিলিয়ে। তিনি শেখ মেহেদী হাসান, ডানহাতি অফ স্পিনার।

স্পিনারদের এমনিতেই স্পোর্টিং উইকেটে ভাল করাটা কঠিন, এর উপর খেলা যদি হয় বিদেশের অপরিচিত উইকেটে তাহলে তো কথাই নেই। অথচ এমন পরিস্থিতিই বেশি প্রিয় শেখ মেহেদীর – এটা স্রেফ কথার কথা নয়, কিউইদের বিপক্ষে তাঁর পরিসংখ্যানও সেই কথা বলে।

তিন ম্যাচে সবমিলিয়ে দশ ওভার বল করেছেন এই ডানহাতি। এসময় মাত্র ৪৭ রান দিয়েছেন, আর উইকেট শিকার করেছেন চারটি। বোলিং ইকোনমি পাঁচেরও কম আর গড় কেবল ১১.৭৫! বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ জয়ের পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান তাঁর-ই।

অবশ্য সমগ্র টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার জুড়েই ভরসার প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছেন এই তারকা। এখন পর্যন্ত ৪১টি ম্যাচ খেলে ৩৪ উইকেট পেয়েছেন, ওভারপ্রতি খরচ করেছেন ৬.৪৩ রান। বোলিং গড় আর স্ট্রাইক রেট দু’টোই ২৫ এর আশেপাশে – ক্রিকেটের ব্যাটিংবান্ধব যুগে এমন পারফরম্যান্স নি:সন্দেহে ঈর্ষণীয়।

শুধু ঘরের মাঠে ভাল খেলেছেন এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই, ক্যারিয়ার জুড়ে ঘরে-বাইরে একইসাথে দারুণ খেলছেন তিনি। দেশের বাইরে ২৪ বার মাঠে নেমে ২২ উইকেট নিয়েছেন এই বোলার; ইকোনমি ৭.৪৩ আর স্ট্রাইক রেট ২০। তাই তে ফ্ল্যাট উইকেটে সাকিব আল হাসানের পরেই দেশসেরা স্পিন অপশন তাঁকেই ধরা হয়।

এই ফরম্যাটে একটি বিশ্বকাপও খেলেছেন মেহেদী – আট ম্যাচে আট ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন প্যাভিলিয়নে। রান খরচেও কিপ্টেমির পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি। সবমিলিয়ে অভিষেকের পর থেকে লাল-সবুজ জার্সিতে অন্যতম ধারাবাহিক ক্রিকেটার এই বোলিং অলরাউন্ডার।

২০২২ সালে অবশ্য একবার বাদ পড়েছিলেন তিনি; তবে আশাহত হননি একেবারেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে পুনরায় পারফরম করেছেন, নিজের শক্তিমত্তা নিয়ে কাজ করেছেন। একটা সময় নতুন বলে ভাল করলেও পুরনো বলে সমস্যায় পড়তে হতো তাঁকে কিন্তু প্রত্যাবর্তনের পর থেকে ম্যাচের সব পরিস্থিতিতেই কার্যকরী হয়ে উঠেছেন; মূলত বোলিংয়ে একাধিক বৈচিত্র্য যোগ করায় পিচের সহায়তা ছাড়াও ভাল করতে পারছেন মেহেদী।

অলরাউন্ডার বললে অবশ্য বাড়াবাড়ি হবে খানিকটা তবে ব্যাটিংটাও জানা আছে তাঁর। আট, নয় নম্বরে কার্যকরী একজন হতে পারেন তিনি। যদিও ব্যাটার হিসেবে এখনো উন্নতির অনেক জায়গা রয়েছে এই তারকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link