ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগকে (আইপিএল) ধরা হয় বিশ্বের সবচাইতে প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। প্রতি বছর নিলামের মাধ্যমে কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়ে দলগুলো বেছে নেয় তাদের পছন্দের খেলোয়াড়দের। সেই খেলোয়াড়েরা যে সবসময়ই ভাল পারফর্ম করে এমনটা নয়।
খারাপ পারফর্ম করলে সাধারণত পরের আসরে আর দলে নেওয়া হয়না সেই খেলোয়াড়কে। ফলে নিলামে উঠতে হয়, অপেক্ষা করতে হয় যদি আর কোন দল আবার নিজেদের ডেরায় টেনে নেয়। কিন্তু এই প্রতিদ্বন্দীতার আইপিএলেও আছে এমন খেলোয়াড়, যারা বছরের পর বছর আইপিএলে বাজে খেলে যাচ্ছেন কিন্তু পরের আসরে আবার ঠিকই দল পাচ্ছেন, কেউ কেউ তো রীতিমত জামাই আদরেও থাকছেন!
তেমনই কিছু ক্রিকেটারকে নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন। চলুন, দেরী না করে শুরু করা যাক।
- গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (অস্ট্রেলিয়া)
২০১৪ আইপিএলে ম্যাক্সওয়েল দেখিয়েছিলেন নিজের ক্লিন হিটিংয়ের মুন্সিয়ানা। কিন্তু আইপিএলের ম্যাক্সওয়েলীয় দৃশ্য ঐ ২০১৪ তেই শেষ। এরপর থেকে তিনি বছরের পর বছর দলে খেলেছেন, পারফর্ম করা তো দূরে থাক নিজের নামের সাথে মানানসই-ই হতে পারেননি।
এখন অব্দি ৮২ ম্যাচে তিনি করেছেন মাত্র ১৫০৫ রান, গড়টাও ঢের কম- ২২.১। এই ৮২ ম্যাচ মিলিয়ে ম্যাক্সওয়েলের হাফ-সেঞ্চুরি আছে মাত্র ছয় ম্যাচে। ম্যাক্সওয়েলের এই বাজে পারফরম্যান্সের কারণে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব তাকে এ মৌসুমে নিজের দল থেকে ছাটাই করে দেয়। কিন্তু তা হলে কি হবে, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ঠিকই চৌদ্দ কোটি রুপির বেশিতে ম্যাক্সওয়েলকে দলে টেনে নিয়েছে।
কেন এত দাম দিয়ে দলটি অস্ট্রেলিয়ান এই অলরাউন্ডারকে দলে নিল – সেটা একটা বিরাট রহস্য।
- কেদার যাদব (ভারত)
কেদার যাদবের আইপিএল যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালে। তারপর থেকে তিনি চারটি ফ্রাঞ্চাইজির হয়ে এই টুর্নামেন্টে খেলেছেন। মূলত ভারতীয় দলে বেশ কিছু ভাল পারফরম্যান্স কেদারকে আইপিএলে আরো জনপ্রিয় করতে বেশ ভূমিকা রাখে। কিন্তু সেই ভূমিকার ছাপ যে পারফরম্যান্সে পড়েনি সেটা বেশ উল্লেখযোগ্য।
এখন অব্দি ৮৭ ম্যাচে ২২.৮ গড়ে তিনি করেছেন ১১৪১ রান। চেন্নাইয়ের হয়ে তিনি গত আসরে এত বাজে পারফরম্যান্স করেছিলেন যে নিজের আইপিএল ক্যারিয়ার যে আরো দীর্ঘ হতে পারে সেটা মনে হয় তিনি নিজেও ভাবেননি।যা হোক, কেদার যাদবকে এবার আবারও আইপিএলে দেখা যাবে- সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে!
- পিযুষ চাওলা (ভারত)
পিযুষ চাওলার আইপিএল ভ্রমণ শুরু ২০০৮ সালে। এর মধ্যে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাথে কয়েক মৌসুম ব্যাতিত পিযুষের আইপিএল স্মৃতি ভুলে যাওয়ার মতই। কলকাতা ছাড়ার পর তাকে দলে নিয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। সেখানে ভাল করতে না পারায় চেন্নাই অবশ্য ৩২ বছর বয়সী এই স্পিনারকে ছেড়ে দিয়েছে।
তবে, তাতেও পিযুষের দল পেতে সমস্যা হয়নি। আসছে আইপিএলের এই মৌসুমে পিযুষকে কিনে নিয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, তাও ২.৪০ কোটি ভারতীয় রুপির বিনিময়ে।
একটা মজার একটা তথ্য দেই। পিযুষ অবশ্য গুটিকয়েক ভারতীয় ক্রিকেটারের একজন যিনি ভারতের হয়ে বিশ্বকাপও জিতেছেন। পিযুষ ২০১১ সালের বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য। যদিও, সেই শিরোপা জয়ে তাঁর অবদান খুবই সামান্য।