নিয়তির মালিক

ক্রিস গেইল এবারও বিশ্বকাপ খেলছেন, নব্বইয়ের দশকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করে এখনও ক্রিকেট খেলাদের প্রতিনিধি হয়ে। তবে, সেখানে আরেকজন যোগ হল এবার। হ্যাঁ, আর কিছু না বলে দিলেও চলে। তিনি হলেন শোয়েব মালিক।

বিশ্বকাপের দল ঘোষণার বেশ আগেই জানা ছিল পাকিস্তানের স্কোয়াডে থাকছেন না অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক। পাকিস্তানি অধিনায়ক বাবর আজম মালিককে নিতে চাইলেও প্রধান নির্বাচক মোহাম্মদ ওয়াসিম আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন বয়স বিবেচনায় বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকবেন না শোয়েব মালিক। তবে, ভক্ত-সমর্থকদের সিংহভাগই দলে চাচ্ছিলেন মালিককে। খোদ পাকিস্তান অধিনায়কও কম চেষ্টা করেননি মালিককে দলে ভেড়াতে।

এরপর বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা হলো! যেখানে নেই শোয়েব মালিকের নাম; যা প্রত্যাশাই ছিলো। তবে, স্কোয়াড নিয়ে কম সমালোচনার মুখে পড়েনি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। সমালোচনার মুখে বিশ্বকাপে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে দলে তিন পরিবর্তন আনে পাকিস্তান। আজম খান, খুশদিল শাহ ও মোহাম্মদ হাসনাইনের বদলি সুযোগ পান সরফরাজ আহমেদ, ফখর জামান ও হায়দার আলী!

সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিলো শেষ মুহূর্তের এই পরিবর্তনে হয়তো দেখা যাবে শোয়েব মালিকের নাম! তবে সেটিও হয়নি। এমনকি সুযোগ পাননি অবসর থেকে ফেরা মোহাম্মদ আমিরও। অবশ্য কথায় আছে ভাগ্যের লিখন খণ্ডায় কে? আর সেই ধারাতেই বিশ্বকাপে যাওয়ার ঠিক অন্তিম মূহুর্তে এসে দলে জায়গা পেলেন মিডল অর্ডারের অভিজ্ঞ কান্ডারি শোয়েব মালিক। শোয়েব মাকসুদের ইনজুরিতে বিশ্বকাপ দলে নেওয়া হয়েছে মালিককে!

সবশেষ গেলো দশ বছরে বৈশ্বিক আসরে (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, বিশ্বকাপ ও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) ২৫ ম্যাচ খেললেও কোনো ফিফটির দেখা পাননি মালিক। ব্যাট হাতে ম্যাচ প্রতি প্রায় ১৮.৩৭ গড়ে রান করেছেন তিনি। অবশ্য সবশেষ পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) ১৪৯ স্ট্রাইক রেটে ৩৫৪ রান করেন মালিক। পিএসএলে সেরাটা দিলেও ব্যাট হাতে চরম ব্যর্থ ছিলেন ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল)!

৮ ম্যাচে মাত্র ৫ গড়ে ৫৬ স্ট্রাইক রেটে ৩৮ রান করেন তিনি! যা তার সাথে বড্ড বেমানান। তবে সবশেষ কাশ্মীর প্রিমিয়ার লিগে (কেপিএল) তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্স আর পিএসএলের দাপুটে ব্যাটিং সব মিলিয়ে খুব যে খারাপ সময় পার করছেন এমনটাও নয়। বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে মালিকের অভিজ্ঞতা দলের জন্য হতে পারে বাড়তি প্রাপ্তি। সিপিএলের পারফরম্যান্স মুছে ফেলে নতুন করেই বিশ্বকাপের জন্য নিজের পরিকল্পনা সাজাবেন মালিক।

বয়সটাও ৩৯! ক্যারিয়ারে ব্যাট প্যাড তুলে রাখার বয়সে এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ২২ গজ। অন্তিম মুহূর্তে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়াটা যেনো ক্যারিয়ারের শেষ সময়ের সবচেয়ে বড় পাওয়া। আপাতত লক্ষ্য থাকবে বিশ্বকাপে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে দলের জয়ে অবদান রাখা। মিডল অর্ডারে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজের সাথে শোয়েব মালিক থাকায় তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশেলে বেশ ভালো দলই গঠন করেছে পাকিস্তান।

পিসিবি ও পাকিস্তান ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে চলছে বিপর্যয়ের ঘটঘটা। বিশ্বকাপ দল নিয়েও হাজারটা বিতর্ক সামলাতে হয়েছে। এই সময়ে শোয়েব মালিকের আগমণ পাকিস্তান দলকে আবারো এক করে তুলতে পারে। কে জানে, আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান হয়তো কোনো অপ্রত্যাশিত সাফল্যের প্রত্যাশাই করছে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link