বিশ্বস্ত উপহাদেশীয় দস্তানা

দলের প্রয়োজনীয় সময়ে রান আউটে ভূমিকা রাখা কিংবা দূর্দান্ত এক স্ট্যাম্পিং ম্যাচ এক হাতেই বের করে নিয়ে আসতে পারেন একজন উইকেট রক্ষক। এছাড়াও ব্যাটসম্যান মনসংযোগ নষ্ট করতেও বেশ ভালো কাজ করতে পারেন তাঁরা। খালি চোখে তাঁদের ভূমিকাটা সব সময় বোঝা না গেলেও, ভুল করলেই টের পাওয়া যায় - তাঁদের গুরুত্ব কতটা। এতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দায়িত্ব পালন করার পরও উইকেট রক্ষকদের ভূমিকাকে যথার্থ মূল্যায়ন করে না ক্রিকেট সমর্থকরা। তাঁরা থেকে যান পর্দার আড়ালের নায়ক হিসেবে।

দলের প্রয়োজনীয় সময়ে রান আউটে ভূমিকা রাখা কিংবা দূর্দান্ত এক স্ট্যাম্পিং ম্যাচ এক হাতেই বের করে নিয়ে আসতে পারেন একজন উইকেট রক্ষক। এছাড়াও ব্যাটসম্যান মনসংযোগ নষ্ট করতেও বেশ ভালো কাজ করতে পারেন তাঁরা। খালি চোখে তাঁদের ভূমিকাটা সব সময় বোঝা না গেলেও, ভুল করলেই টের পাওয়া যায় – তাঁদের গুরুত্ব কতটা। এতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দায়িত্ব পালন করার পরও উইকেট রক্ষকদের ভূমিকাকে যথার্থ মূল্যায়ন করে না ক্রিকেট সমর্থকরা। তাঁরা থেকে যান পর্দার আড়ালের নায়ক হিসেবে।

ক্রিকেটে বিশ্বে মার্ক বাউচার, মঈন খান, মহেন্দ্র সিং ধোনি, অ্যাডাম গিলক্রিস্টদের মত অসংখ্য কিংবদন্তি উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান এসেছেন। উইকেটের পিছনে নিজেদেরকে প্রমাণ করেছেন তাঁরা। উইকেটের পিছনে দাড়িয়েই ম্যাচ জয়ে ভূমিকা রেখেছেন। তবুও বলা যায়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের সঠিক মূল্যায়ন পাননি উইকেট রক্ষক হিসেবে।

উপমহাদেশের ক্রিকেটেও দেখা গেছে দূর্দান্ত সব উইকেট রক্ষকদের। উপমহাদেশের সে সব কিংবদন্তি উইকেট রক্ষকদের কথাই আজকে তুলে ধরা হল।

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)

ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মহেন্দ্র সিং ধোনি। ভারতের হয়ে ২০০৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্বস্ত হাতে সামলেছেন উইকেটের পিছনের দায়িত্ব। চোখের পলকে স্ট্যাম্পিং করার জন্য বেশ দূর্দান্ত ছিলেন তিনি।

ভারতের হয়ে তিন সংস্করণে ৫৩৮ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তিন সংস্করণে উইকেটের পিছনে দাড়িয়েছেন ৬০৮ ইনিংসে। ৬০৮ ইনিংসে মোট ৮২৯ ডিসমিসাল করেছেন তিনি। এর মধ্যে ক্যাচ নিয়েছেন ৬৩৪ টি এবং স্ট্যাম্পিং করেছেন ১৯৫ টি। ইনিংস প্রতি ১.৩৬৩ টি করে ডিসমিসাল করেছেন তিনি।

  • কুমার সাঙ্গাকারা (শ্রীলঙ্কা)

শ্রীলঙ্কার স্বর্ণালী প্রজন্মের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান এবং উইকেট রক্ষক হলেন কুমার সাঙ্গাকারা। শ্রীলঙ্কার হয়ে তিন সংস্করণেই উইকেট রক্ষকের ভূমিকা পালন করেছেন কিছুদিন। টেস্ট ক্রিকেটে নিজের ব্যাটিংয়ে বেশি মনযোগী হবার কারণে তিনি টেস্ট ক্রিকেটে বেশিরভাগ সময় উইকেটের পিছনে দাঁড়ানো থেকে বিরত ছিলেন তিনি।

