পাঁচ বছর পর আবার মাঠে গড়াতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আরেকটি আসর। ষষ্ঠ ও শেষ আসরটি হয়েছিল ২০১৬ সালে ভারতে। এবার ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসতে যাচ্ছে এর সপ্তম আসর। ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বিশ্বকাপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১৪ নভেম্বর।
এই সময়ে ক্রিকেটের বড় বড় তারকারা একে অপরের মুখোমুখি হবে এই আসরে। বিরাট কোহলি, সাকিব আল হাসান, মিশেল স্টার্ক, ক্রিস গেইল, রশিদ খানরা লড়বেন যার যার দেশের হয়ে। তবুও কয়েকজন কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে মিস করবে এই আসর। যারা খেলেছিলেন এর আগের ছয়টি আসরই। এবারই প্রথম তাঁদের ছাড়া অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
- মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)
প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়কের নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। ২০০৭ সালে প্রথম আসরেই ধোনির নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। এরপর থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরেই ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।
দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই অধিনায়ক গতবছর বিদায় জানিয়েছেন সবধরনের ক্রিকেটকে। ফলে এবারই প্রথম বিশ্বকাপে দেখা যাবে না ভারতের এই কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে। যদিও এই বিশ্বকাপে ভারতের মেন্টর হিসেবে দলের সাথে থাকবেন তিনি।
- শহীদ আফিদি (পাকিস্তান)
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে ইমপ্যাক্টফুল ক্রিকেটারদের একজন শহীদ আফ্রিদি। তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও লেগ স্পিন দিয়ে বিশ্বের যেকোন টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা করে নিতে পারতেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ছয় আসরে তাই নিয়মিত মুখই ছিলেন এই অলরাউন্ডার।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হয়ে মোট ৩৪ টি ম্যাচ খেলেছিলেন আফ্রিদি। এরমধ্যে ৫৪৬ রান করার পাশাপাশি আছে ৩৯ উইকেট নেয়ার রেকর্ড। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোয় এইবারের বিশ্বকাপে আর দেখা যাবেনা আফ্রিদিকে।
- এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা)
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে সফলতম ব্যাটসম্যানদের একজন এবি ডি ভিলিয়ার্স। প্রোটিয়া এই ব্যটসম্যান তাঁর মারকুটে ব্যাটিং এর জন্য এই ফরম্যাটে দারুণ কার্যকর ছিলেন। তিনিও দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলেছেব বিশ্বকাপের প্রথম ছয়টি আসর।
ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন এই ক্রিকেটার। যদিও শোনা যেত দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বড় টুর্নামেন্ট গুলোতে খেলবেন তিনি। তবে সেসব মিথ্যা প্রমাণ করে এই বিশ্বকাপে খেলছেন না তিনি। ফলে তাঁকে ছাড়াও প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
- মাশরাফি বিন মর্তুজা (বাংলাদেশ)
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতুহাসের সফলতম অধিনায়কের নাম মাশরাফি বিন মর্তুজা। বাংলাদেশের ক্রিকেট তাঁর হাত ধরে পৌছেছে এক নতুন উচ্চতায়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ কখনোই বড় কোন সাফল্য না পেলেও তাঁর সময়ে টুকটাক কিছু সাফল্য পেতে শুরু করে বাংলাদেশ।
তিনিও বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ছয়টি বিশ্বকাপের সবগুলোই খেলেছেন। ২০১৬ সালে সর্বশেষ আসরে বাংলাদেশের নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। তবে এবার আর তাঁর সার্ভিস পাচ্ছেনা বাংলাদেশ। অফিশিয়ালি অবসর না নিলেও এখন আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন না তিনি। ফলেও তাঁকে ছাড়াও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের এবারের আসর।
- তীলকারত্নে দিলশান (শ্রীলঙ্কা)
সাদা বলের ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন দিলশান। নিজের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দিয়ে মন জয় করেছিলেন কোটি ক্রিকেট ভক্তের। দিলস্কুপ শটটাকে একটা ব্র্যান্ড বানিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
এছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরও তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক দিলশান। শ্রীলঙ্কার হয়ে এর আগের সবগুলো আসরেই খেলেছেন তিনি। ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপাও জিতেছিল তাঁর দল। তবে ক্রিকেটকে বিদায় জানানোয় এবার তাঁকে ছাড়াই মাঠে গড়াবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর।