ব্রাভো ‘ওয়াজ’ আ চ্যাম্পিয়ন!

একবার ব্রাভো খেলছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। ব্রাভো যাতে সময় মত জ্যামাইকায় প্রথম টেস্ট খেলতে ফিরতে পারেন, সে জন্য স্বয়ং মুকেশ আম্বানি নিজের জেট প্লেনটাই দিয়ে দেন। এভাবেই এন্টারটেইনমেন্টের রাজারা ‘মান আপনি ফিরে পান’!

মাঠে তাঁর উপস্থিতিই যেন আলাদা একটা বিনোদন, সেটা তিনি পারফরম করুন আর নাই করুন। বিশেষ করে উইকেট পতনের পর তাঁর নাচ যেন পৌঁছে গেছে নতুন চূড়ায়। তিনি ক্রিকেটের সত্যিকারের ‘চ্যাম্পিয়ন’। অবিসংবাদিত রকস্টার। রকস্টারের ক্রিকেট মঞ্চ অবশ্য এক অতীত। আর ক্রিকেট খেলবেন না ডোয়াইন ব্রাভো, চ্যাম্পিয়ন গানে ভাসাবেন না ক্রিকেট বিশ্বকে।

সত্যিকারের অলরাউন্ডার বলতে যা বোঝাই তিনি তাই। ব্যাট হাতে তিনি দুর্দান্ত এক ফিনিশার। পরিস্থিতি বুঝে ব্যাট করায় তাঁর ‍জুড়ি নেই। তিনি ডেথ ওভারের তুখোড় বোলার। বিরল প্রজাতির পেস বোলিং অলরাউন্ডার তিনি।

বয়স যাই হোক, এখনো তিনি মাঠের সেরা ফিল্ডারদের একজন। হাঁটুর বয়সী তরুণরা যতই অ্যাক্রোব্যাটিং ফিল্ডিং করুক না কেন, তাঁদের হেড মাস্টার তিনি। অধিনায়কত্বে তিনি স্থায়ী হননি কখনও, তবে যেটুকু সময় ছিলেন, তাতেই ক্যারিবিয়ান বোর্ডকে বুঝিয়ে ছেড়েছিলে যে স্রেফ অধিনায়ক নন, তিনি নেতা। নেতা হতে গিয়ে অনেক বিতর্কেও জড়িয়েছেন, আপোষ করেননি বললেই চলে।

দু’টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলে সদস্য তিনি। নিজের মানকে তিনি এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যে, নিজেদের মধ্যে শত ঝামেলা আর বিবাদের পরও বারবারই ক্যারিবিয়ান বোর্ড তাঁর দ্বারস্থ হয়। আর তিনিও ফিরেন, আর আন্তর্জাতিক ময়দানে এন্টারটেইন করেন।

বয়স তাঁর জন্য কোনো ঘটনাই নয়। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে প্রথম ৫০০ উইকেট পাওয়ার পর বলেছিলেন, ৪০ বছর বয়স এখন ‘নিউ ৩০’! আর মাঠের বাইরে? – সেখানে তো তিনি চ্যাম্পিয়ন এন্টারটেইনার। ‘চ্যাম্পিয়ন’ গান দিয়ে বিশ্ব মাতিয়েছেন, কোমড় দুলিয়েছেন তামিল ছবিতে। মাঠের বাইরে তিনি সত্যিকারের রকস্টার।

আধুনিক ধুন্ধুমার টি-টোয়েন্টির যুগে যত এন্টারটেইনার আসছে, ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে অবিসংবাদিত সেরা তিনি। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ব্যাটে, বলে কিংবা ফিল্ডিংয়ে তাঁর মত তারকা আর নেই বললেই চলে।

ব্রাভো আসলে কি পারেন না? সেই ২০০৫ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোবার্ট টেস্টে যখন সেঞ্চুরি তখন প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণে ছিল তারার মেলা। গ্লেন ম্যাকগ্রা, শেন ওয়ার্ন, ব্রেট লি কিংবা স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল – কে ছিলেন না। এই আক্রমণের সামনে তো বিশ্ব সেরা ব্যাটসম্যানদেরও পা কাঁপতে বাধ্য।

তাঁর ৪০ টেস্টের ক্যারিয়ারটাও মন্দ নয়, হাজার দুয়েক রান, একশ’র কাছাকাছি উইকেট। কিন্তু সে পথে তিনি হাঁটেননি। হেঁটেছেন ফ্র্যাঞ্চাইজির দুনিয়ায়। হয়ে উঠেছেন বিশ্বজুড়ে বিনোদনের ফেরিওয়ালা। ফেরিওয়ালা হয়ে সম্মানও কুড়িয়েছেন।

একবার ব্রাভো খেলছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। ব্রাভো যাতে সময় মত জ্যামাইকায় প্রথম টেস্ট খেলতে ফিরতে পারেন, সে জন্য স্বয়ং মুকেশ আম্বানি নিজের জেট প্লেনটাই দিয়ে দেন। এভাবেই এন্টারটেইনমেন্টের রাজারা ‘মান আপনি ফিরে পান’!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link