শ্রীলঙ্কার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫৯৪ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এর মধ্যে ৪৯৯ ইনিংস উইকেটের পিছনে দাড়িয়েছিলেন সাঙ্গাকারা। ৪৯৯ ইনিংসে তাঁর মোট ডিসমিসালের পরিমাণ ৬৭৮ টি। এর মধ্যে উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে ক্যাচ নিয়েছেন ৫৩৯ টি এবং স্ট্যাম্পিং করেছেন ১৩৯ বার। ইনিংস প্রতি তাঁর ডিসমিসালের পরিমাণ ১.৩৫৮।

  • কামরান আকমল (পাকিস্তান)

কামরান আকমল পাকিস্তানের উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে ক্যাচ মিস কিংবা স্ট্যাম্পিং মিস করার কারণে প্রচুর পরিমাণ সমালোচনা কিংবা ট্রলের শিকার হয়েছেন তিনি। কিন্তু এরপরেও পাকিস্তানের যেকোনো উইকেট রক্ষকের থেকে পরিসংখ্যানের দিক থেকে বেশ এগিয়ে আছেন তিনি।

কামরান আকমল পাকিস্তানের হয়ে তিন সংস্করণে খেলেছেন ২৬৮ ম্যাচ। ২৬৮ ম্যাচে ৩০৩ ইনিংসে উইকেটের পিছনে দাড়িয়েছেন তিনি। এই সময়ে তিনি ৪৫৩ বার ব্যাটসম্যানদের ডিসমিসালের শিকার করেছেন। এর মধ্যে উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে ক্যাচ নিয়েছেন ৩৬৮ বার এবং স্ট্যাম্পিং করেছেন ৮৫ বার। কামরান আকমলের ইনিংস প্রতি ডিসমিসাল করার পরিমাণ ১.৪৯৫ টি।

  • মঈন খান (পাকিস্তান)

পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা উইকেট রক্ষক হলেন মঈন খান। তাঁকে পাকিস্তান ক্রিকেটের সেরা উইকেট রক্ষক ভাবা হয়, কিন্তু পরিসংখ্যান হিসেবে বিবেচনা করলে তাঁর থেকে ঢের এগিয়ে আছেন কামরান আকমল।

মঈন খান পাকিস্তানের হয়ে দুই সংস্করণে খেলেছেন ২৮৮ ম্যাচ। এর মধ্যে ৩২৭ ইনিংসে উইকেটের পিছনে দাড়িয়েছেন তাঁরা। এই সময়ের মধ্যে মঈন খানের ডিসমিসালের পরিমাণ হলো ৪৩৪ টি। এর মধ্যে উইকেটের পিছনে ক্যাচ নিয়েছেন ৩৪১ বার এবং ব্যাটসম্যানদেকে স্ট্যাম্পিং করেছেন ৯৩ বার। মঈন খানের ইনিংস প্রতি ডিসমিসালের পরিমাণ ১.৩২৭ টি।

  • মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)

মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা উইকেট রক্ষক। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে উইকেটের পিছনে কিছু শিশুসুলভ ভুল করার কারণে উইকেটের পিছনে তাঁর থাকা না থাকা নিয়ে বেশ কথাবার্তা হচ্ছে। বাংলাদেশের সাবেক উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান খালেদ মাসুদ পাইলটের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। পরিসংখ্যান এবং কৃতিত্বের দিক থেকে বেশ অনেক আগেই খালেদ মাসুদ পাইলটকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।

মুশফিক বাংলাদেশের হয়ে তিন সংস্করণে খেলেছেন ৩৮২ ম্যাচ। এর মধ্যে ৩৮৮ ইনিংস উইকেটের পিছনে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এই সময়ে তিনি ব্যাটসম্যানদের ডিসমিসালের শিকার করেছেন ৪০৬ বার। এর মধ্যে ক্যাচ নিয়েছেন ৩১৬ টি এবং স্ট্যাম্পিং করেছেন ৯০ বার। ইনিংস প্রতি তাঁর ডিসমিসালের পরিমাণ ১.০৪৬।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...